একটি প্রবাদ বাংলায় প্রচলিত রয়েছে, "'কষ্ট করলে কেষ্ট মেলে"! যিনি কঠোর পরিশ্রম করতে জানেন, তার কাছে পৃথিবীতে অসম্ভব বলে কোন 'শব্দ' হয়না। অচিরেই তিনি সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে জীবনের পথে এগিয়ে যেতে পারেন। এই প্রবাদটি যে কতখানি সত্য, তা আরও একবার প্রমাণিত হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার এক পোস্টে। দিল্লির শ্রীরাম কলেজ অফ কমার্স থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক বৎসল নাহাতা, পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার উচ্চশিক্ষা সম্পুর্ণ করে বিশ্বব্যাঙ্কে চাকরি জুটিয়েছেন এই ভারতীয় যুবক। তার একটানা প্রয়াসকে কুর্নিশ জানিয়েছে হাজার হাজার ভারতীয় পড়ুয়া।
বছর ২৩- এর বৎসল নাহাতা তার স্বপ্নের চাকরি পাওয়ার জন্য নাওয়া-খাওয়া ভুলে কঠোর পরিশ্রম করে গিয়েছেন। অবশেষে এসেছে সাফল্যও। ৬০০টি ইমেল এবং ৮০টির বেশি ফোন কল করেছেন স্রেফ একটা চাকরির জন্য। এর পরেও কপালে জোটে প্রত্যাখ্যান। নাহাতা নিজেই তাঁর জীবনের হার না মানার এই গল্প শেয়ার করেছেন লিঙ্কডইনে, একটি পোস্টের মাধ্যমে । ১৫ হাজারের বেশি মানুষ তার এই অদম্য জেদকে কুর্নিশ জানিয়েছে। শ’খানেক মানুষ তাঁর এই গল্প শেয়ার করেছেন।
পোস্ট অনুসারে জানা গিয়েছে তিনি ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা সম্পুর্ণ করেন ২০২০ সালে। করোনার দাপটে তখন নাজেহাল বিশ্ব। সেই সময় অধিকাংশ সংস্থা নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত রাখায় চাকরি পেতে বেশ বেগ পেতে হয় তাকে। এমনকী অনেক বড় সংস্থাকেও কর্মী ছাঁটাইয়ের পথে হাঁটতে হয়েছিল।
আরও পড়ুন : < জনজোয়ারে ভাসবে তিলোত্তমা, ব্যাপক যানযট এড়িয়ে, সহজেই পৌঁছে যান মণ্ডপে! >
তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প অভিবাসন নিয়ে কঠোর অবস্থানে অনড় ছিলেন। যার কারণে ভিসা নিয়েও অনেক সমস্যায় পড়তে হয় তাকে। মাত্র ২ মাসে তিনি প্রায় দেড় হাজারের বেশি কানেকশন রিকোয়েস্ট পাঠিয়েছিলেন। ৬০০টি ইমেল এবং প্রায় ৮০ জনের সঙ্গে সরাসরি ফোন করে নিজের চাকরির অনুরোধ করেন। তারপরও জোটে প্রত্যাখ্যান। নাহাতার কথায়, “বাবা-মাকে মিথ্যা সাত্বনা দিতে হত। চিন্তায় রাতের ঘুম উড়ে যাওয়ার জো। তাহলে কী চাকরি টা হবে না”! অবশেষে স্বপ্ন সত্যি হয় তাঁর ।মে মাসের প্রথম সপ্তাহে বিশ্বব্যাংক সহ ৪টি সংস্থা থেকে ডাক পান তিনি। তিনি বিশ্বব্যাংককেই বেছে নেন।
শেষে নাহাতা বলেন, “বিশ্বের হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার নেওয়ার উদ্দেশ্য হল মানুষ যেন যে কোন পরিস্থিতিতেই হাল ছেড়ে না দেয়। হয়ত আমার এই কাহিনী অনুপ্রাণিত করবে অনেককেই। কেউ হয়ত আবার নতুন করে স্বপ্ন দেখতে শিখবে! ভাল দিন অবশ্যই আসবে, যদি আপনি আপনার নিজের ভুল থেকে শিক্ষা নিতে পারেন”।