চলতি বছরের সেপ্টেম্বরে, নাসা পৃথিবীর কাছাকাছি গ্রহাণু, বেন্নু থেকে প্রথম নমুনা সংগ্রহে সক্ষম হয়েছিল। OSIRIS-REx মহাকাশযানের মাধ্যমে এই লক্ষ্যপূরণ হয়েছে। যা সাত বছরের দীর্ঘ যাত্রা শেষ করার পরে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে পুনরায় প্রবেশ করেছে। একইভাবে, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ISRO) এখন একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষী অভিযানের পরিকল্পনা করছে। যেখানে মহাকাশ সংস্থা চাঁদ থেকে মাটি বা পাথরের নমুনা সংগ্রহ করে পৃথিবীতে আনার চেষ্টা করবে। প্রস্তাবিত অভিযানটির নাম লুনার স্যাম্পল রিটার্ন মিশন (LSRM)। এখনও পর্যন্ত, সমস্ত চন্দ্রযান মিশন পেলোডের ওপর যন্ত্র ব্যবহার করে চন্দ্রের পৃষ্ঠ, মাটি এবং নমুনা ইন-সিটু (সাইটে নিজেই) অধ্যয়ন করেছে।
২৩ আগস্ট চন্দ্রযান-৩ সফলভাবে চন্দ্রের দক্ষিণ মেরুতে অবতরণ করার পর, মহাকাশ সংস্থা চাঁদে ভবিষ্যৎ অভিযানের পরিকল্পনা করছে। চাঁদের দক্ষিণ মেরুতে ল্যান্ডার বিক্রম যে জায়গাটিতে অবতরণ করেছিল, তার নামকরণ করা হয়েছিল, 'শিব শক্তি পয়েন্ট'। ISRO-র স্পেস অ্যাপ্লিকেশন সেন্টার (SAC) এর ডিরেক্টর নীলেশ দেশাই শুক্রবার পুনে সফরের সময় বলেন, 'ইসরো এখন একটি বড় অভিযানের পরিকল্পনা করছে। যেখানে আমরা শিব শক্তি পয়েন্ট থেকে শিলা বা মাটির নমুনা নিয়ে আসার চেষ্টা করব। আশা করি, আগামী পাঁচ থেকে সাত বছরের মধ্যে, আমরা এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে পারব।'
প্রাথমিকভাবে জানা গিয়েছে, এই অভিযানে চারটি মডিউল জড়িত থাকবে- ট্রান্সফার মডিউল, ল্যান্ডার মডিউল, অ্যাসেন্ডার মডিউল এবং রি-এন্ট্রি মডিউল। প্রস্তাবিত অভিযানে দুটি পৃথক লঞ্চ যান থাকবে, যা এখনও পর্যন্ত ISRO-র সমস্ত চন্দ্র অভিযানের থেকে আলাদা। দেশাই বলেন, 'জিওসিঙ্ক্রোনাস স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিকেল (GSLV) মার্ক-II ট্রান্সফারের ইনজেকশন (উৎক্ষেপণের) এবং রি-এন্ট্রি মডিউলগুলির জন্য ব্যবহার করা হবে। যেখানে লঞ্চ ভেহিকেল মার্ক-III অ্যাসেন্ডার এবং ল্যান্ডার মডিউলগুলির সরাসরি ইনজেকশনের (উৎক্ষেপণের) জন্য ব্যবহার করা হবে।'
আরও পড়ুন- ‘হালাল পণ্য’, সার্টিফিকেট দিচ্ছে কিছু সংস্থা, অভিযোগ পেয়েই কড়া পদক্ষেপ যোগী প্রশাসনের
পরিকল্পনা অনুযায়ী, শিব শক্তি পয়েন্টে নমুনা সংগ্রহের জন্য একটি রোবোটিক আর্ম মেকানিজম ব্যবহার করা হবে। নমুনাগুলি প্রথমে অ্যাসেন্ডার মডিউলে স্থানান্তরিত বা লোড করা হবে। অ্যাসেন্ডার মডিউলটি চন্দ্র পৃষ্ঠ থেকে সরে যাওয়ার পরে, এটি অন্য মডিউলে থাকবে। এখানে, আরেকটি রোবোটিক আর্ম অ্যাসেন্ডার মডিউল থেকে নমুনাগুলিকে রি-এন্ট্রি মডিউলে স্থানান্তরিত করবে। অবশেষে, স্থানান্তর ও পুনঃপ্রবেশের পর মডিউলগুলো পৃথিবীতে ফিরে আসবে এবং অবতরণ করবে বলে পরিকল্পনা করা হয়েছে। চন্দ্রযান-৩-এর মতো লুনার স্যাম্পল রিটার্ন মিশন বা এলএসআরএম, একটি চন্দ্র দিনের (১৪ পৃথিবী দিন) জন্য অভিযানের পরিকল্পনা করা হয়েছে। প্রত্যাশিত উৎক্ষেপণের সময় ২০২৮ সাল।