Advertisment

সম্পূর্ণ ভার্চুয়াল মাধ্যমে Facebook-কে পরিণত করার লক্ষ্যে জুকারবার্গ

'মেটাভার্স' বিষয়টি ঠিক কী? এ ব্যাপারে বিশদে বলেন জুকারবার্গ।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Facebook

নাম পরিবর্তন হতে চলেছে ফেসবুকের! বড় খবরে জোর জল্পনা টেক দুনিয়ায়

মার্ক জুকারবার্গ আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ফেসবুককে সম্পূর্ণ ভার্চুয়াল জগতে পরিণত করতে চান। বিশ্বের বৃহত্তম সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ফেসবুকের সহ-প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গ এখন তাঁর কোম্পানিকে এক নতুন পরিচয় দিতে চান। সাম্প্রতিক এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন যে, আগামী পাঁচ বছরে তিনি চাইবেন মানুষ ফেসবুককে সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানি হিসেবে নয়, বরং 'মেটাভার্স' কোম্পানি হিসেবে চিনুক। জুকারবার্গের এই সাক্ষাৎকারের পর, 'মেটাভার্স' শব্দটি এখন ঘোরাফেরা করছে মানুষের মুখে মুখে। কিন্তু অনেকেই এটি সম্পর্কে জানেন না।

Advertisment

'মেটাভার্স' বিষয়টি ঠিক কী? এ ব্যাপারে বিশদে বলেন জুকারবার্গ। মেটাভার্স শব্দটি "মেটা"(মহা),এবং ইউনিভার্স (বিশ্ব) অর্থাৎ মেটাভার্স শব্দটির প্রকৃত অর্থ ‘মহাবিশ্ব’। কী থাকবে সেই মহাবিশ্বে? জুকারবার্গ বলেন, এটি হল এক ভার্চুয়াল জগৎ যেখানে মানুষের চিন্তা ভাবনা, কাজকর্ম, সবটাই সে করতে পারবে এই ভার্চুয়াল জগতের মধ্যে। প্রসঙ্গত করোনা মহামারী এবং ‘work from home’ এই দুইয়ের যৌথ কনসেপ্টে মানুষ এখন অনেকটাই ভার্চুয়াল জগতের সঙ্গে পরিচিত। জুকারবার্গ সেই কনসেপ্টের আরও ব্যাপক বিস্তারের কথা উল্লেখ করেন এই ‘মেটাভার্স’ শব্দের মাধ্যমে। যেখানে মানুষের চিন্তা ভাবনা, কাজকর্ম, কথোপকথন পুরোটাই নিয়ন্ত্রিত হবে এই ভার্চুয়াল জগতের মধ্য দিয়েই।

ফেসবুক শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়া নয়, একটি মেটাভার্স সংস্থা হয়ে উঠবে। মার্ক জুকারবার্গ আরও বলেছিলেন, “আমি আশা করি আমরা যদি এটি ভাল করে করি তবে আগামী পাঁচ বছরে আমরা আমাদের সংস্থার জন্য একটি নতুন অধ্যায় লিখতে পারি”। তিনি বলেন, “আমার দৃষ্টিতে আমরা মানুষকে বোঝাব যে আমরা শুধু একটি সোশ্যাল মিডিয়া কোম্পানি নই বরং একটি “মেটাভার্স” কোম্পানি। বর্তমানে আমরা সবাই অ্যাপ ব্যবহার করি, যা অ্যাপ্লিকেশনগুলি ব্যবহার করে মানুষ এই তাদের নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের মধ্যে যোগাযোগ রেখে চলছে এবং সৃজনশীল ধারণা শেয়ার করছে।“

মার্ক জুকারবার্গ ফেসবুককে নতুন পরিচয় দেওয়ার পরিকল্পনা করেছেন আগামীদিনে যা হবে সম্পূর্ণ এক ভার্চুয়াল জগৎ। জুকারবার্গ বলেছেন, যে তিনি এবং তাঁর টিম এই ধারণা সৃষ্টিতে অনেক সময় ব্যয় করছেন। তিনি তাঁর স্বপ্ন নিয়ে অনেক ভাবছেন। তিনি অনুভব করেন যে, তিনি আজ, যা করছেন তা কেবলমাত্র বইয়ের একটি অধ্যায়। সম্পূর্ণ বই তিনি লিখতে চলেছেন, যার মাধ্যমে তিনি বিশ্বের কাছে উন্মোচন করবেন এক ভার্চুয়াল জগতের। 'মেটাভার্স' –এর বর্ণনা করে জুকারবার্গ বলেছিলেন যে এটি একটি 'দৃষ্টি' যা পুরো প্রযুক্তি শিল্পকে প্রশস্ত করতে সহায়তা করবে।। তিনি এটিকে আগামী সময়ে মোবাইল এবং ইন্টারনেটের এক নতুন অবতার হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

“মেটাভার্স” আসলে কী?

ধরুন আপনি রাস্তায় হাঁটছেন বা বাড়িতে বসে আছেন। হঠাৎ আপনি আপনার প্রয়োজনীয় কিছু মনে আপনি মনে করলেন, এবং আপনি ভাবলেন, সেই জিনিসগুলি আপনার পাশে রাখা আছে বলে আপনার মনে হচ্ছে। 'মেটাভার্স' এমনই একটি ফ্যান্টাসি জগৎ যেখানে মানুষকে কম্পিউটার প্রভাবের মাধ্যমে ব্যস্ত রাখা যায়। মার্ক জুকারবার্গ বলেছেন যে, আগামী সময়ে, ফেসবুক 'মেটাভার্স'- এর মাধ্যমে লোকেরা ঘরে বসে বসে ভার্চুয়াল জগতে কাজ করতে পারবেন। মানুষ ফেসবুকে বন্ধুদের সাথে দেখা করতে পারবেন। মার্ক জুকারবার্গ স্বপ্ন দেখেন আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ফেসবুককে সম্পূর্ণ ভার্চুয়াল জগতে পরিণত করা সম্ভব যেখানে মানুষ এক জায়গায় থাকলেও অন্য মানুষের উপস্থিতি অনুভব করতে পারবেন।

আপনি যদি হলিউড মুভি 'রেডি প্লেয়ার ওয়ান' দেখে থাকেন, তাহলে আপনি অবশ্যই 'মেটাভার্স' কী? তার একটি ধারণা পেতে পারেন। ছবিতে এমন একটি কাল্পনিক বিশ্বকে তুলে ধরা হয়েছে, যেখানে লোকেরা কেবল একটি ডিভাইসের সাহায্যে তাঁদের বাড়িতে প্রবেশ করে, সেখানে লড়াই করে, এবং নাচগান এমনকি খাওয়া দাওয়াও হয়। সেই ভার্চুয়াল জগতে সম্পূর্ণ একটি মাত্র ডিভাইসের ব্যবহারে সবকিছু ঘটে। জুকারবার্গ তাঁর এই ভার্চুয়াল ধারণা নিয়ে আশাবাদী। তিনি বিনিয়োগকারীদের কাছে আহ্বান জানান, তাঁর এই নতুন উদ্যোগে বিনিয়োগের জন্য। জুকারবার্গের এই ধারণা সমগ্র বিশ্বের কাছে প্রযুক্তি শিল্পের এক নতুন অধ্যায় সূচনা করবে।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Mark Zuckerberg Facebook
Advertisment