১৯৬৭ সালে এই দোকানটি চালু করেন অরূপবাবুর বাবা। আজ ষাটোর্ধ অরূপবাবুর পুত্র এই ব্যবসায় স্বাভাবিকভাবেই কোনোরকম ভবিষ্যৎ দেখতে না পেয়ে চাকরির পথ বেছে নিয়েছেন।
কুমোরটুলি বলতে যাঁদের মনে প্রথমেই ঠাকুরের মূর্তি ভেসে ওঠে, মূলত তাঁদের জন্যই এই লেখা। অর্থাৎ কিনা সকলের জন্যেই। সরু এক ফালি গলির ভেতরে আরও সরু এক চিলতে দোকানঘরে বসে কাজ করছেন অরূপরঞ্জন কর্মকার। তাঁর চারপাশে সাজানো আছে - না, মূর্তি নয়, থরে থরে রেডিও। সেই আদ্যিকালের মডেল থেকে শুরু করে মোটামুটি হাল আমলের যন্ত্র পর্যন্ত।
Advertisment
১৯৬৭ সালে এই দোকানটি চালু করেন অরূপবাবুর বাবা। আজ ষাটোর্ধ অরূপবাবুর পুত্র এই ব্যবসায় স্বাভাবিকভাবেই কোনোরকম ভবিষ্যৎ দেখতে না পেয়ে চাকরির পথ বেছে নিয়েছেন। অরূপবাবু নিজেও জানেন, রেডিওর স্বর্ণযুগ আর ফিরবে না, তবু এই কাজ ছাড়া আর কিছু করার কথা ভাবতে পারেন না তিনি।
তাঁর দোকানের সবচেয়ে পুরনো রেডিওটি সেই ১৯৪৪ সালের। কেউ সারাতে দিয়ে গিয়েছিলেন কোনকালে, আর ফেরত নেন নি। পুরনো রেডিও ব্র্যান্ডের নাম এখনও গড়গড় করে বলে যান অরূপবাবু। বুশ, মারফি, ফিলিপস, টেলিফাঙ্কেন...যেগুলি একসময় লোকের মুখে মুখে ফিরত।
আর ক'দিন পরেই মহালয়া, সেকথা বলতে গিয়ে অরূপবাবুর মনে পড়ে, একসময় রাত তিনটেতেও দোকানের বাইরে লাইন পড়ে যেত, কারণ রেডিও খারাপ, অথচ চারটেয় সম্প্রচার হবে 'মহিষাসুরমর্দিনী'। সেটা শুনতে না পারলে তো মহালয়াই মাটি, আর মহালয়া মাটি হলে পুজোটা কী করে আর অক্ষত থাকে?
সেইসব দিন আর ফিরবে না, কিন্তু এখনও গ্রাহক আসেন, অধিকাংশই বাপ-ঠাকুরদার আমলের রেডিও সারিয়ে নিয়ে যেতে। যা এখন আর শুধু রেডিও নয়, পারিবারিক সম্পদও বটে।
আমাদের নিউজলেটার সদস্যতা!
একচেটিয়া অফার এবং সর্বশেষ খবর পেতে প্রথম হন