New Update
/indian-express-bangla/media/post_attachments/wp-content/uploads/2022/08/y-feature.jpg)
বাংলাদেশের আল ফারুক - এক্সপ্রেস ফটো শশী ঘোষ
বাংলাদেশ থেকে বিশ্বের নানা প্রান্তের অনুভূতি শেয়ার করলেন মহম্মদ আল ফারুক
বাংলাদেশের আল ফারুক - এক্সপ্রেস ফটো শশী ঘোষ
অজানাকে জানার ইচ্ছে, অচেনাকে চেনার উদ্যমতা - মানুষকে বহুকাল ধরে যাযাবর করে তুলেছে। প্রাচীন সময়ে খেয়াল করলে দেখা যাবে শুধু পৃথিবীকে দেখার - জানার অনন্য ইচ্ছে দেশ থেকে বিদেশ, পাহাড়-পর্বত, গ্রাম-শহর, সর্বত্রই ছুটে বেড়িয়েছেন মানুষ। আর এখন সোশ্যাল মিডিয়ার দৌলতে ব্লগারদেরও ইচ্ছে কিন্তু এরকমই। তবে বাংলাদেশের মহম্মদ আল ফারুক যেন সকলের কাছেই ইন্সপিরেশন। ওপার বাংলা থেকে আমেরিকা পাড়ি দেওয়া হোক কিংবা দেশ বিদেশ ঘুরে বেড়ানোর উদ্দেশ্য - সবই জানালেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে।
কেমন আছেন ফারুক সাহেব?
ভাল আছি। কলকাতায় এসেছি, সত্যিই খুব ভাল লাগছে। যদিও এই নিয়ে দ্বিতীয়বার এলাম এখানে।
বাংলাদেশের মানুষ যখন প্রথম আমেরিকায় গেছিলেন কী তফাৎ বুঝেছিলেন?
তফাৎ বলতে গেলে, সেরকম কিছু নয়। আমি আমেরিকায় গিয়েছিলাম উদ্দেশ্য নিয়েই, এবং সেটা হল সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়াব। আমেরিকার গ্রামে থেকেছি, শহরে থেকেছি - মিশ্র অনুভূতি পেয়েছি তবে খুব যে পার্থক্য এটা বলা যায় না।
ঘুরে বেড়ানোর এই যে শখ, এটা কিভাবে শুরু হল?
আমি ছোট থেকেই ঘুরতে খুব ভালবাসি। ভীষণ ঘোরার ইচ্ছে আমার। সবথেকে বেশি আগ্রহী হয়েছিলাম যখন ইতিহাসে ইবন বতুতার কথা পড়তাম। একজন লেখক তিনি সারা পৃথিবী ঘুরছেন, কত কিছু জানছেন। এদিক থেকে ওদিক, ভিন্ন সংস্কৃতি, ভিন্ন ধরনের মানুষ। আমায় খুব অবাক করত এই বিষয়গুলো। সেই থেকেই শুরু।
ভিডিওর কনটেন্ট খুব উইনিক, এই নিয়ে কিছু বলুন?
হ্যাঁ! এটা একটা বিষয়। তবে আমি যখন শুরু করেছিলাম শুধু একটাই লক্ষ্য ছিল যে মজা করব, আনন্দ করব। ট্রাভেল, ফুড রিভিউ এবং রেসিপি এই নিয়েই শুরু করি। তারপর দেখলাম যে মানুষ পছন্দ করছেন, তখন আরও বেশি আগ্রহ জাগল। তাই আরও কাজ শুরু করলাম।
কিন্তু মানুষজনকে কিছু জানাতে গেলে শুধু ব্লগিং - ই দরকার? অন্যভাবে করা যায় না?
না, আগে করতাম। আগে লেখালেখিও করতাম। তারপর দেখলাম তাতে অনেক সময়ও যায় এবং অনেকে পড়তে গিয়ে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। তার থেকে ভিডিও অথবা ব্লগিং দিয়ে আমি আরও বেশি কিছু তাদেরকে জানাতে পারছি। সময় কম লাগছে। লোকজন আগ্রহ প্রকাশ করছেন।
এই যে আপনার ভিডিও এত বড় হয় সময়ের দিক দিয়ে, ইন্টারেস্টিং কী থাকে যেটা মানুষকে আকর্ষণ করে?
( হেসে ) এটা ভাল প্রশ্ন। আসলে আমি ছোট ভিডিও আপলোড করলে বরং মানুষজন রেগে যায়। অনেকেই আছেন বড় ব্লগ দেখলে ক্লিক করেন না। কিন্তু আমি সেই কারণেই ভিডিও বানাই যারা দেখতে চায়। স্পেশ্যাল থাম্বনেল কিছুই থাকে না। অনেক তথ্য থাকে, পয়েন্ট অফ ভিউ থাকে। সেই কারণেই হয়তো মানুষ আগ্রহী হন দেখার জন্য।
এই যে প্রতিদিন একটা করে ভিডিও দেওয়ার এন্থু, এটা কোথা থেকে পান?
বলতে পারেন এটা দর্শকদের থেকে পাই। আমার অনুরাগীরা আমায় ভালবাসেন। এমনকি এক জায়গায় যদি বারবার করে যাই, সেখানেও ব্লগ করতে হয়। নইলে ওরা রেগে যায়। বলে আঙ্কেল তুমি গেলে, সেটা দেখালে না তো। যারা আমায় ভালবাসেন তাদের জন্য আমায় এটুকু করতে হয়।
পৃথিবীর এত দেশ ঘুরেছেন, সবথেকে ভাল কোন জায়গা লেগেছে?
সত্যি বলতে গেলে পৃথিবীর যেকোনও দেশের থেকে সুন্দর আমার বাংলাদেশের যেকোনও গ্রাম। এই নিয়ে ভাববার কিছুই নেই। আমার দেশ সবথেকে সুন্দর। এবং আমি বলি, বাংলাদেশ যে সকল দেশের রানী এটা কি সত্যি? হয়তো প্রাক্টিক্যালি না তবে আমার মনে অবশ্যই।
শহর কলকাতার সঙ্গে আপনার সম্পর্ক ঠিক কেমন?
আমার কাছে এক বাংলা, এক দেশ আজও। তবে হ্যাঁ কলকাতার সঙ্গে আমার অদ্ভুত এক যোগ রয়েছে। বলতে পারেন নাড়ির টান। আমার দাদু এখানে সোনার ব্যবসা করতেন বৌবাজারে। আমার মা, বাবা সকলে থাকতেন এখানে। এখানেই ওদের ব্যাবসা-চাকরি সব ছিল। তারপর যখন দাঙ্গা হাঙ্গামা লাগে তাদের এই দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়। কিন্তু কলকাতা কিংবা এই বাংলা আমার মনে খুব সুন্দর জায়গায় রয়েছে।
অনুরাগীদের মন্তব্যে কীভাবে প্রতিক্রিয়া দেন?
( হেসে ) আমি তো বুড়ো মানুষ! কিন্তু যারা আমার ব্লগ দেখে তারা ১৯ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে। এমনকি বাচ্চারাও রয়েছে। তাদের যখন আমি জিজ্ঞেস করি যে আমার ব্লগে তোমরা কী পাও, একদম খুদে যারা তারা বলে তুমি এদিক ওদিক যাও এটা আমাদের ভাল লাগে। আবার অনেকে এমনও বলে, আপনার চোখ দিয়ে পৃথিবী দেখতে ভাল লাগে। যেভাবে আপনি বোঝান, সিম্পল কথা বলেন - নিজেদের মনের কথা মনে হয়।