ধারাল অস্ত্র দিয়ে নিজের দুই মেয়ে-সহ পাঁচজনকে কুপিয়ে খুন করল এক উন্মত্ত ব্যক্তি। শুক্রবার ভোররাতে এই ভয়ঙ্কর কাণ্ড ঘটেছে ত্রিপুরার খোয়াই জেলায়। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে ত্রিপুরা পুলিশের এক শীর্ষ আধিকারিক জানিয়েছেন, প্রদীপ দেবরায় নামে বছর চল্লিশের ওই যুবক খোয়াইয়ের রামচন্দ্রঘাট এলাকার বাসিন্দা। নিজের দুই শিশুকন্যাকে প্রথমে লোহার রড দিয়ে মেরে খুন করে।
১ বছরের কন্যা অদিতি এবং ৭ বছরের কন্যা মন্দিরাকে খুন করার পর নিজের স্ত্রীকে মারার চেষ্টা করে প্রদীপ। কিন্তু তার বউ কোনওরকমে পালিয়ে যায়। এরপর তার ভাই অমলেশ প্রদীপকে ঘরের দরজা খুলতে বললে তাঁর উপর আক্রমণ করে ওই যুবক। এবং তাঁকেও খুন করে। ঘটনাচক্রে সেই সময় বাড়ির পাশ দিয়ে অটোরিকশা চালিয়ে যাচ্ছিলেন কৃষ্ণ দাস নামে এক যুবক। তাঁকেও আক্রমণ করে প্রদীপ। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় কৃষ্ণের। তাঁর সঙ্গে থাকা ছেলে কর্মবীর পালিয়ে যায়।
হত্যাকাণ্ডের এখানেই শেষ নয়। ঘটনার খবর পেয়ে সেখানে ছুটে যান সত্যজিৎ মল্লিক নামে স্থানীয় থানার এক পুলিশ অফিসার। সেখানে গিয়ে তিনি দেখেন, রাস্তায় রড হাতে ঘুরে বেড়াচ্ছে খুনি যুবক। পুলিশ অফিসার তাঁকে আটকানোর চেষ্টা করলে সত্যজিতের মাথার লোহার রড দিয়ে মেরে খুলি ফাটিয়ে দেয় প্রদীপ।
এরপর আরও পুলিশ গিয়ে উন্মত্ত প্রদীপকে বাগে আনতে সক্ষম হয়। খোয়াই থানায় প্রদীপের বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করে পুলিশ। কিন্তু কেন এতজনকে খুন করল প্রদীপ তা নিয়ে ধন্দে পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, খুনের কারণ এখনও অজানা। প্রদীপের মানসিক সমস্যার কোনও পুরনো রেকর্ড নেই। গোটা ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ।
আরও পড়ুন বন্দুক হাতে গুলি তৃণমূল নেতার, ভিডিও ভাইরাল হতেই তৎপর পুলিশ, গ্রেফতার অভিযুক্ত
এদিকে, রক্তাক্ত অবস্থায় পুলিশ অফিসার সত্যজিৎ, প্রদীপের স্ত্রী এবং অটোচালকের ছেলে কর্মবীরকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে হাসপাতালে মারা যান পুলিশ অফিসার। বাকিরা আপাতত স্থিতিশীল আছেন। এই ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব টুইটারে দুঃখপ্রকাশ করেছেন এবং পুলিশ অফিসার সত্যজিৎ মল্লিক-সহ বাকি নিহতদের পরিজনদের প্রতি সমবেদনা জানান।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন