ট্রাম্প প্রশাসনের ভিসা নীতি সংস্কারে বড় ধাক্কা খেতে পারে ভারতীয় আইটি ক্ষেত্র?

"বাইরের দেশ থেকে আসা কর্মীরা আমেরিকার সাফল্যে পিছনে অনেক অবদান রেখেছেন। প্রযুক্তিতে বিশ্বে প্রথম স্থানে রেখেছেন আমেরিকাকে।"

"বাইরের দেশ থেকে আসা কর্মীরা আমেরিকার সাফল্যে পিছনে অনেক অবদান রেখেছেন। প্রযুক্তিতে বিশ্বে প্রথম স্থানে রেখেছেন আমেরিকাকে।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
দিনের সেরা প্রযুক্তির খবর: আপনার দোকান খুলুন ইনস্টাগ্রামে, ট্রাম্পকে হুঁশিয়ারি টুইটারের

সমস্যার মুখে ভারতীয় আইটি সেক্টর?

আগামী ছ’মাসের জন্য জারি করা হবে না এইচ ১বি-সহ একাধিক মার্কিন ভিসা। মঙ্গলবার সেই বিলেই সই করেছেন মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প। অন্যদিকে হোয়াইট হাউজ পরিবর্তন করতে চলেছে এইচ ১বি ভিসার নীতি। ট্রাম্প ভিসা নীতি পরিবর্তন করে ‘মেধার ভিত্তিতে ভিসা’ চালু করার নির্দেশ দিয়েছেন। বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, এর মূল কারণ, আমেরিকার নাগরিকদের কর্ম সংস্থানের ক্ষেত্রে যেন কোনও সমস্যা না আসে। এর ফলে চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দেওয়া হবে না এইচ ১বি-এইচ ২ বি ভিসা।

Advertisment

এইচ ১বি ভিসার নীতি অনুযায়ী বহিঃদেশীয় কর্মীদের প্রবেশের ওপর নিষেধাজ্ঞার ফলে বিশ্বব্যাপী এবং বিশেষত ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি (আইটি) সংস্থাগুলি ও শ্রমিকদের উপর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে।

চলতি নয়ম অনুযায়ী লটারি মারফত এইচ ১বি ভিসা পাওয়া যেত। সেই নিয়মে বদল এসেছে। এক্ষেত্রে যাঁর বেতন বেশি, তিনিই আগে সুযোগ পাবেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে কাজ করার। অবশ্য তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের কর্মীরা এইচ ১বি ভিসার ওপর ভরসা কমিয়ে ফেলেছেন। কিন্তু, ট্রাম্প প্রশাসনের নীতি সংস্কারে বড় ধাক্কা খেতে চলেছে আইটি সংস্থাগুলি।

তাবড় তাবড় গ্লোবাল টেক সংস্থা ভারতে অবস্থিত আইটি সংস্থাগুলিকে তাদের ব্যাকএন্ড ডেটাবেস আপডেট, পরিষেবা এবং রক্ষণাবেক্ষণের কাজের আউটসোর্স হিসেবে ব্যবহার করে। তবে, এই সংস্থাগুলির দক্ষ কর্মীরা ক্লায়েন্টের সাইট পরিদর্শন করতে এবং আরও বিশেষ প্রয়োজনীয়তার জন্য কাজ করতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যান। এক বিবৃতিতে হোয়াইট হাউজ বলেছে যে অজস্র আমেরিকান কর্মী করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার কারণে কাজে যেতে পারছেন না। এক্ষেত্রে অন্য দেশ থেকে কর্মীরা যাতে সেই শূন্য স্থান পূরণ করতে না পারেন, এবং আমেরিকার কর্মীদের উপর প্রভাব না পড়ে, সে জন্যই এই নতুন সংস্কার।

Advertisment

আরও পড়ুন: নিরাপদ নয় জেনেও দেদার ব্যবহার জুম অ্যাপের, জেনে নিন সুরক্ষিত থাকবেন কীভাবে

কিন্তু এতে হতাশ হয়েছেন গুগল সিইও সুন্দর পিচাই, টেসলা সিইও এলন মাস্ক সহ বহু আইটি কোম্পানির উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা।

অসন্তোষ প্রকাশ করে সুন্দর পিচাই বলেন, ‘‘এই সিদ্ধান্তে আমি হতাশ। আমরা সব সময় অভিবাসীদের পাশে থাকব এবং তাঁদের কাজের সুযোগ তৈরির চেষ্টা করে যাব। কিন্তু বাইরের দেশ থেকে আসা কর্মীরা আমেরিকার সাফল্যে পিছনে অনেক অবদান রেখেছেন। প্রযুক্তিতে বিশ্বে প্রথম স্থানে রেখেছেন আমেরিকাকে।’’

মার্কিন সরকার বছরে প্রায় ৮৫ হাজার এইচ ১বি ভিসা জারি করে। এর মধ্যে উচ্চ দক্ষতা সম্পন্ন বিদেশি কর্মীদের জন্য ৬৫ হাজার, এবং শিক্ষার্থীদের জন্য ২০ হাজার।

২০১৮-১৯ সালে প্রযুক্তি জায়ান্ট গুগল, ফেসবুক এবং অ্যাপল এইচ ১বি ওয়ার্ক ভিসার কল্যাণে ১৩ হাজারেরও বেশি কর্মচারী নিয়োগ করেছে।

সরকারি তথ্য অনুসারে, এপ্রিল ১, ২০২০ প্রর্যন্ত প্রায় আড়াই লক্ষ এইচ ১বি ভিসার আবেদন  পড়ে। যার মধ্যে ১.৮৪ লক্ষ আবেদনকারী ভারতীয়।

তবে একথাও সত্যি, ভারতীয় সংস্থাগুলির নির্ভরতা হ্রাস পেয়েছে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে। ২০১৮-১৯ সালে শীর্ষ পাঁচটি ভারতীয় আইটি সংস্থা - টিসিএস, কগনিজ্যান্ট, ইনফোসিস, উইপ্রো এবং এইচসিএল টেক একসঙ্গে আন্দাজ পাঁচ হাজার উচ্চ-দক্ষ আইটি কর্মীকে এইচ ১বি ভিসায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রেরণ করেছিলেন, সেখানে ২০১৪ সালে পাঠানো হয় ১৬ হাজার।

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

Read the full story in English