মানব সভ্যতার ইতিহাসে যা এতদিন সম্ভব হয়নি, তা করে দেখাল আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা। নাসার সৌরযান সূর্যকে ছুঁয়ে অসাধ্যসাধন করল। এ এক মহাজাগতিক ইতিহাস সৃষ্টি হল। এতদিন পর্যন্ত অধরা পৃথিবীর সবচেয়ে কাছের নক্ষত্র সূর্যের বায়ুমণ্ডল যার নাম কোরোনা, সেটা ছুঁয়ে ফেলেছে দ্য পার্কার সোলার প্রোব।
Advertisment
এতদিন সূর্য অধরা মাধুরি ছিল মানুষের কাছে। পৃথিবীতে তৈরি কোনও মহাকাশ যান তো ছাড়, কোনও বস্তুই ছুঁয়ে দেখতে পারেনি সূর্যকে। আর সেই অসাধ্যসাধন করল দ্য পার্কার সোলার প্রোব। মঙ্গলবার এই মহাজাগতিক ইতিহাসের কথা সদর্পে ঘোষণা করেছে নাসা। শুধু ছুঁয়ে ফেলাই নয়, বায়ুমণ্ডলের নমুনাও সংগ্রহ করেছে এই মহাকাশ যান।
কোরোনাকে একপ্রকার সূর্যের বায়ুমণ্ডল বা উঠোন বলা হয়। সেই সূর্যের দুয়ারে পৃথিবীর মহাকাশ যান। তবে এই স্তরে মাধ্যাকর্ষণ শক্তি প্রবল। চৌম্বকীয় শক্তি এতটাই তীব্র যে কোনও বস্তুকে এই বহিরাবরণ পেরিয়ে বাইরে যেতে দেয় না। তাই সূর্যের তেজ থেকে নিরাপদ থাকে সৌরমণ্ডলের বিভিন্ন গ্রহ-উপগ্রহ।
আর সেই উঠোনেই পা রেখেছে পার্কার। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালে সূর্যের উদ্দেশে পাড়ি দিয়েছিল এই সৌরযান। এর আগে বেশ কয়েকবার সূর্যের কাছাকাছি পৌঁছে যায় পার্কার। এই নিয়ে আটবারের চেষ্টায় সূর্যকে ছুঁয়ে দেখল পার্কার সোলার প্রোব। সেইসঙ্গে সৌরপদার্থ এবং চৌম্বকীয় ক্ষেত্রের নমুনা সংগ্রহ করেছে এই পার্কার।
মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের জাস্টিন কাস্পার সাংবাদিকদের বলেছেন, "অত্যন্ত আশ্চর্যের এবং নাটকীয় পাঁচ ঘণ্টার সাক্ষী থেকেছি আমরা। আপনাদের মনে হতে পারে পাঁচ ঘণ্টা এমন কী ব্যাপার।" কিন্তু তাঁর দাবি, এই সময়ে কয়েক লক্ষ কিমি দূরত্ব পেরিয়ে পার্কার। এই সময়ে প্রতি সেকেন্ডে ১০০ কিমি গতিতে সূর্যের উঠোনের দিকে এগিয়েছে পার্কার।
বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, পার্কার সূর্যের চারপাশে চক্কর কাটতে থাকবে। এরপর কোরোনা ভেদ করার চেষ্টা করবে। চূড়ান্ত কক্ষপথে পৌঁছবে ২০২৫ সালে। যাবতীয় তথ্য ও আবিষ্কার আমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটি ছাপবে বিজ্ঞান জার্নালে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন