৮০ বছর পার, সন্ধান মিলল সেই ঐতিহাসিক ঘড়ির!

ঘড়িটি ফিরে পেয়ে রীতিমত উচ্ছ্বসিত আলফ্রেডের নাতি-নাতনিরা। সেই সঙ্গে খানিক নস্ট্যালজিক আলফ্রেডের পরিবার।

ঘড়িটি ফিরে পেয়ে রীতিমত উচ্ছ্বসিত আলফ্রেডের নাতি-নাতনিরা। সেই সঙ্গে খানিক নস্ট্যালজিক আলফ্রেডের পরিবার।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

ঘড়িটি ফিরে পেয়ে রীতিমত উচ্ছ্বসিত আলফ্রেডের নাতি-নাতনিরা। সেই সঙ্গে খানিক নস্ট্যালজিক আলফ্রেডের পরিবার।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় নাৎসি সেনার দ্বারা চুরি করা একটি পকেট ঘড়ি ৮০ বছর পর বেলজিয়ামে পাওয়া গিয়েছে। ঘড়িটি ১৯১০ সালে নেদারল্যান্ডসের একজন ইহুদি ব্যক্তি, আলফ্রেড ওভারস্ট্রিজড তার ভাই লুইয়ের জন্য তৈরি করেছিলেন, যিনি ১৯৪২ সালে নাৎসিদের দ্বারা গ্রেপ্তার হয়েছিলেন। ভাইকে আর তখন উপহার দেওয়া হয়নি। ১৯৪৩ সালেই মৃত্যু হয় আলফ্রেডের। সেই সঙ্গে যুদ্ধে প্রাণ হারান তাঁর ভাইও।  

Advertisment

ওই ইহুদি ব্যক্তির কাছ থেকে ঘড়িটি চুরি করেন এক নাৎসি সেনা। রটার্ডমে ইহুদি ইতিহাসের অবশিষ্টাংশ খুঁজে পাওয়া কঠিন। ১৯৪০ সালের মে মাসে, জার্মানি শহরটিতে বোমা হামলা করে, ১১৫০ জনকে হত্যা করে এবং ২৪ হাজার বাড়ি ধ্বংস করে। সমগ্র নেদারল্যান্ডে, ইহুদি জনসংখ্যার প্রায় ৭৫ শতাংশ নিহত হয়েছিল। আনুমানিক ষাট লক্ষ ইহুদি এবং আরও অনেক সংখ্যালঘু গোষ্ঠীর মানুষ এই যুদ্ধে নিহত হয়েছিলেন। বেলজিয়ামের কৃষক গুস্তাভ জানসেনস ১৯৪৪ সালে ফ্ল্যান্ডার্সের মোলেনস্টেডে তার জমিতে ঘড়িটি খুঁজে পান। সেই সময় থেকে যত্ন করে রেখে দেন সেটি। এবং তিনি আশা করেছিলেন ঘড়িটি একদিন তার প্রকৃত মালিকের কাছেই ফিরে যাবে।ঘড়ির মালিকপক্ষের কারুর অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া দুস্কর ছিল। কিন্তু কাকতলীয় ভাবেই ঘড়ি প্রস্তুতকারকের এক মেয়ের সন্ধান মেলে সোশ্যাল মিডিয়ায়। জানা যায় তিন নাতি নাতনি আজও জীবিত। অবশেষে সেই ঘড়িটি তাদের হাতে তুলে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।  

ঘড়িটি অবশেষে আলফ্রেডের বেঁচে থাকা নাতি-নাতনিদের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং ৮০ বছর পরেও ঘড়িটি এখনও সচল। ঘড়িটি ফিরে পেয়ে রীতিমত উচ্ছ্বসিত আলফ্রেডের নাতি-নাতনিরা। সেই সঙ্গে খানিক নস্ট্যালজিক আলফ্রেডের পরিবার।  ঘড়িটির পিছনে খোদাই করা রয়েছে এটি তৈরি করা স্থান এবং সময়। ইতিহাস বলছে ১৯৪২ সালে নাৎসিদের দ্বারা গ্রেপ্তার হয়েছিলেন আলফ্রেড। সেই সময় সম্ভবত কোন নাৎসি সেনা এই মূল্যবান ঘড়িটি চুরি করেছিল।

ঘড়িটি ফিরে পেয়ে রিচার্ড ভ্যান অ্যামিজেডেন আবেগ-তাড়িত হয়ে পড়েছিলেন। যুদ্ধের সেই স্মৃতি মনে করে তিনি বলেছিলেন, "যখন আমি ঘড়ির দিকে তাকাই, তখন এটি আমাকে যুদ্ধের স্মৃতিকে মনে করায়। সেদিনও যুদ্ধ চলছিল আজও যুদ্ধ চলছে”। রাশিয়া ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে কিছুটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন তিনি। তিনি বলেন আমার মনে হয় এমন কত মানুষ আজ রুশ আগ্রাসন থেকে বাঁচার জন্য  মারিউপোলে পাতাল রেল স্টেশনে আশ্রয় নিয়েছেন। নিজেদের শখের জিনিস নিজেদের সঙ্গে আঁকড়ে ধরে বেঁচে রয়েছেন”।মিঃ জ্যানসেনস যখন ঘড়িটি খুঁজে পেয়েছিলেন, তখন তিনি প্রথমেই ঘড়িটির পিছনের নামটি লক্ষ্য করেছিলেন। এবং ভেবেছিলেন সেটি কোন নাৎসি সৈন্যের দ্বারা চুরি করা হয়েছে এই ভেবে ঘড়িটি প্রায় ৮০ বছর ধরে সেখানেই লুকিয়ে রাখেন।  সম্প্রতি সেই খামারটি বিক্রি হয়েছে এবং তার নাতি পিটার জানসেনস বলেছেন ঘড়িটি হাতে পেয়েই মালিকের সন্ধান করি, কিন্তু তাকে পাওয়া দুষ্কর ছিল।

Advertisment

তবুও, মিঃ স্নিজডার্স সোশ্যাল মিডিয়াতে ঘড়ির ইতিহাসের বিশদ বিবরণ দিয়ে একটি পোস্ট করেন এবং ভাল কিছু খবরের আশা করেছিলেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই মিঃ স্নিজডার্স জানতে পারেন ঘড়ি প্রস্ততকারক, আলফ্রেড ওভারস্ট্রিজডের এক কন্যা যুদ্ধে বেঁচে গিয়েছিলেন এবং তাঁর তিন সন্তান রয়েছেন নেদারল্যান্ডে। অবশেষে ঘড়িটির প্রকৃত মালিকের হাতে ঘড়ি পৌঁছে দিতে পেরে খুশি স্নিজডার্স।

Nazi soldier stolen watch