৮৭ দিন পর জামিন পেলেন ত্রিপুরার প্রাক্তন পুরমন্ত্রী বাদল চৌধুরী। শনিবার ৬৩৮ কোটি টাকা দুর্নীতি মামলায় তাঁকে জামিন দিয়েছে হাইকোর্ট।
বাদল চৌধুরী গত ২১ অক্টোবর গ্রেফতার হন। ২০০৮-০৯ সালে সিপিএম আমলে পূর্ত দফতরের কাজ নিয়ে তাঁর বিরুদ্ধে তদন্ত কমিশন বসানো হয়েছিল। ৬৩৮.৪০ কোটি টাকা দুর্নীতি মামলায় বাদল চৌধুরী ছাড়াও প্রাক্তন চিফ ইঞ্জিনিয়র সুনীল ভৌমিক ও প্রাক্তন মুখ্য সচিব যশপাল সিংয়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়। অন্য দুজন গ্রেফতার হলেও যশপাল সিং এখনও পলাতক।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে সরকারি আইনজীবী রতন দত্ত বলেন বাদল চৌধুরী ও সুনীল ভৌমিকের বিরুদ্ধে তদন্ত শেষ হয়েছে, ক্ন্তু পুলিশ এখনও চার্জশিট দাখিল করেনি।
আইন অনুযায়ী গ্রেফতারের ৯০ দিনের মধ্যে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল না করতে পারলে ধৃত ব্যক্তি জামিন পেয়ে যান। যেহেতু প্রাক্তন চিফ ইঞ্জিনিয়র সুনীল ভৌমিক গ্রেফতারের ৮৭ দিনের মাথায় জামিন পেয়েছেন, সে কারণে বিচারপতি অরিন্দম লোধের আদালত প্রাক্তন মন্ত্রীকেও একই সুযোগ দিয়ে জামিনের নির্দেশ দেন।
সরকারি আইনজীবী বলেন, "আমরা এ ব্যাপারে খুবই আপত্তি জানিয়েছিলাম, কারণ ৯০ দিন পেরোতে এখনও তিন দিন রয়েছে এবং সে সময়ের মধ্যে তদন্তকারী অফিসার চার্জশিট দিয়ে দিতে পারেন। আদালত অভিযুক্তের জামিন মঞ্জুর করেছে। তবে ওঁর উপর কঠোর শর্ত আরোপিত হয়েছে। যদি উনি তদন্তে প্রভাব খাটানোর প্রমাণ নষ্ট করার চেষ্টা করেন তাহলে আমরা ওঁর জামিন নাকচ করার আবেদন করতে পারব।"
আইনজীবীর দাবি, প্রাক্তন মন্ত্রী বাদল চৌধুরী ও সুনীল ভৌমিকের বিরুদ্ধে তদন্ত অনেকটাই এগিয়েছে। কিন্তু তিনি চার্জশিট কেন দায়ের করা যায়নি তা ব্যাখ্যা করতে পারেননি। এ বিষয়টি তদন্তকারী অফিসারের আওতাধীন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিরোধী নেতা মানিক সরকার এর আগে অভিযোগ করেছিলেন বাদল সরকারের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। বিরোধীরা বিধানসভা চলাকালীন ১৭ জানুয়ারি ওয়াক আউটও করেন। তাঁদের অভিযোগ বিজেপি-আইপিএফটি জোট এ ব্যাপারে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে কাজ করছে।
গত বছর ১৩ অক্টোবর তাঁর বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের হবার পর ৬ দিন নিখোঁজ ছিলেন বাদল চৌধুরী। এর পর তাঁকে আগরতলার এক বেসরকারি হাসপাতালে আইসিউ-তে চিকিৎসাধীন অবস্থায় পাওয়া যায়।
পরিবারের অভিযোগ, তাঁকে ত্রিপুরা পুলিশের আধিকারিকরা টানতে টানতে আইসিইউ থেকে বের করে নিয়ে গিয়ে পশ্চিম আগরতলা থানায় লকআপ বন্দি করে। প্রাক্তন মন্ত্রী চিৎকার করে সাংবাদিকদের জানান তাঁকে পুলিশ মারধর ও গালিগালাজ করেছে।
লক আপে বাদল চৌধুরী গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং তাঁকে সরকার পরিচালিত গোবিন্দ বল্লভ পন্ত হাসপাতালের আইসিইউ-তে ভর্তি করা হয়। অভিযোগ ছিল হাসপাতালে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে থাকাকালীন পুলিশি বাড়াবাড়ি ঘটেছে।
এর আগে বাদল চৌধুরীর দুবার বাইপাস সার্জারি হয়েছে এবং অক্টোবরে পুলিশ হেফাজতে হাসপাতালে থাকাকালীন তাঁর ব্রেন স্ট্রোকও হয়েছে।