মসজিদে ভাঙচুর, ধর্মীয় হিংসার ঘটনায় ত্রিপুরা হাইকোর্টে বড় ধাক্কা বিপ্লব দেব সরকারের। সাম্প্রদায়িক অশান্তির জেরে স্বতঃপ্রণোদিত মামলা করল হাইকোর্ট। ১০ নভেম্বরের মধ্যে রাজ্য সরকারের হলফনামা তলব করেছে আদালত। শান্তি-শৃঙ্খলা বজার রাখার জন্য রাজ্য সরকারের আরও বেশি পদক্ষেপ করা উচিত ছিল বলে পর্যবেক্ষণ হাইকোর্টের।
প্রসঙ্গত, তিনদিন আগে বিজেপি শাসিত উত্তর-পূর্বের রাজ্যে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিল ঘিরে উত্তেজনা ছড়ায়। উত্তর ত্রিপুরার পানিসাগর মহকুমায় একটি মসজিদ এবং কয়েকটি দোকানে ভাঙচুর চালানো হয়। দুটি দোকানে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। সবমিলিয়ে পরিস্থিতি অগ্নিগর্ভ হয় মঙ্গলবার সন্ধেয়।
পানিসাগরের এসডিপিও সৌভিক দে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানান, “পানিসাগরে প্রায় সাড়ে তিন হাজার জমায়েত হয় বিশ্ব হিন্দু পরিষদের মিছিলে। তাঁদের মধ্যে বেশ কয়েকজন চামটিল্লা এলাকায় একটি মসজিদে ভাঙচুর করে। পরে তিনটি বাড়ি এবং তিনটি দোকানে তাণ্ডব চালায়। রোয়া বাজার এলাকায় দুটি দোকানে আগুন ধরিয়ে দেয়।”
এই ঘটনায় হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে হস্তক্ষেপ করে এবং রাজ্য সরকারকে ১০ নভেম্বরের মধ্যে হলফনামা জমা দিতে বলেছে। রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল সিদ্ধার্থশঙ্কর দে আদালতে জানান, পুলিশ-প্রশাসন প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করেছে। বিশ্ব হিন্দু পরিষদ গত ২৬ অক্টোবর বাংলাদেশে দুর্গাপুজো ঘিরে হিংসা এবং হিন্দুদের উপর হামলার প্রতিবাদে শান্তিপূর্ণ মিছিল করে।
আরও পড়ুন ভিএইচপি-র মিছিল ঘিরে উত্তেজনা, ত্রিপুরায় মসজিদে ভাঙচুর, দোকানে আগুন
তবে রাজ্য সরকার শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখতে যা যা পদক্ষেপ করেছে তাতে সন্তুষ্ট নয় আদালত। জানিয়ে দিয়েছে, আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল প্রশাসনের। পুলিশ জানিয়েছে, মুসলিমদের ঘর-দোকান ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগের অভিযোগে একটি মামলা রুজু হয়েছে। এই ঘটনার পর এলাকায় কড়া নিরাপত্তা বলয়ে মুড়ে দেওয়া হয়। স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে পুলিশ প্রহরা বাড়ানো হয়। আইনশৃঙ্খলার অবনতি যাতে না হয় তাই জন্য পুলিশি টহলদারি চলছে এলাকায়।
আদালত জানিয়েছে, প্রয়োজনে জেলাস্তরে শুধু নয়, মহকুমা, পঞ্চায়েত স্তরেও শান্তিরক্ষা কমিটি গঠন করে সমস্ত রাজনৈতিক দলগুলিকে নিয়ে এলাকায় শান্তি বজায় রাখতে হবে। হাইকোর্টের সাফ নির্দেশ, হলফনামায় পুলিশি তদন্তের রিপোর্ট, কাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, কাকে কাকে ধরা হয়েছে জানাতে হবে। বিপ্লব দেব সরকারকে হাইকোর্টের নির্দেশ, দ্রুত হিংসা উপদ্রুত এলাকায় আক্রান্তদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ এবং তাঁদের স্বাভাবিক জীবনে ফেরার জন্য প্রয়োজনীয় বন্দোবস্ত করার জন্য।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন