নোবেলজয়ী বিশ্বকবির কবিতা কেউ বলতেই পারেন, তাতে কোন অসুবিধে নেই। কিন্তু ভিডিওটা দেখলেই বুঝবেন, মার্টিন শিন কবিতাটা বলছেন এমন ভঙ্গিতে, যেন লাইনগুলো তাঁর নিজের।
কথায় বলে, চুরিবিদ্যা মহাবিদ্যা, যদি না পড়ো ধরা।ওই 'যদি'-তেই যত মুশকিল। না বলে, না স্বীকার করে অন্যের জিনিস বেমালুম ঝেড়ে দিলে ক্ষতি নেই, 'যদি না পড়ো ধরা'। ধরা পড়লেই সর্বনাশের মাথায় বাড়ি!
ঠিক যেমনটা হল মার্কিন অভিনেতা মার্টিন শিনের ক্ষেত্রে। বছর দুয়েক আগের একটি ইউটিউব ভিডিওতে "vote your future” হ্যাশট্যাগ দিয়ে দিব্যি আবৃত্তি করলেন রবীন্দ্রনাথের 'প্রার্থনা' কবিতার ইংরেজি অনুবাদ, যে ভিডিওটি হঠাৎ আবিষ্কৃত হওয়ার পর সরব হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়া। সেই কবিতা, যা জগদ্বিখ্যাত, "চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির.."। ইংরেজি অনুবাদে "Where the mind is without fear..."। সে নোবেলজয়ী বিশ্বকবির কবিতা কেউ বলতেই পারেন, তাতে কোন অসুবিধে নেই। কিন্তু ভিডিওটা দেখলেই বুঝবেন, মার্টিন শিন কবিতাটা বলছেন এমন ভঙ্গিতে, যেন লাইনগুলো তাঁর নিজের। যেন তাঁর নিজেরই রচনা। কবিতাটা যে রবীন্দ্রনাথের, তা স্বীকার করলেন না একবারও। লজ্জাশরম শিকেয় তুলে রেখে।
কে এই মার্টিন শিন? আটাত্তর বয়সী এই মার্কিন অভিনেতার আসল নাম রামোন জেরার্ড আন্তোনিও এস্তেভেজ। অভিনয় জগতে পরিচিত মার্টিন শিন হিসাবে। উল্লেখযোগ্য ছবির মধ্যে রয়েছে 'The Subject was Roses’ (১৯৬৮), 'Badlands' (১৯৭৩)। দুনিয়াজোড়া খ্যাতি পান 'Apocalypse Now’ ছবির জন্য।
তা এই শিন সাহেব কথা নেই বার্তা নেই, রবীন্দ্রনাথের কবিতা নিজের বক্তব্য হিসাবে চালিয়ে দিয়ে কিঞ্চিৎ ঝামেলায় পড়েছেন। ভিডিওটা ভাইরাল হয়ে যাওয়ায় সমালোচনার তোপের মুখে পড়েছেন। অবশ্য চুরির সময় সামান্য অমনোযোগী ছিলেন, প্রথম লাইনে "where the mind..."-এর জায়গায় "where the heart..” বলে ফেলেছেন। বাকিটা হুবহু এক।
চুরির সময় চিত্ত ভয়শূন্য ছিল শিনের। কিন্তু ধরা পড়ে গিয়েই গোল বাধল। 'শির' আর 'উচ্চ' রইল কই?