/indian-express-bangla/media/media_files/2025/08/24/cats-2025-08-24-16-44-40.jpg)
গগনযান মিশনের প্যারাসুট পরীক্ষায় সফল, ইসরোর সাফল্যে গর্বে বুক ভরে উঠবে
ভারতের মানব মহাকাশ অভিযানের পথে বড় সাফল্য, গগনযান মিশনের জন্য প্যারাসুট পরীক্ষায় সফল ইসরো। এই পরীক্ষায় একটি মডিউলকে আকাশ থেকে নামিয়ে আনা হয় বিশেষভাবে তৈরি প্যারাশুটের সাহায্যে। ধাপে ধাপে প্যারাশুট খোলার প্রক্রিয়া— এক্সট্রাকশন, ড্রগ শুট এবং শেষে মূল প্যারাশুট— সব কিছুই পরিকল্পনা মতো সফল হয়।
ইসরো জানিয়েছে, এই সাফল্য ভবিষ্যতের মহাকাশযাত্রীদের নিরাপদে পৃথিবীতে ফেরানোর ক্ষেত্রে বড় ভরসা দেবে। পরীক্ষাটি ইসরো-র পাশাপাশি ভারতীয় বায়ুসেনা, ডিআরডিও, নৌবাহিনী ও কোস্ট গার্ডের যৌথ উদ্যোগে সম্পন্ন হয়। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং এই সাফল্যকে আত্মনির্ভর ভারতের মহাকাশ অভিযানের নতুন অধ্যায় বলে উল্লেখ করেন।
আগামী ডিসেম্বর ২০২৫-এ গগনযানের প্রথম মানববিহীন মিশন উৎক্ষেপণ হবে। এরপর ২০২৮ সালে তিনজন মহাকাশচারী নিয়ে প্রথম মানব মিশন পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। এই মিশন সফল হলে রাশিয়া, আমেরিকা ও চিনের পর ভারত হবে বিশ্বের চতুর্থ দেশ যারা স্বাধীনভাবে মানুষকে মহাকাশে পাঠাতে সক্ষম।
আগামী দিনে ইসরো আরও প্যারাশুট পরীক্ষা, জরুরি অবতরণ ট্রায়াল এবং সমুদ্র থেকে উদ্ধার অনুশীলন চালাবে, যাতে পুরো মিশনের প্রতিটি ধাপ নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করা যায়।
রবিবার বিশেষ এই পরীক্ষার মাধ্যমে ভারতের প্রথম মানব মহাকাশ অভিযানের দিকে আরও একধাপ এগিয়ে গেল ইসরো। রবিবার (২৪ আগস্ট, ২০২৫) ইসরো প্রথম সমন্বিত এয়ার ড্রপ প্যারাসুট (IADT-01) সফলভাবে পরীক্ষা করেছে। গগনযানের জন্য বিশেষভাবে তৈরি এই প্যারাসুট সিস্টেম মহাকাশযানের গতি নিয়ন্ত্রণ ও নিরাপদ অবতরণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে।
ইসরোর তরফে জানানো হয়েছে, এই পরীক্ষাটি মূলত মহাকাশচারীদের নিরাপদে পৃথিবীতে প্রত্যাবর্তনের জন্যই করা হয়েছে। পরীক্ষার সময় ভারতীয় বিমান বাহিনী, প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা (DRDO), ভারতীয় নৌবাহিনী এবং উপকূলরক্ষী বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
Indian Space Research Organisation (@isro) posts, "ISRO successfully accomplishes first Integrated Air Drop Test (IADT-01) for end to end demonstration of parachute based deceleration system for Gaganyaan missions. This test is a joint effort of ISRO, Indian Air Force,… pic.twitter.com/KABAKV7gEU
— Press Trust of India (@PTI_News) August 24, 2025
প্রসঙ্গত, বায়ুমণ্ডলে পুনঃপ্রবেশের পর ক্রু মডিউলের নিরাপদ অবতরণে প্যারাসুট সিস্টেম অত্যন্ত জরুরি। এই পরীক্ষায় একটি মক মডিউল বিমান থেকে ছেড়ে দেওয়া হয় এবং নতুনভাবে তৈরি প্যারাসুট অ্যাসেম্বলির মাধ্যমে সেটিকে নিরাপদে নামানো হয়। ইসরো কর্মকর্তারা জানান, পরীক্ষার উদ্দেশ্য ছিল প্যারাসুটের খোলার প্রক্রিয়াটি সঠিকভাবে কাজ করছে কি না তা যাচাই করা। ধাপে ধাপে প্যারাসুট খোলা এবং গতি কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে সিস্টেমটি প্রত্যাশিতভাবে সফল হয়েছে।
২০২৫ সালের ডিসেম্বরে উৎক্ষেপণের জন্য প্রস্তুত গগনযান মিশন হবে ভারতের প্রথম মানববাহী মহাকাশযান পরীক্ষামূলক অভিযান। এতে তিনজন ক্রু প্রায় ৪০০ কিলোমিটার উচ্চতায় তিন দিনের জন্য অবস্থান করবেন এবং পরে নিরাপদে ফিরে আসবেন। ২০২৮ সালে পূর্ণাঙ্গ মানববাহী অভিযানের মাধ্যমে ভারত হবে বিশ্বের চতুর্থ দেশ, যাদের স্বাধীনভাবে ক্রু-চালিত মহাকাশযান উৎক্ষেপণের ক্ষমতা থাকবে।
ইসরো সূত্রে খবর, আগামী দিনে আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা হবে—যেমন প্যারাসুটের উন্নত পরীক্ষা, প্রয়োজনে লঞ্চপ্যাড থেকে রকেট সরানোর কার্যক্রম এবং সমুদ্র থেকে মহাকাশযান উদ্ধারের মহড়া। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই সফল পরীক্ষা গগনযান মিশনে মহাকাশচারীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ভারতের আস্থা আরও বাড়িয়ে দিল।
গগনযান মিশনকে ভারতের মহাকাশ অভিযানের ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ হিসেবে দেখা হচ্ছে। আগামী ডিসেম্বর (২০২৫) নির্ধারিত হয়েছে প্রথম মানববিহীন পরীক্ষামূলক মিশন, আর ২০২৮ সালে পরিকল্পনা রয়েছে প্রথম মানববাহী অভিযান পাঠানোর। সফল হলে ভারত হবে বিশ্বের চতুর্থ দেশ, যারা স্বাধীনভাবে মানুষকে মহাকাশে পাঠাতে সক্ষম।
এই মিশনে তিন সদস্যের ক্রু-কে প্রায় ৪০০ কিলোমিটার উচ্চতায় নিম্ন পৃথিবীর কক্ষপথে নিয়ে যাওয়া হবে এবং তারা সেখানে তিন দিন অবস্থান করবেন। নিরাপদে পৃথিবীতে ফেরা এই মিশনের সবচেয়ে বড় অগ্রাধিকার, আর IADT-01 পরীক্ষার সাফল্য সেই দিকেই আশার আলো দেখাচ্ছে।