বাষ্প চালিত ইঞ্জিন সেকেলে হলেও তার ঐতিহ্য অমলিন। এই ইঞ্জিনের সবচেয়ে শক্তিশালী মডেল হল "Bayer Garratt"। খড়গপুরের কর্মশালায় প্রাণ ফিরে পেয়েছে বায়ার গারাট স্টিম লোকোমোটিভ। শনিবার খড়গপুর ও মেদিনীপুরে দক্ষিণ পূর্ব শাখায় প্রায় ২২ কিলোমিটার যাত্রা করে এই ইঞ্জিন। ১৯২৯ সালে প্রথম ভারতে চলাচল শুরু করে এই ইঞ্জিন। এদিন রেল কতৃপক্ষ জানিয়েছেন যে গিনিজ বুকে নাম উঠতে পারে ভারতের এই স্টিম ইঞ্জিনের। শনিবারের ট্রায়াল রানের পর একে শক্তিশালী পশু বলেও আখ্যা দেওয়া হয়েছে একে।
১৯০৭ সালে বায়া পি কক্ অ্যান্ড কোম্পানি প্রথম নিয়ে আসে এই বাষ্প চালিত ইঞ্জিন, সেসময় গারাট ইঞ্জিনগুলি প্রযুক্তিগত বিপ্লব এনেছিল বলা বাহুল্য। তারপর নানা ভাবে সেই ইঞ্জিনকে উন্নত করা হয়। কিন্তু সেসব এখন ইতিহাস।
গারাট বিশ্বব্যাপী রেল ব্যবস্থায় এক মাইলস্টোন রচনা করেছে। পূর্ববাংলার নাগপুরে রেলওয়েতে মোট ৩২ টি গারাট ছিল, দার্জিলিং হিমালয় রেলওয়েতেও ছিল বেশ কয়েকটি। কিন্তু পরবর্তী কালে ডিজেল ও বিদ্যুৎ চালিত ইঞ্জিন নিয়ে আসা হয় যা বাষ্প ইঞ্জিনের জনপ্রিয়তাকে ধুয়ে মুছে দেয়।
BNR (পরবর্তী সাউথ ইস্টার্ন রেলওয়ে) -এ ৪০ বছর ধরে আজও পরিচর্যা করে চলেছে। এই "এন-ক্লাস" গারাট ২৫০০ টন ভার ৭২ কিলোমিটার বেগে বয়ে নিয়ে যেতে পারে। ভার ছাড়া তার কাজের গতি ছিল সমতলভূমিতে ১২৮ কিলোমিটার। শনিবার, প্রায় ৩০ কিলোমিটার বেগে ধোঁয়া উড়িয়ে স্টীম ইঞ্জিন ছুটে যায়।
এটির ২৪ টি চাকা আছে, যার মধ্যে "৪-৮-০ + ৪-৮-৪" ব্যবস্থা রয়েছে, এই চাকা ব্যবস্থার সঙ্গে এখন দেশে এই বিরল প্রজাতির ২৬ ইঞ্জিন রয়েছে। যারা ১০,০০০ গ্যালন জল এবং ১৪ টন কয়লা বহন করে। তবে নতুন আঙ্গিকে এই স্টিম চালাতে গেলে প্রয়োজন মেরামতির।
"এটি সেই সময়ের ভারী ইঞ্জিন ছিল। এটিকে নতুনদের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হলে, বিশ্ব রেকর্ড হতে পারে, মেন লাইনে এটি বিশ্বের বৃহত শক্তিশালী ইঞ্জিন হবে "। এম এস রংস্বামী, যিনি এই বাষ্প চালিত ইঞ্জিনকে পুনরুজ্জীবিত করার জন্য খড়গপুরে রেল কর্মীদের পরামর্শ দিয়েছিলেন। তিনি শুক্রবার বলেন দক্ষিণ রেলওয়ের প্রাক্তন প্রকৌশলী ১৯৯৮ সালে পুরনো বাষ্পের ইঞ্জিনটির পুনরুদ্ধার করেছিলেন।
৫০ বছর আগে এই ইঞ্জিনের অবসর গ্রহণের পর খড়গপুর কর্মশালায় সাজিয়ে রাখা হয়। এটি ২০০৬ সালে কলকাতার কাছাকাছি শালিমার ও মেচেদাতেও রয়েছে এই ইঞ্জিন।