Advertisment

কালিম্পঙে ভিড় না করে চিবো-তে ফুলের জলসা দেখে আসুন

হোম স্টে-র দুটি তল মিলে যা ঘর, তাতে ১৫-২০ জনের দল অনায়াসে থাকতে পারে। আসেও । নেচার স্টাডি ও ট্রেকিং-এর সুযোগ থাকায় চিবো-তে প্রায়ই আসে তরুণ-তুর্কির দল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
কালিম্পঙে ভিড় না করে চিবো-তে ফুলের জলসা দেখে আসুন

ঘুম থেকে উঠে দরজা খুলে বাইরে আসতেই নানা রঙের ফুলের বাহারে চোখ ধাঁধিয়ে গেল। মুগ্ধ হয়ে দেখতে দেখতেই এসে গেল ভ্রমর, মৌমাছি আর প্রজাপতির দল। তারপর উড়ে উড়ে, ঘুরে ঘুরে, নেচে নেচে কী তাদের ব্যস্ততা! কেউ মধু সংগ্রহ করছে, কেউ বা শুধুই খেলা করছে। ভ্রমর আর মৌমাছির দল একটু বেশি চঞ্চল। দু'চারবার আমাকে প্রদক্ষিণ করলো তারা। বোধহয় অচেনা বুঝে সন্দেহের বশেই। এরা বেশিক্ষণ এক জায়গায় বসতে পারে না। কিছুক্ষণ পরেই উধাও দু'পক্ষই। তুলনায় প্রজাপতিরা শান্ত। এক একটি ফুলের ওপর বেশ অনেকটা সময় বসছে। তবে সেই বসারও একটা কায়দা আছে। প্রথমে নির্দিষ্ট ফুলটির ওপরেই অনেকক্ষণ চক্রাকারে ঘুরছে, তারপর বসছে। আর এই যে এতবড় একটা মানুষ কখনও দাঁড়িয়ে, কখনও ঝুঁকে খুব কাছ থেকে ওদের দেখছে, ছবি তুলছে, তাতে এতটুকু ভয় নেই। নির্বিকারে নিজেদের প্রাত্যহিক কর্ম করে যাচ্ছে।

Advertisment

আরও পড়ুন, পেডং – একবার গেলে বারবার!

পাহাড়ে একটু তাড়াতাড়িই ঘুম ভেঙে যায়। আসলে এখানে মানুষের জীবনযাত্রাটাই যে আমাদের সমতলের, বিশেষত শহরবাসীর তুলনায় অনেক আগে শুরু হয়। সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত চলে এদের কর্মপ্রবাহ। গতকালই এসেছি চিবো-তে। কালিম্পং জেলার অন্তর্গত ছোট এক গ্রাম। সময়টা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি। আজ দ্বিতীয় দিন। আকাশ ঝকঝকে পরিষ্কার। কাল কিছু কুয়াশা ছিল। তাই প্রকৃতির এমন অনাবিল রূপ দেখার সুযোগ হয়নি।

Chibo Tourism, North Bengal Tourism ফুলের জলসায় প্রজাপতিদের আহ্লাদ

চাকরি থেকে সদ্য অবসর নিয়েছি। তবে, কলকাতার পাট এখনও রয়ে গেছে। এরই মধ্যে চলছে উত্তরবঙ্গে তথা পাহাড়ে স্থায়ী ঠিকানার খোঁজ। কলকাতা থেকে আসাযাওয়া চলছে। এমনই এক আসা যাওয়ার মাঝে চিবো-য় আগমন। কলকাতা থেকে রাতের ট্রেনে নিউ জলপাইগুড়ি, সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে চিবো। এই হলো রুট। তবে, আমাকে একবার মাঝে শিলিগুড়িতে ক্ষণিক বিরতি দিতে হবে। ট্রেন মোটামুটি রাইট টাইমে পৌঁছেছে। গাড়ি অপেক্ষা করছিল। স্টেশনেই চা খেয়ে রওনা দিলাম।

আরও পড়ুন, দেবতার ঘরে

একজনের সঙ্গে একটা ছোট্ট মিটিং ও তাঁর বাড়িতেই ব্রেকফাস্ট সেরে গাড়ি যখন সেবক রোড ধরলো, তখন ঘড়ির কাঁটা এগারোটা পার করেছে। বরাবরের মতোই প্রথমে মহানন্দা রেঞ্জ, দু'দিকে জঙ্গলকে রেখে জাতীয় সড়ক ধরে সোজা এগিয়ে যাওয়া। তারপর তিস্তার ঘনিষ্ঠ সান্নিধ্য সঙ্গে নিয়ে পথ চলা। কালিম্পং আসার পথে তিস্তা অনেকটা সঙ্গ দেয়। এবারও তার দর্শনসুধা পান করতে করতে, চড়াই-উৎরাই ধরে চলেছি। পথের ধারে ধারে প্রচুর গাছ, ছোট ছোট জনপদ, দোকানপাট। একটা সময় তিস্তা উধাও। প্রায় পৌঁছে গেছি কালিম্পং শহরে। শহরে ঢোকার একটু আগে একটা রাস্তা চলে গেছে ডানদিকে। এটাই আমাকে নিয়ে যাবে চিবো-তে।

Chibo Tourism, North Bengal Tourism এখানে প্রকৃতি অকৃপণ

একটাই রাস্তা ঘুরে ঘুরে গেছে। কাঁচা রাস্তা, মাটি কম পাথর বেশি। তবে খুব উঁচুনিচু নয়। চড়াই-উৎরাই অবশ্য আছে। দিক নির্দেশিকা দেখে, পথচলতি লোকজনকে জিজ্ঞাসা করে পৌঁছে গেলাম ঠিকানায়। পৌঁছে তো গেলাম। কিন্তু প্রবেশ করব কী করে? রাস্তা থেকে খাড়া সিঁড়ি উঠে গেছে উপরে। সে যে কত উপরে, তাকিয়ে মাথা ঘুরে যাওয়ার যোগাড়!  কিন্তু যেতে তো হবেই। ধীরে ধীরে, মাঝে এক-দুবার দাঁড়িয়ে বিশ্রাম নিয়ে, অবশেষে উঠি মূল বাড়িটিতে। সাহায্য করে হোম স্টে-র এক তরুণ কর্মী। ব্যাগপত্রও সে-ই নিয়ে যায়। চিবো-র এই হোম স্টে একটি দোতলা বাড়ি। আর আমি এখন যেখানে, সেটা একটা অনেকটা ছড়ানো টেরেস। অর্থাৎ এর নিচেও ঘর রয়েছে। পাহাড়ে যেমন নিয়ম, পাথুরে ধাপগুলির খাঁজে খাঁজেই ঘর বানানো হয়।

Chibo Tourism, North Bengal Tourism রাস্তা থেকে খাড়া সিঁড়ি উঠে গেছে উপর পানে

যথেষ্ট ক্লান্ত  ছিলাম বলাই বাহুল্য। বেলাও হয়েছে অনেক। থাকার নির্দিষ্ট ঘরটিতে মালপত্র রেখে, স্নান করে, ফ্রেশ হয়ে বাইরে এলাম। বেলা অনেকটাই গড়ালেও আকাশ মেঘ-কুয়াশায় ঢাকা বলে বোঝার উপায় নেই। রঙিন ছাতার নিচে বসে গরম কফির কাপে চুমুক দিতে দিতে কথা বলি হোম স্টের মালিকের সঙ্গে। বাবা-ছেলে দুজনে মিলে চালান। বেশ সমৃদ্ধশালী ও শিক্ষিত একটি নেপালি পরিবার। পাহাড়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি থেকে গ্রামের বিভিন্ন সমস্যা - সব ক্ষেত্রেই বেশ সুচিন্তিত মতামত দিলেন। কিছুক্ষন কথা বলে আমাকে প্রকৃতির উন্মুক্ত প্রাঙ্গণে রেখে নিজের কাজে চলে গেলেন ওঁরা। রান্না ও খাবার ঘরটা একধাপ নিচে। সেখান থেকে তখন চিকেন রান্নার সুঘ্রাণ ভেসে আসছে। লাঞ্চের প্রস্তুতি চলছে। সে চলুক। বরং এই অবকাশে চিবো সম্পর্কে কিছু তথ্য জানানো যাক।

আরও পড়ুন, গ্রামের নাম দাওয়াই পানি

কালিম্পং থেকে মাত্র চার কিমি দূরত্বে অবস্থিত পূর্ব হিমালয়ের এই ছোট্ট গ্রাম পাইনের ছায়ার মায়ায় বড়ই অপরূপ। রয়েছে শাল, ইউক্যালিপটাস ও আরও নানা ছোটবড় গাছ। এইসবই আদতে জঙ্গল কেটে বসতি। ফলে গাছপালার প্রাচুর্য  প্রকৃতিকে বাঁচিয়ে রেখেছে। এছাড়াও ফুল ও অর্কিডের স্বর্গ অঞ্চলটি। ছোটখাটো এক নার্সারি আছে এঁদের নিজেদেরই। সেখানে নানা জাতের ফুল, পাতাবাহার ও অর্কিডের সমাহার মুগ্ধ করে দেওয়ার মতো। কেমন সুন্দর তার রূপ, সে তো শুরুতেই বলেছি। বলেছি মৌমাছি ও প্রজাপতির কথাও। উচ্চতা প্রায় ৪,২০০ ফুট। পাহাড়ের ধাপে ধাপে জঙ্গলের মাঝে শান্ত, নির্জনতায় গড়ে উঠেছে  গ্রামটি। টেরেসে বসে সেইসব দেখি। শুনলাম এখান থেকেই দারুণভাবে কাঞ্চনজঙ্ঘার ভিউ পাওয়া যায়। তবে, আমার ভাগ্যে তেনার দর্শন সচরাচর মেলে না। চিবো-তেও অধরাই থাকলেন তিনি।

Chibo Tourism, North Bengal Tourism এ অঞ্চল ফুল ও অর্কিডের স্বর্গরাজ্য

লাঞ্চে পাক্কা নেপালি রেসিপিওয়ালা চিকেন খেলাম। সঙ্গে ডাল, আলুভাজা আর আচার। পৌঁছনোর পর থেকেই ক্লান্তি ও আলস্য জড়িয়ে ধরেছে শরীর। আলস্য থেকেই একটু একটু দেরি। ফলে লেট লাঞ্চ। বেশ ঠান্ডা হাওয়া দিচ্ছে। সোয়েটার-চাদর জড়িয়ে টেরেসে বসি। ঘরে ফিরছে পাখির দল। চিবোয় নানা জাতের পাখির বসবাস। তারাই ঝাঁক বেঁধে ফিরছে ঘরে। অনেকটা খোলা আকাশে এখন তাদেরই রাজত্ব। মূল বাড়িটির চারপাশে ফুলের বাগান। তাতে যত্নের ছাপ স্পষ্ট। টেরেসের এক পাশে নার্সারি। নার্সারিতে ফুলের চারা, অর্কিড, পাতাবাহার গাছ। যাকে বলে সবুজের অপরূপ উৎসব। নার্সারির সামনে কিছুটা খোলা জায়গা। বসবার কাঠের বেঞ্চ ও চেয়ার, গোল টেবিল। খুব অনাড়ম্বর, কিন্তু প্রকৃতির মতোই সুন্দর ও অমলিন। একপাশে বনফায়ারের ব্যবস্থা। হোম স্টে-র দুটি তল মিলে যা ঘর, তাতে ১৫-২০ জনের দল অনায়াসে থাকতে পারে। আসেও । নেচার স্টাডি ও ট্রেকিং-এর সুযোগ থাকায় চিবো-তে প্রায়ই আসে তরুণ-তুর্কির দল।

Chibo Tourism এখানে প্রায়ই আসে তরুণ তুর্কির দল

এইসব দেখাশোনা ও জানাজানির মাঝেই হঠাৎ চোখ চলে যায় পশ্চিম আকাশে। সেখানে তখন অস্তরাগের সুর। আকাশ লালে লাল। একটু একটু করে অস্তমিত হলেন তিনি। চলে গেলেন পৃথিবীর অপর প্রান্তে। সন্ধ্যা নামলো চরাচর জুড়ে, সঙ্গে হিমের পরশ। চারপাশে কোনও শব্দ নেই পাখিদের কিচিরমিচির ছাড়া। মালিকের ছেলের বউ এসে কফি রেখে যায়। বয়স একেবারেই কম, মুখটা ভারী মিষ্টি। কিছুদিন পরেই মা হবে সে। শারীরিক অস্বাচ্ছন্দ্য হেলায় উড়িয়ে দিব্যি ছুটোছুটি করে কাজ করছে বাড়ির আর পাঁচজনের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে। বউটির সঙ্গে একটু গল্প করি। তারপর ঘরে, রাত নেমেছে চিবো-য়। ডিনারে রুটি-সবজি। সেটা ঘরেই দিয়ে গেলেন ওঁরা। কারণ ততক্ষণে খোলা টেরেসের এপ্রান্ত ওপ্রান্ত জুড়ে উত্তুরে হাওয়ার পাগলামি শুরু হয়ে গেছে। খেয়েদেয়ে কম্বল মুড়ি দিতেই ঘুম নামে ক্লান্ত চোখে।

ভ্রমণের নানা স্বাদের অভিজ্ঞতা আর খবর পেতে পড়ুন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার ভ্রমণ বিভাগ

পরদিন এক অনির্বচনীয় সকাল, যার কথা লেখার শুরুতেই বলেছি। ব্রেকফাস্ট করলাম টেরেসে বসেই। আমার অনুরোধে স্যান্ডউইচ বানিয়ে দিয়েছিলেন ওঁরা। সঙ্গে দার্জিলিং টি। আহ, কী যে তার সুবাস! নিজেকে মহারানি মনে হলো। আজ সকালেই আলাপ হয়েছে বাড়ির সবচেয়ে ছোট মেয়েটির সঙ্গে। সকাল সাতটা বাজে তখন। স্নান করে, ইউনিফর্ম পরে স্কুলে যাওয়ার জন্য রেডি। স্কুল নটায়। দু'ঘন্টার পথ পার হতে হবে তাকে, তাই এখনই বেরিয়ে পড়া। প্রতিদিন এটাই রুটিন ক্লাস সিক্সে পড়া মেয়েটির। মনে পড়ছে সেদিন বিকেলের কথা। স্কুল থেকে বাড়ি ফিরে, ফ্রেশ হয়ে, কোনও রকমে দ্রুত খাবার খেয়েই সে বৌদির সাহায্যের জন্য রান্নাঘরে কাজে লেগে পড়ে। এক ছুটে কফি আর পেঁয়াজের পকোড়া বানিয়ে আনে আমার জন্য। আবার সন্ধ্যায় বইপত্র গুছিয়ে পড়তেও বসে যায়। অবাক ও মুগ্ধ হলাম। এর মতোই এখানকার সব ছেলেমেয়ের জীবন। শৈশব থেকেই কঠিন যাপনে অভ্যস্ত হয়ে যায় ওরা।

Chibo Tourism, Homestay রান্নার স্বাদ এখানে মনে রাখার মত

আজ দুপুরে অসাধারণ এক ডিমের ঝোল খেয়েছি। একেবারে হালকা, কিন্তু কী সুস্বাদু। সঙ্গে ডাল, পাপড়, স্যালাড, আচার, রাই শাক। এঁদের আচারের ভাণ্ডারটি বেশ জম্পেশ। সবটাই ঘরে তৈরি। উপকরণও নিজেদের ক্ষেত ও বাগানের। বয়াম ভর্তি সেইসব আচার একটু একটু করে এই দু'দিন চেখে দেখা হলো। কী যে তার স্বাদ! প্রশংসা করতে বৌমা তার শাশুড়ির কৃতিত্ব জানিয়ে পঞ্চমুখ হলো। ইনি একটু লাজুক গোছের।  হিন্দি বলতে পারেন না। তবে বুঝতে পারেন। বেশ লজ্জা লজ্জা মুখ করে নিজের প্রশংসা শুনলেন। শুনলাম ওঁরা শাশুড়ি-বউ মিলেই রান্না থেকে এতবড় বাড়ি পরিষ্কার রাখা, সবটাই করেন।

চিবো-র মানুষরা পাহাড়ের আর সব গ্রামের মতোই পরিশ্রমী। সারাদিন হাসিমুখে ঘরেবাইরে কাজ করেন। মূলত কৃষিই জীবিকা। চাষবাস জৈবিক পদ্ধতিতে। নিজেদের প্রয়োজনেরটুকু রেখে অনেকেই বাজারে বিক্রি করেন জমির ফসল, শাকসবজি। কয়েকটি হোম স্টে হয়েছে এখন, জীবিকার এটাও এক উপায়। পথঘাটের বিকাশ তেমন হয়নি। বর্ষায় খুবই কষ্ট। এটা গ্রামের উন্নতির সবচেয়ে বড় অন্তরায়। কালিম্পং কাছে, এটাই কিছুটা সুবিধা। পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার জন্য কষ্টেসৃষ্টে সেখানে যাওয়ার চেষ্টা করে এখানকার ছেলেমেয়েরা। স্বাস্থ্য পরিষেবার অবস্থাও তথৈবচ। চিকিৎসায় জড়িবুটি ভরসা। এছাড়া জরুরি দরকারে কালিম্পং যান চিবো-র মানুষ। তাও সবার পক্ষে সম্ভব হয় না, বলাই বাহুল্য।

আজ রাত কাটলেই ফেরার পালা। ডিনারে চিকেন চাওমিন খেলাম। ওঁদেরই পরামর্শ, মুখবদলের জন্য। আমারও মনে হলো, মন্দ কী! সামান্য গ্রেভিওয়ালা সেই চাওমিনের স্বাদ এক না ভোলা খাদ্য অভিজ্ঞতা। আজ জাঁকিয়ে ঠান্ডা পড়েছে। পুরো দিনটা ছিল আলোকিত। কেটেছে সূর্যের ঝকঝকে আভায়। এখন আকাশ তারা ঝলমলে। এক কোণে টুকরো চাঁদ। অনেক দূরে দূরে, পাহাড়ের কোণে কোণে এক একটি ঘরের মিটি মিটি আলো তাল মিলিয়েছে উড়ন্ত জোনাকিদের সঙ্গে। রাতে কিছুক্ষণ টেরেসে বসলাম। কালই তো চলে যেতে হবে। এই যাওয়াটা বড় বিষণ্ণ করে দেয় প্রতিবার। পাহাড় যে বড্ড মায়াময়!

Chibo Tourism, North Bengal Tourism মায়াময় এ জায়গা ছেড়ে যাওয়ার সময়ে বিষণ্ণতা জাগে

সকালে উঠেই তাড়া। দ্রুত স্নান সেরে প্যাকিং। রেডি হয়ে একবার ফুল আর প্রজাপতিদের সঙ্গে দেখা করি। পাতারা, মৌমাছির দল হাতছানি দিয়ে ডাকে। সূর্য উঠেছে অনেকক্ষণ। নীল আকাশের নিচে ঝলমল করছে পুরো গ্রাম। জীবন শুরু হয়ে গেছে। ব্রেকফাস্ট টেবিলে আজ আলুপরোটা, সঙ্গে আচার তো আছেই। চেটেপুটে খেয়ে কফির কাপ নিয়ে টেরেসে বসি শেষবারের মতো। গাড়ি এসে গেছে নিচে। ড্রাইভার ওপরে উঠে আসে। পরিবারের সবাই এসে দেখা করেন। প্রতিশ্রুতি দিতে হয়, আবার আসব। এই আন্তরিকতা ভোলার নয়। আবার সেই খাড়া সিঁড়ি ধরে নিচে নামা। তবে নামাটা তত কষ্টের হয় না। গাড়ি চলতে শুরু করে। দু'পাশে গাছপালা সরে সরে যায়। বাচ্চারা স্কুলের পথে। হাত নাড়লে হাসিমুখে প্রত্যুত্তর দেয় ওরা। পিঠে বোঝা নিয়ে দিনমজুর। কী কষ্টের চলা! তবু হাসিমুখে অভিবাদন জানায়। অনেকটা ভালো লাগা এভাবেই ভরে দেয় ঝুলি। প্রত্যেকবার।

travelogue travel destination
Advertisment