কর জমা দেওয়ার লাইন, ইলেকট্রিসিটি বিল জমা দেওয়ার লাইন, ব্যাঙ্কের লাইন, তার ওপর বুঝতে না পারলে উপরি পাওনায় সরকারি কর্মচারীদের মুখঝামটা। এত কিছু কি আর সয়? এসব থেকে মুক্তির উপায় খুঁজেছে সরকার নিজেই।
এবার থেকে প্রয়োজনীয় সরকারি কাজ সেরে ফেলুন এক কথায়। আপনার স্মার্টফোনে ডাউনলোড করুন সরকারের UMANG অ্যাপ। যা দিয়ে আপনি সরকারের সঙ্গে লেনদেন প্রক্রিয়ার কাজ করে ফেলতে পারবেন। এখন ভাবছেন স্মার্টফোনের অত আদবকায়দার ইংরেজি তো বুঝি না, তার ওপর কী লিখতে কী লিখব, সে আরেক ঝামেলা। তাহলে উপায়? এই সমস্যার সমাধানও ঘটে গেছে। অ্যাপের সঙ্গে রয়েছে ভয়েস পরিষেবা।
আঞ্চলিক ভাষা জানতে হবে অ্যাপেলের সিরি থেকে অ্যামাজনের অ্যালেক্সাকে। যাঁরা ইংরেজি ভাষায় সড়গড় নন, তাঁদের কথা মাথায় রেখে ভারতের তথ্য প্রযুক্তি বিভাগ একটি অ্যাপ লঞ্চ করছেন। যা আপনার বাধ্য হবে। এক নির্দেশে করে দেবে কাজ। এই সমস্তটা সম্ভব হবে আপনার মাতৃভাষাতেই।
বিল দেওয়া থেকে শুরু করে প্রভিডেন্ট ফান্ডের ব্যালেন্স জানা, বা কর জমা দেওয়া, সমস্তটাই সম্ভব ওই অ্যাপের মাধ্যমে। ভারত সরকার দ্বারা পরিচালিত অ্যাপটি - the Unified Mobile App for New-Age Governance (UMANG)। যারা স্মার্টফোনে লিখে উঠতে পারেন না, বুঝতে পারেন না কোথায় ক্লিক করলে কি হবে, তাদের এই ঝঞ্ঝাট থেকে মুক্তি ঘটবে। তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের National e-Governance Division (NeGD) আওতায় এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। তবে উল্লেখ্য, শুধুমাত্র সরকারি কাজ করা সম্ভব হবে এই অ্যাপের মাধ্যমে।
স্রেফ মুখের কথাতেই ১৭টি রাজ্যের ৬৬টি কেন্দ্রীয় বিভাগের ৩০০টি পরিষেবা পাবেন গ্রাহকরা। এই পরিষেবাগুলোর মধ্যে রয়েছে বিদ্যুতে বিল জমা দেওয়া, গ্যাস ও ফোনের টাকা জমা দেওয়া, ইন্স্যুরেন্স, ইন্টারনেট ব্যবহারের বিল, হেলথ কার্ড পরিষেবা, কৃষি সমস্যা সমাধান, ইত্যাদি। এছাড়া আবহাওয়ার পূর্বাভাসও জানতে পারবেন।
৮ সেপ্টেম্বরের তথ্য অনুযায়ী, UMANG অ্যান্ড্রয়েডে ৭৩ লাখ, উইন্ডোজ প্ল্যাটফর্মের প্রায় ৪১,০০০ বার, এবং iOS এ ৪.৩১ লাখ বার ডাউনলোড হয়েছে। "বর্তমানে, (UMANG) অ্যাপ্লিকেশন মূলত স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের লক্ষ্য করেই তৈরি। টেক্সটের মাধ্যমে নয়, এবার ভয়েসের মাধ্যমে পরিষেবাগুলি উপভোগ করতে সক্ষম হবেন গ্রাহকরা। গত বছরের ৪ অক্টোবরে এই অ্যাপের ওয়ার্কশপে সংক্ষিপ্তসারে বলা হয়েছিল, সরকারি কাজকে ও পরিষেবাকে আরও চটজলদি মিটিয়ে ফেলার জন্য এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীকালে আরও বাড়ানো হবে আঞ্চলিক ভাষার তালিকা। এছাড়া এই অ্যাপে একটি টুল রয়েছে যা আপনার বলা কথা লিখিত আকারে পৌছে দেবে সরকারের কাছে।
বহু বেসরকারি সংস্থা ইতিমধ্যে দেশের আঞ্চলিক ভাষার ওপর জোর দিয়ে কাজ করছে। মাইক্রোসফ্ট হিন্দি ভাষাভাষীরা যাতে কম্পিউটারের সঙ্গে তাঁদের নিজস্ব ভাষায় যোগাযোগ করতে পারেন, সেই কারণে উইন্ডোজ টেনে নিয়ে এসেছে প্রায় ৩৬৫ টি ফিচার।
অনলাইন বিক্রেতা ফ্লিপকার্ট গত মাসে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (artificial intelligence) দ্বারা একটি স্পিচ দেওয়া শুরু করেছে, Liv.ai। যা দেশের দশটি ভাষাকে ভয়েস থেকে টেক্সটে পরিণত করবে।