আরও একটি ইতিহাস গড়ার পথে ইসরো, আজ সূর্যকে 'হ্যালো' বলবে আদিত্য এল-১।চাঁদে সফল অবতরণের পর ভারত আরেকটি ইতিহাস সৃষ্টির খুব দোড়গোড়ায়। ইন্ডিয়ান স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন (ISRO) এর আদিত্য এল-১ সৌর মিশন শনিবার বিকাল ৪টে নাগাদ তার নির্দিষ্ট গন্তব্য ল্যাগ্রঞ্জ পয়েন্ট-১ (L1) পৌঁছবে এবং চূড়ান্ত কক্ষপথে সেটিকে স্থাপন করা হবে। এখান থেকেই আদিত্য ৫ বছর ধরে সূর্যকে অধ্যয়ন করবে এবং একাধিক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করবে।
মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে এক নতুন অধ্যায়ের উন্মোচন করতে চলেছে ইসরোর এই সৌর মিশন। গত বছর ২ রা সেপ্টেম্বর ঠিক সকাল ১১.৫০ মিনিটে সূর্যের উদ্দেশ্যে পাড়ি দেয় ISRO মহাকাশে আদিত্য-এল ১ মিশন। এল-১ পয়েন্ট পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫লক্ষ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং পৃথিবী এবং সূর্যের মধ্যে মোট দূরত্বের এটি মাত্র ১ শতাংশ।
ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের ডিরেক্টর অন্নপূর্ণি সুব্রামানিয়ামের মতে, চূড়ান্ত কক্ষপথে পৌঁছানো বেশ চ্যালেঞ্জিং এবং এই প্রথম ইসরো এমন কঠিন চ্যালেঞ্জ নিতে চলেছে। ISRO-এর সৌর মিশনের ওপর নজর সারা বিশ্বের। এটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ যে আদিত্য এল-১ ইতিমধ্যেই তার ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দীর্ঘ যাত্রার শেষ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
শনিবার সন্ধ্যায় আদিত্য তার নির্দিষ্ট গন্তব্যে পৌঁছাবে । থ্রাস্টারের সাহায্যে আদিত্য L-1 কে হ্যালো কক্ষপথে স্থাপন করা হবে, যাতে সূর্যকে বিভিন্ন কোণ থেকে দেখা যায়। L-1 পয়েন্টে অবস্থান করলে এটি পৃথিবীর সঙ্গে অবিরাম যোগাযোগ বজায় রাখতে সক্ষম হবে এমনটাই জানিয়েছেন ইসরো প্রধান এস সোমনাথ।
আদিত্য তার যাত্রা শুরু করার ১৬ দিন পর ১৮ সেপ্টেম্বর থেকেই বৈজ্ঞানিক তথ্য সংগ্রহ এবং সূর্যের ছবি তোলা শুরু করে। বিজ্ঞানীরা এখন পর্যন্ত এল-১ থেকে উচ্চ-শক্তির এক্স-রে, সৌর শিখার সম্পূর্ণ সৌর ডিস্কের ছবি পেয়েছেন। PAPA এবং ASPEX এর সোলার উইন্ড আয়ন স্পেকট্রোমিটার সহ চারটি যন্ত্র বর্তমানে সক্রিয় এবং ভালভাবে কাজ করছে। হ্যালো কক্ষপথে পৌঁছানোর পরে প্রথমে স্যুট পেলোড সক্রিয় করা হবে।
আদিত্য এল ১ ৫ বছর ধরে সৌরজগৎ নিয়ে গবেষণা করবে
আদিত্য এল ১ আগামী ৫ বছরের জন্য সৌরজগৎ নিয়ে তার পরীক্ষা নিরীক্ষা চালাবে। সূর্যের L1 পয়েন্টে পৃথিবী এবং সূর্যের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি একই থাকে। ISRO বিজ্ঞানীদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল আদিত্য L1 কে L1 পয়েন্টের চারপাশে একটি কক্ষপথে স্থাপন করা।
আদিত্য এল ১ এর সাতটি পেলোড কী করবে?
প্রথমে মঙ্গলযান এবং তারপর চন্দ্রযানের সাফল্যের পরে, ইসরো বিজ্ঞানীদের মনোবল তুঙ্গে, এবং এখন সূর্যকে হ্যালো বলার পালা। আদিত্য এল ওয়ানে ৭ টি পেলোড রয়েছে। এই সাতটি পেলোড সূর্যের বিভিন্ন রহস্য উন্মোচন করবে।