Advertisment

'ওরাও তো আমারই মত', ক্ষুদ্র সঞ্চয়ে ক্ষুধার্ত মুখে ভাত তুলে দিলেন সবজি বিক্রেতা

অবাক হলেন? সারা বিশ্ব যখন অর্থনৈতিক মহাসংকটে, প্রতি মুহুর্তে যখন মাসিক আয়ের চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন সকলেই তখন একজন সবজি বিক্রেতা কীভাবে এতবড় দায়ভার নিজের কাঁধে তুলে নিলেন?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

গৌতম দাস, পেশায় সবজি বিক্রেতা।

"সবার মতো আমিও লকডাউন নিয়ে প্রথম দিকে চিন্তিত ছিলাম। আমি দেখছিলাম সবাই কীভাবে একমুঠো খাবারের জন্য হাত পাতছিল। তাই ঠিক করলাম আমিও দিনমজুর এবং শ্রমিকদের পাশে দাঁড়াব।" যিনি একনিশ্বাসে এতগুলো কথা বললেন তিনি গৌতম দাস, পেশায় সবজি বিক্রেতা।

Advertisment

অবাক হলেন? সারা বিশ্ব যখন অর্থনৈতিক মহাসংকটে, প্রতি মুহুর্তে যখন মাসিক আয়ের চিন্তায় দিন কাটাচ্ছেন সকলেই তখন একজন সবজি বিক্রেতা কীভাবে এতবড় দায়ভার নিজের কাঁধে তুলে নিলেন? মানবিকতার কাছে বোধহয় এ ভার তুচ্ছ। ৫১ বছরের গৌতম দাস নিজের উপার্জিত অর্থ তাই দান করলেন সেই সব মানুষদের যারা একবেলা একমুঠো খাওয়ার পাওয়ার আশায় দিন গুজরাচ্ছেন।

ত্রিপুরার সাধুটিলা গ্রামে একটি ছোট্ট মাটির বাড়িতে থাকেন গৌতমবাবু। একাই থাকেন। স্ত্রী গত হয়েছেন কয়েক বছর আগে। সন্তানরা সকলেই আলাদা থাকেন। দৈনিক আয় বলতে ২০০ টাকা। ব্যয়ের পর সেই অর্থ জমিয়েই প্রায় ২০ হাজার টাকা সঞ্চয় করেছিলেন গৌতমবাবু। লকডাউনের পর যখন দেখেন গ্রামে হাহাকার অবস্থা সেই সময় ৮০০০ টাকার চাল ও শস্য কিনে তা প্যাকেট করে সবজির ভ্যানে করেই বিলি করেন তিনি।

দরিদ্র সেবার ছবিতে যখন ভরে উঠেছে সোশাল মিডিয়া, সেই জমানায় কোনও সেলফি নেই, কোনও পোস্ট নেই, যা আছে তা কেবল সাহায্যের হাত। গৌতমবাবু বলেন, "যারা আমারই মত তাঁদেরকে আমি চাল ও ডাল দিয়ে কিছুটা সাহায্য করেছি। আমি নিজে একজন দিনমজুর হয়ে শুধুমাত্র ওদের পাশে দাঁড়াতে চাইছি নিজের ক্ষুদ্র সঞ্চয় নিয়ে।"

এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে ১৬০টি পরিবারের মুখে অন্ন তুলে দিয়েছেন এই সবজি বিক্রেতা। লকডাউন বৃদ্ধির পর আরও পরিবারের পাশে দাঁড়াতে চান জানালেন গৌতমবাবু নিজেই। তিনি বলেন, "লকডাউনে খাবার পাওয়া খুবই কষ্টসাধ্য ব্যাপার। আমার আর্থিক সঙ্গতিও খুবই কম। আমিও তো গরীব মানুষই। তবে আমি চেষ্টা করব মানুষের পাশে দাঁড়াতে।" প্রসঙ্গত লকডাউনে ত্রিপুররা মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব দুস্থদের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়ে  শিল্পপতি এবং ব্যবসায়ীকদের এগিয়ে আসতে বলেন। গৌতমবাবু কিন্তু তাঁদের মধ্যে পড়েন না। কিন্তু যে হৃদয় নিয়ে তিনি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তার অর্থ বোধহয় অর্থ দিয়ে মাপা যায় না।

Read the full story in English

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

tripura coronavirus
Advertisment