তিনি যদি বলেন বাড়িয়ে দাও তোমার হাত - তবে তাঁর ভক্তরা হাত বাড়িয়ে দেন। তিনি শিখিয়েছেন কিভাবে নিজেকে নিজের মতো থাকতে দেওয়া যায়। তিনি এও শিখিয়েছেন, বাউন্ডুলে ঘুড়ি হওয়া যায়। আজ তারই জন্মদিন। অনুপম দিনের পর দিন যেন বাঙালী তথা শ্রোতার মনের ভাষা দারুণ বুঝতে পারছেন। তাঁর গানের মাধ্যমেই ভালবাসার এক দারুণ দিক তিনি তুলে ধরছেন।
কিন্তু, আদ্যোপান্ত ইঞ্জিনিয়ার এই মানুষটি শুধুই কি সুরকার, নাকি তাঁর জীবনটাও ইমোশনে পরিপূর্ণ? জীবনে আসা মান অভিমানের নিরিখে কি তিনি গান বানান? নিজের মনের দুঃখ - প্রেম সবটাই কি তিনি সুরের মোহনায় ভাসিয়ে দেন? এই নিয়েই অনুপম একবার নিজের বক্তব্য রেখেছিলেন। সাধারণত, কম কথা বলেন তিনি। খুব শান্ত স্বভাবের মানুষটির জীবন প্রেম দুঃখ এবং ইমোশনের জায়গা ঠিক কতটা - সেই নিয়েই তিনি জানিয়েছিলেন...
সবসময় বাস্তব জীবনের ইম্প্যাক্ট গানের মধ্যে পড়ে না তবে ক্ষেত্রে। অনেক সময় হয় বলেই জানিয়েছিলেন তিনি। তিনি বলেন, "আমি কিছুটা দুঃখভীলাসী আবার কিছুটা অরিজিনাল দুঃখ, সকলের কিন্তু আউটলেট লাগে। সবকিছু মিলিয়ে তালগোল পাকিয়ে গান কবিতা বেরোয়। কথা বলার একটা গুরুত্ব আছে। বেশিরভাগ মানুষ কিন্তু খুব একা। বন্ধু নেই, নাকি আজকাল বন্ধুত্বের সঙ্গে পাল্টে গিয়েছে, কোথাও যেন সবটাই লেনদেনের সম্পর্ক হয়ে গিয়েছে। সবকিছু বিগড়ে ফেলেছে মানুষ। সমাজে আজকাল শুধু লেনদেন। সেটা থেকে বাঁচার জন্য একটা পরিবার লাগে, বন্ধু লাগে। কিন্তু এখন সেটাও অদ্ভুত হয়ে গিয়েছে। আমার চারপাশে মানুষ খুব একা।"
সুরকার এবং গায়ক জানিয়েছিলেন, তিনি গান লেখার সময় একা থাকতে পছন্দ করলেও একাকিত্বকে মোটেই গ্লোরিফাই করতে চান না। কিন্তু, মানুষের একাকীত্ব দেখে তিনি আতঙ্কে। বলেছিলেন, "আমার কি একা লাগেনি? জীবনের বহু সময় আমায় একাকীত্ব ঘিরে ধরেছে। সেইসময় গান আমায় সাহায্য করেছে। হয়, গান শুনেছি, নয়তো বা কিছু সুর শব্দ বেরিয়ে এসেছে। এবার সেটা যেহেতু মনটা নিংড়ে বেরোচ্ছে, তাই একটা পাওয়ার ছিল। এবং আমি যদি সততার সঙ্গে লিখি বা গান বানাই, দেখেছি তবে আউটপুট খুব ভাল হয়.. যে শুনছে তাঁর কাছে সেই গানটা ওই একইভাবে স্পর্শ করে। বেশি ভাবনা চিন্তা করে এসব হয় না। যেটা আচমকা - অন্তর ভেদ করে বেরোয় সেটা দারুণ।"
উল্লেখ্য, অনুপম রায় কিলবিল সোসাইটি নিয়ে এখন বেজায় ব্যস্ত। সেই ছবিতে সুর দিয়েছেন তিনি। আজ তাঁর জন্মদিনেই নতুন গান লঞ্চ হয়েছে সেই ছবি থেকে।