বোরখা পরা মহিলা, কাঁধে সুইগির ব্যাগ…লখনউয়ের রাস্তায় হেঁটে চলেছেন এক মহিলা। মহিলার সেই ছবি মুহূর্তেই ভাইরাল নেটদুনিয়ায়। কাঁধে সুইগির ব্যাগ নিয়ে মহিলার ছবিটি কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ভাইরাল হয়ে যায় এবং নেটিজেনরা প্রথা ভাঙার জন্য এবং অপরিমেয় দৃঢ়তা দেখানোর জন্য মহিলার প্রশংসাইয় সুর চড়াতে শুরু করেন। তবে ছবিটি পেছন থেকে তোলা এবং মহিলার মুখ দেখা যায়নি ছবিতে। অবশেষে, সামনে এল সত্য! জানা গিয়েছে ৪০ বছর বয়সী মহিলার নাম রিজওয়ানা, তিনি কোনও খাদ্য সরবরাহকারী সংস্থার এজেন্ট নন। তিনি গৃহকর্মী হিসাবে কাজ করেন।
রিজওয়ানার কথায়, "আমি সকাল-সন্ধ্যা মানুষের বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করি এবং মাসে আমার সব মিলিয়ে ১৫০০ টাকা মত আয় হয়। বিকেলে আমি হকারি করি। আমি প্রতি প্যাকেট বিক্রিতে ২ টাকা কমিশন পাই। সব মিলিয়ে আমি প্রতি মাসে আমার আয় ৫হাজার থেকে ৬হাজার টাকা। চার সন্তানের মা রিজওয়ানা। ২৩ বছর আগে বিয়ে করেন রিজওয়ানা। স্বামী পেশায় ছিলেন। রিকশাচালক হঠাৎ করেই কিছু না বলেই তিনি উধাও হয়ে যান। তারপর থেকে একার হাতে ছেলে-মেয়েকে নিয়ে সংসারে সামলেছেন তিনি।
'সুইগি ব্যাগ' সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে রিজওয়ানা বলেন "ডিসপোজেবল চশমা এবং কাপ রাখার জন্য আমার একটি শক্তিশালী ব্যাগের দরকার ছিল। তাই, আমি এটি এক ব্যক্তির কাছ থেকে ৫০ টাকায় কিনি। তারপর থেকে, এই ব্যাগেই আমি আমার জিনিসপত্র বহন করছি। আমি সুইগিতে কাজ করি না। প্রতিদিন প্রায় ২০ থেকে ২৫ কিলোমিটার দূরত্ব হেঁটে রুটি-রুজির জোগাড় করি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া তার ছবি উল্লেখ করে রিজওয়ানা বলেন "একজন দোকানদার আমাকে ছবিটি দেখিয়ে বলেন, এটি ভাইরাল হয়েছে। এর পরে, একজন ব্যক্তি আমার সঙ্গে দেখা করতে আসেন এবং আমার ব্যাঙ্কের বিবরণ জানতে চান। ঘটনার পর থেকে, আমি আরও কয়েকজনের কাছ থেকেও সাহায্য পেয়েছি এবং মনে হচ্ছে আমার জীবন বদলাতে চলছে।
সুইগির কাজ সম্পর্কে রিজওয়ানা বলেন, 'লোকেরা আমাকে সুইগি সম্পর্কে বলেছে এবং আমার ফুড ডেলিভারির কাজে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু সমস্যা হল আমার সাইকেল বা স্কুটি নেই'।