New Update
/indian-express-bangla/media/media_files/2025/06/04/AdAwPuIf59VE3ZcFnkmr.jpg)
সমুদ্রের গভীরে লুকিয়ে ১.৪ লক্ষ বছরের পুরনো পৃথিবী
Science News: ইতিহাস যে শুধু বইয়ের পাতায় নয়, প্রকৃতির কোলেও লুকিয়ে থাকে—সেই কথাই আবার প্রমাণ করল ইন্দোনেশিয়ার সাম্প্রতিক আবিষ্কার।
সমুদ্রের গভীরে লুকিয়ে ১.৪ লক্ষ বছরের পুরনো পৃথিবী
Science News: ইতিহাস যে শুধু বইয়ের পাতায় নয়, প্রকৃতির কোলেও লুকিয়ে থাকে—সেই কথাই আবার প্রমাণ করল ইন্দোনেশিয়ার সাম্প্রতিক আবিষ্কার।
জাভা ও মাদুরা দ্বীপের মধ্যবর্তী সমুদ্রের তলদেশে বালি উত্তোলনের সময় পাওয়া গেল হাজার হাজার বছরের পুরনো জীবাশ্ম ও মানব কঙ্কাল, যা দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ইতিহাসে এক বড় মোড় আনল।
সমুদ্রের নিচে মিলল হোমো ইরেক্টাসের চিহ্ন
২০১১ সালে, ইন্দোনেশিয়ার মাদুরা প্রণালীতে বালি উত্তোলনকারী শ্রমিকরা খুঁজে পান ৬,০০০-এরও বেশি প্রাণী ও মানুষের দেহাবশেষ। এর মধ্যে ছিল:
কমোডো ড্রাগন,
মহিষ ও হরিণ,
স্টেগোডন (বিশাল হাতির প্রজাতি),
এবং আশ্চর্যজনকভাবে, দুটি প্রাচীন মানব খুলির টুকরো।
এই খুলিগুলি পরীক্ষা করে নেদারল্যান্ডসের লিডেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্নতত্ত্ববিদ হ্যারল্ড বার্গুইস জানান, এগুলি হোমো ইরেক্টাস প্রজাতির মানুষের। বয়স? প্রায় ১.৪ লক্ষ বছর!
বিজ্ঞান বলছে, এটি এক বৈজ্ঞানিক অলৌকিক ঘটনা
সমুদ্রের পলিমাটি ও বালির গভীরে এত দীর্ঘ সময় ধরে এই দেহাবশেষ সংরক্ষিত থাকা বিজ্ঞানীদের মতে এক অলৌকিক ঘটনা।
Optically Stimulated Luminescence প্রযুক্তি ব্যবহার করে জানা যায়, এই অঞ্চল একসময় ছিল নদী উপত্যকা, যেখানে হোমো ইরেক্টাসরা বসবাস করত। অস্ত্র ব্যবহার করে শিকার করত।
পুরো অঞ্চলটি ছিল সুন্দাল্যান্ড নামের একটি বিশাল ভূখণ্ডের অংশ, যা আজকের মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড ও মায়ানমারের অংশ জুড়ে বিস্তৃত ছিল। কিন্তু ১৪,০০০ থেকে ৭,০০০ বছর আগে, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ১২০ মিটার বেড়ে যাওয়ায় এটি সম্পূর্ণ ডুবে যায়।
এই আবিষ্কার স্পষ্ট করে দেয়, হোমো ইরেক্টাস কেবল বেঁচে থাকার জন্য সংগ্রাম করেনি, বরং তাদের আয়ত্তে ছিল উন্নত হাতিয়ার, শিকারের কৌশল । এখনও পর্যন্ত ইতিহাসের অনেকটাই খুঁজে পাওয়া গিয়েছে স্থলভাগে, কিন্তু সমুদ্রের নিচে হয়তো অসংখ্য অজানা অধ্যায় এখনও আবিষ্কারের অপেক্ষায়।
ইন্দোনেশিয়ার এই চাঞ্চল্যকর আবিষ্কার বিজ্ঞান ও ইতিহাসকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছে।
মানবজাতির ইতিহাস যে আরও গভীর, আরও বিস্তৃত—তাতে সন্দেহ নেই। এখন প্রশ্ন একটাই সমুদ্রের গভীরে লুকিয়ে থাকা আরও কত ইতিহাস এখনও অজানা রয়ে গিয়েছে?