প্রথমেই বলে নেওয়া ভালো, কম দামে পুষ্টিকর ফোন রিয়েলমি ফাইভ। শাওমির রেডমির প্রতি যাদের ভালোবাসা গড়ে উঠেছে তাদেরকেও ভাবাচ্ছে রিয়েলমি। রেডমি নাকি রিয়েলমি! কোন ফোনটি কিনলে উপকৃত হবেন? উল্লেখ্য, গত দুই বছরে একচেটিয়া ব্যবসা করতে সিদ্ধহস্ত হয়ে উঠেছে রিয়েলমি। ভারতে স্মার্টফোন ভেন্ডারে প্রথম সেরা পাঁচের তালিকায় নাম উঠে এসেছে এই কোম্পানির। কিন্তু এই গুড উইলের ওপর ভর করে কি ফোন কেনা সঠিক সিদ্ধান্ত হবে? রিভিউ পড়ে জেনে নিন, ফোনটি কেমন এবং সাধ্যের দামে আপনার সাধ মেটাবে কিনা?
Realme 5 ফোনটি সাতদিন ব্যবহার করার পর আপনার জন্য। রইল তার রিভিউ।
২৭ আগস্ট থেকে সেল শুরু হয়েছে রিয়েলমি ফাইভের। হাজার দশেক টাকা দাম। এই দামে ৩ জিবি র্যাম ও ৩২ রমের ভার্সনটি পেয়ে যাবেন আপনি। মূল আকর্ষণের বিষয় হল, এই দামে কোয়াড-কোর চার ক্যামেরার সেটআপ পেয়ে যাবেন। ব্যাটারিতেও রয়েছে চমক, ৫০০০ mAh। স্ন্যাপড্রাগন ৬৬৫ প্রসেসরে চলা ফোনটিতে এক্সটারনাল স্টোরেজ তব্যবহার করতে পারবেন ২৫৬ জিবি। ৬.৫ ইঞ্চির HD+ স্ক্রিন, ১২+৮ এর আল্ট্রা ওয়াইড অ্যাঙ্গেল+২ আল্ট্রা ম্যাক্রো+২ মেগাপিক্সেলের পোট্রেট পাওয়া যাবে। ফ্রন্টে পাওয়া যাবে ১৩ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা। ইন্টারনাল স্টোরেজ ও র্যামের কমবেশির উপর তিনটি ভার্সনে পাওয়া যাবে রিয়েলমি ফাইভ।
এত গেল স্পেসিফিকেশনের তালিকা। এখন প্রশ্ন এইগুলি কাজ কেমন করছে Realme 5 ?
প্রথমে আসা যাক, ডিজাইন, লুক ও ডিসপ্লের কথায়। ফোনটি ধরে ঠিক ভালো লাগবে না। কারণ যে পলিকার্বোনেট ডিজাইন দেওয়া হয়েছে তাতে সম্পূর্ণ লাগছে না ফোনটি। খুবই নিম্মমানের লুক। সামন্য হলোগ্রাফিক রঙ এবং ডিজাইনে বদল আনা হয়েছে। ফোনের তিনটি ক্যামেরা থাকছে বামদিকে। ক্যামেরার পাশে রয়েছে ফ্ল্যাশ লাইট, এবং মাঝে রয়েছে ফিঙ্গারফ্রিন্ট সেন্সর।
আর্দ্রতা, বৃষ্টি থেকে বাঁচাতে ফোনে রয়েছে অতিরিক্ত প্রোটেকশন। এই বাজেটে এইধরণের সুবিধা বাজারচলতি অন্য কোনো ফোনে পাওয়া যাবে না। স্ক্রিনের রয়েছে ৬.৫ ইঞ্চির ক্রনিং গোরিলা গ্লাস থ্রি। হাজার দশেক টাকায় স্ক্রিনের সাইজ মন মত। তবে দিনের আলোয় স্ক্রিন দেখতে অসুবিধা হবে । অগত্যা ব্রাইটনেস ফুল করতে হবে।
চার রিয়ার ক্যামেরা রয়েছে ফোনের পিছনে। প্রাইমারি ক্যামেরাতে ১২ মেগাপিক্সেলের সঙ্গে রয়েছে আল্ট্রা-ওয়াইড সেন্সর, আলট্রা ম্যাক্রো সেন্সর এবং পোট্রেট ক্যামেরা। আলোতে ফোনের ক্যামেরা বেশ ভালো কাজ দেয়। তবে ম্যাক্রো ফটো তুলতে গেলে হাত স্থির রাখতে হবে। ম্যাক্রো সেন্সর ব্যবহার করে নিঁখুত ছবি তোলা সম্ভব। পোট্রেটের ক্ষেত্রেও ব্যাকগ্রাউন্ড ফেড করে দুর্দান্ত ছবি তুলতে সক্ষম রিয়েলমি ফাইভ। সাবজেক্টকে আরও নিঁখুত করে দেয়। কম আলোতেও বেশ ভালো ছবি তুলতে সক্ষম রিয়েলমি ফাইভ। তবে কম আলোয় ছবির ডিটেলিং ভালো নয়। ফ্রন্ট ক্যামেরাও মন্দ নয়, বিউটিফিকেশন অফ থাকাকালীন ঝকঝকে ছবি তোলা যাচ্ছে। ফ্রন্ট ক্যামেরার পোট্রেট মোডও বেশ কার্যকর।
স্ন্যাপড্রাগন ৬৬৫ প্রসেসর সঙ্গে ৫০০০ mAh ব্যাটারি কম্বিনেশনের পারফর্মেন্স মন্দ নয়। সাত দিনের টানা রাফ ইউজের সময় মাল্টি ট্যাব খুলে কাজ করা, একাধিক বার বিভিন্ন অ্যাপ খুলে যথেষ্ট ভালো কাজ করা গেছে। হ্যাঙ্গ করার মত কোনো ইস্যু চোখে পড়েনি।
Asphalt-9 এর মত ভারী গেমও খেলা সম্ভব হচ্ছে এই ফোনে। তবে ভারী গেম খুলতে একটু সময় নিচ্ছে। গেম চলাকালীন ফোন গরম হয়ে যাবে। এখন প্রশ্ন আদৌ এই ফোন কিনে আপনি উপকৃত হবেন কিনা?
দেখুন, হাজার দশেক টাকায় যা যা ফিচার ও স্পেসিফিকেশন দিচ্ছে তা যথেষ্ট। কোয়াড ক্যামেরা নিয়ে খুশি থাকতে চাইলে অবশ্যই রিয়েলমি ফাইভ ভালো পছন্দ। কিন্তু এই ফোনটির প্রতিদন্ধী হচ্ছে ৪৮ মেগাপিক্সেলের Redmi 7S। যা ভাবাতে পারে গ্রাহকদের।
Read the Full story in English