ত্রিপুরা-বাংলাদেশ সীমান্তে আরও তিনটি হাট বসবে

গাঁজা ও ফেনসিডিলের মত নিষিদ্ধ ওষুধ পাচারের পরিমাণ গত বছরে অনেকটাই কমেছে, অন্যদিকে বেড়েছে ইয়াবা ট্যাবলেট পাচার।

গাঁজা ও ফেনসিডিলের মত নিষিদ্ধ ওষুধ পাচারের পরিমাণ গত বছরে অনেকটাই কমেছে, অন্যদিকে বেড়েছে ইয়াবা ট্যাবলেট পাচার।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Tripura Border

মোট ৬৭ কিলোমিটার সীমান্তে বেড়া নেই

ত্রিপুরা-বাংলা সীমান্তে অতিরিক্ত তিনটি বর্ডার হাটের জন্য জায়গা নির্দিষ্ট করা হয়েছে। বুধবার দু দেশের জেলাশাসক-জেলা কালেক্টরেট পর্যায়ের বৈঠকে এই জায়গাগুলি বাছা হয়েছে। এখন সিপাহিজলা জেলার কমলাসাগরে ও দক্ষিণ জেলার শ্রীনগরে দুটি বর্ডার হাট রয়েছে। এই দুটি চালু বর্ডার হাটের সঙ্গেই আরও তিনটি বর্ডার হাট শুরু হবে।

Advertisment

বর্ডার হাট দু দেশের মধ্যে ব্যবসায়ের ডিউটি ফ্রি এলাকা, যেখানে স্থানীয় উৎপাদকরা হাটের ৫ কিলোমিটার ব্যাসের মধ্যের বাসিন্দাদের কাছে নিজেদের উৎপাদিত পণ্য বিক্রি করে থাকেন। সীমান্তের কাছে দু দেশের দূরবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের সুবিধার্থে একটি ঐতিহ্যপূর্ণ বাজার তৈরির জন্য এই বর্ডার হাটের পরিকল্পনা করা হয়েছিল।

বুধবারের বৈঠকে ভারতের তরফ থেকে হাজির ছিলেন পশ্চিম ত্রিপুরা জেলাশাসক ডক্টর সন্দীপ মহাতমে এবং বাংলাদেশের পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ব্রাহ্মণবেড়িয়া জেলার ডেপুটি কমিশনার হায়াত-উদ-দৌল্লা। দু দেশের সীমান্ত রক্ষী বাহিনী বিএসএফ ও বিজিবি-র প্রতিনিধিরাও বৈঠকে হাজির ছিলেন।

Advertisment

পশ্চিম ত্রিপুার জেলাশাসক সন্দীপ মহাতমে বলেন, তিনটি বর্ডার হাট তৈরির সিদ্ধান্ত দু দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে আগেই স্থির হয়েছে। আমরা এর জন্য তিনটি জায়গা নির্দিষ্ট করেছি, খোয়াই জেলার পাহাড়মুরা, পশ্চিম জেলার বামুটিয়া এবং সিপাহিজলা জেলার জগরামপুর। উচ্চতর কর্তৃপক্ষের কাছে আমরা রিপোর্ট দেব চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য।

বৈঠকে উপস্থিত দু দেশের প্রতিনিধিরাই বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক সৌহার্দ্যমূলক এবং বর্ডার হাট তাকে আরও দৃঢ় করবে।

গত বছর অক্টোবর মাসে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব ঘোষণা করেন, উত্তর ও ধলাই জেলার ধর্মনগর ও কমলপুরে আরও দুটি বর্ডার হাট খোলার সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়েছে।

সীমান্তে মাদক পাচার সম্পর্কে প্রশ্নের উত্তরে আধিকারিকরা বলেন, গাঁজা ও ফেনসিডিলের মত নিষিদ্ধ ওষুধ পাচারের পরিমাণ গত বছরে অনেকটাই কমেছে, অন্যদিকে বেড়েছে ইয়াবা ট্যাবলেট পাচার। প্রচুর পরিমাণ ইয়াবা বা মেথ আটক করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আধিকারিকরা।

দু দেশই সীমান্তে ড্রাগ চোরাকারবার বন্ধ করতে একযোগে কাজ করছে বলে জানানো হয়েছে।

এদিনের বৈঠকে আগরতলা-আখাউরা রেল সংযোগ, ইন্দো-বাংলা সীমান্তের কাঁটাতার হীন অঞ্চলে কাঁটা তার লাগানো ও ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট নিয়েও আলোচনা হয়।

খুব শীঘ্রই ত্রিপুরার আগরতলা থেকে বাংলাদেশের আখাউরা পর্যন্ত আন্তর্জাতিক পর্যায়ের রেল যোগাযোগ সুরু হবে। ২০১০ সালে এই প্রকল্পের কথা ভাবা হয়েছিল, যা এ বছরের শুরুতে শেষ হবার কথা ছিল। দু দেশই এই মেয়াদ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃদ্ধি করেছে।

পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় আগরতলা থেকে আখাউরা পর্যন্ত ১৫.০৫৪ কিলোমিটার রেল পথ বানানোর খরচ ধরা হয়েছে ৯৬৮ কোটি টাকা। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের নিশ্চিন্তপুর হয় এই রেলপথ ত্রিপুরার রাজধানী আগরতলার সঙ্গে বাংলাদেশের আখাউরার সংযোগ স্থাপন করবে।

ত্রিপুরায় বাংলাদেশ সীমান্তের দৈর্ঘ্য ৮৫৬ কিলোমিটার। এর মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ৬৭ কিলোমিটার এলাকায় বেড়া নেই, যার ফলে অনুপ্রবেশ ও বেআইনি অভিবাসনের আশঙ্কা এসব জায়গায় অত্যধিক।