ক্ষতবিক্ষত ইউক্রেন, বাইরে বোমা গুলির শব্দে কান পাতা দায়। প্রাণে বাঁচতে মরিয়া সকলেই। এরমধ্যেই রাস্ট্র সংঘের রিপোর্ট অনুসারে জানা গিয়েছে দেশ ছেড়েছেন প্রায় ১৭ লক্ষ মানুষ। গতকাল ব্রিটিশ পার্লামেটে ভাষণ দেওয়া কালীন সময়ে জেলেনস্কি সকল পশ্চিমী দেশের কাছে আবেদন জানিয়েছেন রাশিয়াকে সন্ত্রাসবাদী তকমা দেওয়ার। সেই সঙ্গে তিনি জানিয়েছেন, 'আমরা শেষ পর্যন্ত লড়াই চালিয়ে যাব এবং আমরা জয়ী হব'
ক্ষতবিক্ষত ইউক্রেনে একাধিক ঘটনা ভাইরাল হয়েছে সোশ্যল মিডিয়ায়। তার মধ্যে সাম্প্রতিকতম সংযোজন, যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেন থেকে ছেলেকে অন্যত্র সরিয়ে দিতে এক নিকট আত্মীয়কে চিঠি লেখেন মা! আর সেই চিঠি হাতে নিয়ে ১৪০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিলেন বছর ১১'র এক খুদে। এই ঘটনা ভাইরাল হতেই উত্তাল নেটদুনিয়া।
বয়স মাত্র ১১ বছর। এক, দুই, তিন পেরিয়ে একশো-দুইশো নয়। রাশিয়া ইউক্রেন মধ্যে একেবারের ১৪০০কিলোমিটার পথ হাঁটল এই বালক। ইউক্রেনের দক্ষিণ পূর্বের শহর জাপোরিঝঝিয়া। ইউক্রেনীয় সীমান্ত (ukranian border) এলাকা। সেখানেই বাস এই বালকের। সম্বল বলতে পিঠে ব্যাগপ্যাক, মায়ের চিঠি, আর হাতে লেখা এক আত্মীয়ের টেলিফোন নম্বর।
তার কীর্তিকে আজ কুর্নিশ করছে গোটা দুনিয়া। পুতিন সেনার সামনে বুক চিতিয়ে লড়ছে ইউক্রেন সেনা। ইউক্রেনীয়দের কাছে আজ অনুপ্রেরণা এই এগারোর বালক। যে হাজার কিলোমিটার পথ পেরিয়ে স্লোভাকিয়ায় হাজির হয়েছে। রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের মধ্যে হেঁটে ইতিহাস রচনা করল এক খুদে।
তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য বিখ্যাত জাপোরিঝঝিয়া। রুশ বোমার নিশানা থেকে এই শহরও নিস্তার পায়নি। সব ধ্বংসের মধ্যে রয়ে গিয়েছেন বাবা-মা। অসুস্থ ঠাকুমাকে দেখভালের জন্য। আর ছেলেকে আত্মীয়ের বাড়িতে পাঠাতে তৎপর হয়েছিলেন মা। তাই চিঠি লিখেছিলেন আত্মীয়ের কাছে। ছোট্ট ছেলের সাহসে মুগ্ধ স্লোভাক প্রশাসন ৷ সে দেশের অভ্যন্তরীণ মন্ত্রক থেকে বলা হয়েছে, ‘রবিবার রাতের সবথেকে বড় নায়ক’৷
স্লোভাক সীমান্তে হাজিরের পর প্রশাসনিক আধিকারিকরা তার হাতের নম্বর দেখে যোগাযোগ করেন পরিজনদের সঙ্গে। পরে রাজধানী ব্রাতিস্লাভা থেকে এসে তারা নিয়ে যান ১১ বছরের এই ছেলেকে। জানা গিয়েছে, ছেলেকে সঙ্গে দেওয়া চিরকুটে তার মা ধন্যবাদ জানিয়েছেন স্লোভাক সরকার এবং পুলিসকে, ছেলেকে নিরাপদে পৌঁছে দেওয়ার জন্য ৷
আপাতত নিরাপদে ১১ বছরের এই ছেলে। ইউক্রেন-স্লোভাক সীমান্তে তার পরিচর্চায় ব্যস্ত এখন স্বেচ্ছাসেবকরা। গত ১০ দিনের বেশি সময় ধরে যুদ্ধ হচ্ছে রাশিয়া-ইউক্রেনের মধ্যে। কিন্তু রবিবারের স্লোভাক সীমান্ত যে ঘটনার সাক্ষী থাকল, তা নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রম।