Advertisment

দুপুরে রোদ পিঠে মেখে, কড়ি নিয়ে নিত্যদিন মেতে থাকেন তাঁরা

শহুরে যাপনে বিলুপ্ত দিদা ঠাম্মাদের নস্টালজিয়া। নিবাসী ও তাঁর বন্ধুরা বাঁচিয়ে রেখেছেন কড়ি খেলাকে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update

স্মৃতিচারণে জং ধরেছে, মনে পড়ে না পুরনো দিনের কথা। হাঁটুতে জোর কমে এলেও, শিরদাঁড়া তাঁর সোজা। বয়স জিজ্ঞাসা করলে বলেন, নাতির ঘরে পুঁতি হয়ে গেছে বা কখনও বলেন পাঁচ কুড়ি। নাম নিবাসী হালদার। আর এই পাঁচ কুড়ির কোঁচকানো হাত ধরে বেঁচে আছে প্রাচীন কড়ি খেলা।

Advertisment

কলকাতা থেকে ৪৫ কিলোমিটার দূরত্বে এ এক আজব গাঁয়ের গল্প। সংগ্রামপুরে হেসে খেলে থাকেন চপলা, হারু, আমুদিনি সর্দার, অনিমা, প্রতিমা নস্কর ও নিবাসী। সবারই বয়স প্রায় নব্বই একশর দোরগোড়ায়। চিঠি থেকে হোয়াটসঅ্যাপের প্রত্যাবর্তনের সাক্ষী এনারা। শহুরে যাপনে বিলুপ্ত দিদা ঠাম্মাদের নস্টালজিয়া। নিবাসী ও তাঁর বন্ধুরা বাঁচিয়ে রেখেছেন কড়ি খেলাকে।

দুপুরে রোদ পিঠে মেখে, কড়ি নিয়ে নিত্যদিন মেতে থাকেন তাঁরা। গোটা দশের কড়ি, মুঠো করে ছড়িয়ে দেওয়ার পর যে কড়ি গুলো উল্টে যাবে, আর তাদের সংখ্যা যদি পাঁচ হয়, প্রতি কড়ি পিছু পাঁচ দান পেয়ে, ২৫ এ খেলা বাঁধা হবে। খানিক লুডো খেলার নিয়মেই দান ফেলে ঘর ধরে এগোবে কড়ি। কড়ি উল্টোলেই , পাঁচ করে দান জুটবে কপালে। খেলার মাঝে বড় বড় যোগের হিসাব,বিন্দু মাত্র ভুল হয়না তাঁদের। কড়ির যোগফল শেষ হলেই চোখের নিমেষে দান দিয়ে দেন নিবাসী।

তবে এতে যে তিনি একাই পারদর্শী এমনটা নয়! খেলা সঙ্গীরাও সমান তালে টেক্কা দেয়। সারা দুপুর খেলাকে কেন্দ্র করে চলে খুনসুটি ও বন্ধুকে বোকা বানিয়ে জেতার তাগিদ। নিত্যদিনের নিয়ম মেনে খেলার শেষে বেড়িয়ে পরেন ছিপ নিয়ে। এবারের বর্ষায় পা পিছলে কোমড় ভাঙলেও, ভাঙেনি মনোবল। বয়স নিয়ে কথা উঠলেই তিনি বলেন, "যত দিন শ্বাস ততদিন আশ, সবই ঈশ্বরের খেলা"।

Advertisment