Advertisment

Success Story: ইটভাটার শ্রমিক থেকে ডাক্তারি পড়ুয়া, বাংলার এই যুবকের পরিশ্রমকে কুর্নিশ জানাল গোটা বিশ্ব

Success Story: তার মাথার উপর কোনো ছাদ ছিল না। দিনমজুরি করে প্রতিদিন ৩০০ টাকার সামান্য আয় করে সংসার চালানো সেই ছেলেটাই আজ ডাক্তারি পরীক্ষায় পাস করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
trending story

ইটভাটার শ্রমিক থেকে ডাক্তারি পড়ুয়া, বাংলার এই যুবকের পরিশ্রমকে কুর্নিশ জানাল গোটা বিশ্ব

Success Story:  তার মাথার উপর কোনো ছাদ ছিল না।  দিনমজুরি করে প্রতিদিন ৩০০ টাকার সামান্য আয় করে সংসার চালানো  সেই ছেলেটাই আজ ডাক্তারি পরীক্ষায় পাস করে সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছে।  সরফরাজের সাফল্যের এই কাহিনী অনুপ্রেরণা জুগিয়েছে লাখো মানুষকে। আজ NEET পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সফল সরফরাজের। তার এই সাফল্যকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সকলে।

Advertisment

সরফরাজ প্রতিদিন পেটের তাগিদে ৩০০ টাকা মজুরিতে কাজ করতেন। ছোট থেকেই তার পড়াশুনার প্রতি অদম্য ঝোঁক ছিল, স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হওয়ার। হাড়ভাঙা পরিশ্রম করেও তিনি ক্লান্তি দূরে সরিয়ে রেখে পরিশ্রম চালিয়ে গেছেন। অবশেষে তিনি NEET পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে সাফল্যের শিখরে পৌঁছেছেন। তার এই সাফল্যের কাহিনী হাজার হাজার মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে।

সরফরাজের সংগ্রামের গল্প
প্রত্যেক যুবক স্বপ্ন দেখে সাফল্যের, পরিবারকে গর্বিত করার। কিন্তু আর্থিক প্রতিবন্ধকতা অনেকের জীবনে বাধা হয়ে দাঁড়ায়। আবার কেউ কেউ সব দুঃখ, যন্ত্রণাকে দূরে সরিয়ে রেখে সাফল্যের লক্ষ্যে তাদের লড়াই জারি রাখেন এবং সাফল্য অর্জন করেন। সরফরাজের গল্প ঠিক তেমনই।

৩০০ টাকা দিনমজুরিতে কাজ করা সরফরাজ আজ NEET (মেডিকেল এন্ট্রান্স টেস্ট) পাস করে সবাইকে চমকে দিয়েছে। তার এই কাহিনী লাখো মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে। সরফরাজের সাথে ফিজিক্স ওয়ালার প্রতিষ্ঠাতা অলখ পান্ডে তার সাফল্যের পুরো গল্পটি সোশ্যাল মিডিয়ায় শেয়ার করেছেন, যেখানে সরফরাজ জানিয়েছেন কীভাবে তিনি এই সাফল্য অর্জন করেছেন।

সাফল্যের পরিসংখ্যান
NEET-এর প্রবেশিকা পরীক্ষায় ৭২০ নম্বরের মধ্যে ৬৭৭ পেয়ে সরফরাজ সকলকে চমকে দেন। তার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি করেছে, লক্ষ লক্ষ ভিউ হয়েছে। সমাজের সকল অংশের মানুষ তার সাফল্যকে কুর্নিশ জানাচ্ছেন। সরফরাজ অলখ পান্ডেকে জানান যে তিনি গত দুই বছর ধরে ইটভাটায় শ্রমিক হিসাবে কাজ করেছেন। প্রতিদিন ৪০০টি ইট মাথায় বহন করতে হত তাকে, যার জন্য মিলত মাত্র ৩০০ টাকা মজুরি। সকাল ৬টা থেকে দুপুর ২টো পর্যন্ত হাড়ভাঙা পরিশ্রমের পর চলত NEET-এর প্রস্তুতি।

আর্থিক সমস্যার সাথে লড়াই
সরফরাজ খুবই দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তার পরিবার প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার অধীনে একটি বাড়ি পেয়েছে, কিন্তু তাদের বাড়িটিতেই নেই কোন ছাদ। সরফরাজের মা বলেন, 'আমাদের মাথার ওপর ছাদও নেই, আমার ছেলে যখন রাত জেগে পড়াশোনা করত, আমি তার সঙ্গে থাকতাম, যাতে ওর কোনো সমস্যা না হয়।'

স্বপ্ন এবং সাফল্য
সরফরাজের সবসময় স্বপ্ন ছিল ন্যাশনাল ডিফেন্স একাডেমিতে (এনডিএ) যোগ দেওয়ার, কিন্তু আর্থিক প্রতিবন্ধকতার কারণে তার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। কোভিড ১৯ মহামারী চলাকালীন, সরফরাজ NEET-এর জন্য প্রস্তুতি শুরু করেন। অলখ পান্ডের ইউটিউব চ্যানেল থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে, সরফরাজ তার পড়াশোনাকে এগিয়ে নিয়ে যান। ২০২৩ সালে NEET পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন তিনি। ডেন্টাল কলেজে ভর্তি হলেও আর্থিক সমস্যার কারণে হোস্টেল সুবিধা নিতে না পারায় কলেজ ছাড়তে হয় তাকে। ২০২৪ সালে আবার NEET পরীক্ষায় সফল হন তিনি। নীল রতন সরকারি মেডিকেল কলেজে ভর্তির পথে সরফরাজ।

অলখ পান্ডের সহায়তা
সরফরাজের সাফল্যে মুগ্ধ হয়ে অলখ পান্ডে তাকে একটি মোবাইল ফোন উপহার দেন এবং পড়াশুনা চালানোর জন্য ৫ লাখ টাকা ধার দেন। এই ভিডিওটি ১০ মিলিয়নেরও বেশি ভিউ পেয়েছে।

সরফরাজের এই কাহিনী প্রমাণ করে যে সাফল্য অর্জনের জন্য কখনও হাল ছেড়ে দেওয়া উচিত নয়, আর্থিক প্রতিবন্ধকতা থাকা সত্ত্বেও কঠোর পরিশ্রম এবং অধ্যবসায় সবসময়ই সফলতার পথে নিয়ে যায়।

Success Story
Advertisment