চন্দ্রযান-৩ মিশনের সর্বশেষ আপডেটে, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) সোমবার জানিয়েছে যে রোভার প্রজ্ঞান চন্দ্রপৃষ্ঠে ঘোরাফেরা করছে। প্রজ্ঞান যেখানে আছে, তার ঠিক আগে একটি বড় গর্ত ছিল। বড় বিপদ ঘটতে পারত। সেখান থেকে রোভারকে পথ বদলিয়ে নিরাপদে ফেরানো হয়েছে। রোভার প্রজ্ঞান আপাতত নিরাপদ আর, নতুন পথে চলছে। এই ব্যাপারে সোশ্যাল মিডিয়া এক্স-এ ইসরো এক্স বার্তায় বলেছে, '২০২৩ সালের ২৭ আগস্ট, রোভারটি তার অবস্থান থেকে ৩ মিটার এগিয়ে একটি ৪ মিটার ব্যাসের গর্তের কাছে চলে এসেছিল। এরপরই রোভারটিকে পথ বদলের নির্দেশ দেওয়া হয়। সেটি এখন নিরাপদে নতুন পথে চলছে।'
ইতিমধ্যে, চন্দ্রযান-৩ দ্বারা পরিচালিত পরীক্ষাগুলোর প্রথম ফলাফল প্রকাশ করেছে ইসরো। তাতে দেখা গিয়েছে যে গভীরতা অনুযায়ী চন্দ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রার দ্রুত তারতম্য হচ্ছে। অন্তত দক্ষিণ মেরুর কাছে তেমনটাই ঘটছে। চন্দ্রের সারফেস থার্মোফিজিকাল এক্সপেরিমেন্ট বা ChaSTE ল্যান্ডার মডিউলে থাকা একটি যন্ত্র। চন্দ্রের পৃষ্ঠের মাটিতে তাপমাত্রার তীব্র হ্রাস ধরা পড়েছে ল্যান্ডারের যন্ত্রে। চন্দ্রপৃষ্ঠ থেকে মাত্র ১০ সেন্টিমিটার নীচে, তাপমাত্রা প্রায় -১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে গেছে। সেই সময় এর পৃষ্ঠের তাপমাত্রা প্রায় ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছিল বলেই ইসরো জানিয়েছে।
চন্দ্রযান-৩ দ্বারা পরিচালিত পরীক্ষাগুলোর অন্যতম উদ্দেশ্য হল চন্দ্রের ওপরের মাটির তাপমাত্রার বিস্তারিত রূপরেখা তৈরি করা। শনিবার, সেই ব্যাপারে ইসরো একটি ৪০ সেকেন্ডের ভিডিও প্রকাশ করেছে। যেখানে দেখা যাচ্ছে যে প্রজ্ঞান রোভার 'শিব শক্তি' পয়েন্টের চারপাশে ঘোরাফেরা করছে। চাঁদে মহাকাশযানের অবতরণ স্থান এই 'শিব শক্তি' পয়েন্ট। চাঁদের দক্ষিণ মেরুর গোপনীয়তার সন্ধানে এখানেই নেমেছে ল্যান্ডার বিক্রম। ইসরোর ভিডিওয় রোভারকে খানা-খন্দে ভরা চন্দ্রপৃষ্ঠে চলতে দেখা গেছে। ল্যান্ডারের কাছাকাছিই রয়েছে রোভার। ল্যান্ডারের সঙ্গে সংযোগ রেখেই রোভার চন্দ্রপৃষ্ঠে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এটা স্পষ্ট ধরা পড়েছে ভিডিওয়।
আরও পড়ুন- মহাকাশ বিজ্ঞানে আজ ভারত অগ্রগণ্য, নেপথ্যে বিশাল অবদান বাঙালি বিজ্ঞানীর
গত ২৩ আগস্ট ইসরো ইতিহাস রচনা করেছে। কারণ চন্দ্রযান-৩ চাঁদের পৃষ্ঠে (দক্ষিণ মেরুতে) আলতোভাবে অবতরণ করেছে। এর সঙ্গেই ভারত বিশ্বের প্রথম দেশ হিসেবে চাঁদের অজানা দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে পৌঁছল। আর, চতুর্থ দেশ হিসেবে সফলভাবে চাঁদে একটি মহাকাশযান পাঠাল। ভারতের আগে পূর্ববর্তী সোভিয়েত ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং চিন চাঁদে সফলভাবে চন্দ্রযান পাঠিয়েছে।