‘লাল গ্রহ’ মঙ্গলে সভ্যতার পাঠানো প্রথম হেলিকপ্টারটির নাম-‘ইনজেনুইটি’, যেটি ওড়ার প্রাথমিক কাজ শুরু করে দিয়েছে। এই হেলিকপ্টারের মূল কর্ণধার চিফ ইঞ্জিনিয়র জে বব বলরাম। নাসার 'মার্স ২০২০' অভিযানের অংশ হিসেবে লালগ্রহের বুকে বৃহস্পতিবার অবতরণ করার পর পারসিভারেন্স রোভার ও ইনজেন্যুইটি হেলিকপ্টার প্রস্তুত করছে নিজেদের এবং তা স্বয়ংক্রিয়ভাবেই।
নাসা সূত্রের খবর, হেলিকপ্টার বলা হলেও ইনজেন্যুইটি আদতে মাত্র ১.৮ কিলোগ্রামের একটি ক্ষুদ্র ড্রোন। মহাকাশবিজ্ঞানীদের মতে, মঙ্গলের বায়ুমন্ডলের ঘনত্ব পৃথিবীর মাত্র ১%, ফলে অবতরণের ক্ষেত্রে লালগ্রহের আবহাওয়া যে বড় বাধা, তা স্পষ্ট করেছেন গবেষকরা। পৃথিবী প্রথম বার সফল ভাবে অন্য কোনও গ্রহে হেলিকপ্টার ওড়াতে পারবে কি না, তা যে পুরোপুরি নির্ভর করছে বলরামের উপরে। তাঁরই মস্তিষ্কপ্রসূত এই ইনজেনুইটি।
হেলিকপ্টারকে সঙ্গে নিয়ে নাসার রোভার পৃথিবী থেকে মঙ্গলের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছিল সাড়ে ৬ মাস আগে। লাল গ্রহে সফল পাবে পা ছোঁয়ানোর পর ল্যান্ডার থেকে বেরিয়ে আসবে এই হেলিকপ্টার। রোভার পারসিভের্যান্স লাল গ্রহের ‘জেজেরো ক্রেটারে’ পা ছোঁয়ানোর আড়াই মাস পর বেরিয়ে আসবে বলরামের হাতে গড়া হেলিকপ্টার ইনজেনুইটি। এর পরের এক মাসে মোট ৫ বার মঙ্গলের আকাশে উড়বে হেলিকপ্টার। প্রতি বার দেড় মিনিটের জন্য। লাল গ্রহের পিঠ থেকে তা উড়বে সর্বাধিক ১০০ মিটার উচ্চতায়।
আগের রোভারগুলির থেকেও বৃহদায়তন পাখা রয়েছে ইনজেন্যুইটির, যা পাঁচগুণ জোরে ঘূর্ণনে সক্ষম, নাসা সূত্রে খবর এমনটাই। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, চৌকো আকৃতির দেহাবয়ববিশিষ্ট ইনজেন্যুইটির চারটি ধাতব পা ও দুইটি রোটারের সঙ্গে যুক্ত চারটি কার্বন ফাইবারের ব্লেড রয়েছে।
ইনজেন্যুইটির সোলার প্যানেলগুলি বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে সক্ষম যা হিমশীতল মঙ্গলের রাতে রোভারকে উষ্ণ রাখতে সাহায্য করবে। মঙ্গলে রাতের বেলায় উষ্ণতা নেমে যায় প্রায় -৯০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। স্বাভাবিকভাবেই নেভিগেশন সেন্সর, কম্পিউটার ও ক্যামেরা দু'টিকে বাঁচাতে দেহ উষ্ণ রাখতে হবে ইনজেন্যুইটিকে। স্বাভাবিকভাবেই মঙ্গলের প্রতিকূল আবহাওয়ার সঙ্গে যে যুঝতে পারবে ইনজেন্যুইটি, এমনই আশা সকলের।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন