লকডাউন চলাকালীন সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং বা সামাজিক দূরত্ব-বিধি কার্যকর করতে তথা জনবহুল স্থানে পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে এবার এগিয়ে এলেন ত্রিপুরার বৃহত্তম বাজার, বা মহারাজগঞ্জ বাজারের ব্যবসায়ীরা। বুধবার বাজার জুড়ে তাঁরা বোর্ড টাঙিয়ে দেন, 'নো মাস্ক, নো ভেজিটেবলস', অর্থাৎ 'মুখোশ না থাকলে সবজিও নেই'।
তাঁরা জানাচ্ছেন, মুখোশ না পরলে সবজি না বেচার এই সিদ্ধান্তের মূলে রয়েছেন বাজারের ক্রেতারা, যাঁরা কোনোরকম সাবধানতা অবলম্বন না করেই বাজারে ভিড় করছেন, সরকারের বারংবার অনুরোধ সত্ত্বেও।
সংবাদমাধ্যমকে মহারাজগঞ্জ বাজার সবজি ব্যবসায়ী সমিতির প্রধান নকুল দাস জানান, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে যাতে ক্রেতাদের যথাযথ নিরাপত্তা অবলম্বন করতে বাধ্য করা যায়, যেহেতু তাঁরা প্রায়শই সরকারি নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা করছেন না।
নকুলবাবু বলেন, "আমরা ঠিক করেছি, কেউ বাজারে মুখোশ না পরে এলে আমরা তাঁকে সবজি বেচব না। সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস মহামারী। নিজেদের নিরাপদ রাখার একমাত্র উপায় হলো সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং। সুতরাং আমরা চেষ্টা করছি যাতে আমাদের ক্রেতারা এই বিধি মেনে চলেন।"
আরও পড়ুন: বয়স ৫ ও ১১, মহত্ত্বের নজির গড়ল ত্রিপুরার দুই খুদে
বাজারের আরেক সবজি ব্যবসায়ী বিশ্বজিৎ সাহা বলেন যে তিনি ইতিমধ্যেই মুখোশ ছাড়া বাজারে আসার কারণে কিছু ক্রেতাকে ফিরিয়ে দিয়েছেন, তবে তাঁর এও বক্তব্য, সমস্ত ব্যবসায়ী মিলে ঐক্যবদ্ধভাবে এই সিদ্ধান্ত সমর্থন না করলে এটি বেশিদিন বহাল রাখা যাবে না। সুতরাং সমিতির পক্ষ থেকে সমস্ত সদস্যকে বলা হয়েছে তাঁদের নিজ নিজ দোকানে প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেতে।
আগরতলার অন্যান্য বাজার, যেমন বটতলা, এই সিদ্ধান্ত সমর্থন করার কথা ভাবছে। ব্যবসায়ীরা ক্রেতাদের এও বোঝাচ্ছেন যে সোশ্যাল ডিস্ট্যান্সিং বা সামাজিক দূরত্ব কেন বজায় রাখা উচিত, এবং একে অপরের চেয়ে অন্তত এক মিটার দূরে দূরে দাঁড়াতে বলছেন।
উল্লেখ্য, রাজ্যের সমস্ত বাজারেই মোতায়েন করা হয়েছে পুলিশ এবং ত্রিপুরা স্টেট রাইফেলস-এর কর্মী, যাতে অতিরিক্ত ভিড় না জমে। এই বাহিনীদের কাজ হলো ক্রেতাদের লাইনে দাঁড় করানো, এবং নিয়মিত সময়ের ব্যবধানে বাজারে ঢুকতে দেওয়া। তবে অনেক ক্রেতাই একবার বাজারে ঢুকলে আরে বেরোতে চাইছেন না, বরং ইতিউতি ঘুরে ভিড় বাড়াচ্ছেন, এবং সামাজিক দূরত্ব-বিধি না মেনেই গা ঘেঁষাঘেঁষি করে দাঁড়াচ্ছেন।
কিছুটা এই ভিড়ের সমস্যার সমাধান করতেই মার্চ মাসে ত্রিপুরার একাধিক বাজারকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় বড় বড় ময়দান এবং খেলার মাঠে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন