বছর ২২-এর জ্যোতিষ্ক বিশ্বাস। মাস ছয়েকের মধ্যে ট্রান্স হিমালয়টা পশ্চিম থেকে পূর্বে আড়াআড়ি ভাবে চষে ফেলেছে জ্যোতিষ্ক। সঙ্গী বলতে দু'চাকার বাহনটা। দেশের গণ্ডী পেরিয়ে নেপালেও চলে গেছিল সাইকেলে চেপে। শনিবার অভিযান শেষ হয়েছে জ্যোতিষ্কের।
বাড়ি থেকে জ্যোতিষ্ক বেরিয়ে পড়েছিল ১২ মে। ১৭৬ দিন পর শেষ হল সফর। কলকাতা থেকে প্রথমেই পাড়ি দিয়েছিল বেনারস, সেখান থেকে লখনউ, আগ্রা, মথুরা, দিল্লি, জলন্ধর, জম্মু, শ্রীনগর, সোনমার্গ, কার্গিল লেহ- লাদাখ হয়ে খারদুংলায় পৌঁছয়। সেখান থেকেই শুরু হয় মূল অভিযান। মানালি, গাড়োয়াল, নেপাল, উত্তরবঙ্গ, অসম হয়ে অরুণাচল প্রদেশে এসে শেষ হয় যাত্রা। পেরোতে হয়েছে দশখানা গিরিখাত।
প্রসঙ্গত, গত বছর সাইকেলেই ট্রান্স হিমালয় অভিযান করেছিলেন বাংলার আরেক যুবক চন্দন বিশ্বাস।
ছবি সূত্র-ফেসবুক
শেষ ছ'মাসে ৭,৮৯১ কিলোমিটার পথ পেরিয়ে এসছে তার সাইকেল। এখন রয়েছে জোনাই-তে। দু'চাকায় জড়িয়ে যাওয়া কত গল্প, কত কথা এখন ছাড়িয়ে আনার পালা। ঘরে ফেরার আগেই সে সব শুরু করেছে নদিয়ার করিমপুরের এই অ্যাডভেঞ্চার পাগল ছেলেটা।
স্বপ্ন দেখে দক্ষিণ আমেরিকার আন্দিজে সাইকেল চালানোর। সাইকেলে স্বপ্ন পাড়ির মাঝে মাঝে ব্রেক কষে নেমে পড়া। বুক ভরে বেঁচে নেওয়া অন্য রকম জীবন। এই নেশাতেই বুঁদ হয়ে রয়েছে জ্যোতিষ্ক। এভাবেই কখনো খারদুংলা, কখনো সান্দাকফু দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। অভিযানের খরচ বেশ কিছুটা বইতে হয়েছে নিজেকে। সেই জন্যই শখের ফটোগ্রাফিকে পেশা হিসেবেও নিতে হয়েছে অনেক বার। খরচের বাকিটা এসছে ক্রাউড ফান্ডিং থেকে। প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে অভিযানে। পর্বতারোহী সত্যরূপ সিদ্ধান্তের এনজিও অ্যাবেটো এবং মায়া আর্ট স্পেসের মধুছন্দা সেন তাকে বিশেষ ভাবে সাহায্য করেছেন।
"শৈশবে উত্তরবঙ্গ অরুণাচল প্রদেশে কাটিয়েছি বেশ কিছু বছর। বন্ধু তেমন ছিল না তখন। সঙ্গী বলতে পাহাড়কেই বুঝতাম। এ ভাবেই পাহাড়ের সঙ্গে বন্ধুতা শুরু। বয়স যত বেড়েছে, একটু একটু করে গাঢ় হয়েছে সম্পর্ক"। ফোনের আড্ডায় জানাল সদ্য মাস কমিউনিকেশনে স্নাতক পাশ করা তরুণ। বাংলার আগামী প্রজন্ম আলো খুঁজে পাক জ্যোতিষ্কের আলোয়।