ভাইবোন মিলে কেলেঙ্কারি শুরু করেছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। মজার কনটেন্ট বানানোর সঙ্গে সঙ্গেই মানুষকে যেমন আনন্দ দিচ্ছে তাঁরা তেমনই সমাজ ও পরিবেশের কথা মাথায় রেখে সামাজিক বার্তাও থাকে তাঁদের ভিডিওতে। CandidCaly এর মজার ভিডিও মানেই তাতে তিনটে জিনিস ভীষণ গুরুত্বপূর্ন। এত অল্প বয়সেই সাফল্য, কীভাবে দেখছেন - ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলায় শেয়ার করলেন বিদ্যুৎ ও ইতি অর্থাৎ Candidcaly।
কেমন আছ তোমরা?
( ইতি ও বিদ্যুৎ ) : শরীরটা একটু খারাপ গো, নাহলে একদম ফাইন। শুটিং, ভিডিও সব নিয়ে চলছে আর কি।
সোশ্যাল মিডিয়ায় এত জনপ্রিয়তা, কোথাও কি সাবস্ক্রাইবার বেশি হলে নিজেদের সেলিব্রিটি মনে করে ক্রিয়েটররা?
দেখ, সত্যি কথা বলতে গেলে আমরা কিন্তু একেবারেই এরকম কিছু ভাবিই না। আর যাদেরকে আমরা চিনি তাঁরাও এমন নয়। খুব একটা যে তরকাসুলোভ আচরণ করেন সেটা বলা যায় না।
যখন কোনও কনটেন্ট বানাও তখন কী শুধু ট্রেন্ড এর ওপর নির্ভর কর নাকি প্ল্যানিং থাকে?
না না, প্ল্যানিং থাকে। অবশ্যই! আমরা তো অনেকদিন ধরে একটা বিষয় নিয়ে রিসার্চ করি। ট্রেন্ড তো অবশ্যই কিন্তু, অনেক কিছু ভাবনা চিন্তার পর তারপর গিয়ে আমরা একটা কনটেন্ট বানাই।
তোমাদের কনটেন্টের স্পেশ্যালিটি কী?
আমাদের কনটেন্ট যদি দেখতে যাও, তাহলে কয়েকটা জিনিস সবাই বুঝতে পারবে। যে আমরা অভিনয়ের দিকটায় খুব জোর দিই। ওটাই প্রথম, তারপর ধর স্ক্রিপ্ট, সেটার ওপর আমরা খুব কাজ করি। আর শেষে আসে সিনেমাটগ্রাফি। এইগুলোই স্পেশালিটি বলতে পারো।
অভিনয়ের কথা যখন বললেই, বড়পর্দায় কিংবা সিরিজ এগুলোতে অভিনয় করার কি প্ল্যান, অনেক ইউটিউবারই তো করছেন?
( হেসে ) দেখ, এটা একটা প্ল্যাটফর্ম। সবাই চায় বড় হতে। অভিনয় জিনিসটা খুব কঠিন। আর সিনেমা বা বড়পর্দা নিয়ে এখনও কিছু ভাবা হয়নি। অভিনয় কতটা করতে পারি জানি না, তবে চেষ্টা করি।
সোশ্যাল মিডিয়ার একজন সদস্য হিসেবে দেশের ডিজিটালাইজেশনকে কিভাবে দেখবে?
অবশ্যই ভাল। দেশ এগোচ্ছে। কিন্তু কোনও জিনিসটাই বাড়াবাড়ি হলে ভাল না। এই সোশ্যাল মিডিয়ার জন্য, মানুষ আজকাল সামনাসামনি কথা বলতে পারে না। কমিউনিকেশন বাড়াতে এই প্ল্যাটফর্ম এসেছিল কিন্তু সেটাই হয়নি। উল্টে মানুষ আরও কেমন জানি হয়ে গেছে। এমনকি ফোন করতে বললেও অসুবিধা। এখন শুধু টেক্সট এর যুগ। একসময় আমরা মাঠে ঘাটে খেলে বেড়িয়েছি, এখন সেসব আর কোথায়?
উত্তরবঙ্গের মানুষ তোমরা, তথাকথিত ডিজিটাল প্লাটফর্মে যে উত্তরবঙ্গ বনাম দক্ষিণবঙ্গ এই লড়াই- কী বলবে?
সত্যি কথা বলতে গেলে, আমরা এরকম কিছুই ফেস করিনি। আমাদের এত বছর হয়ে গেল এই শহরে কিন্তু এমন কোনোদিন বুঝি নি যে আমরা উত্তরবঙ্গের মানুষ বলে কেউ অপমান করছে। কেন এই জিনিসটা নিয়ে বাড়াবাড়ি করা হয় সেটাই বুঝি না। হয়তো ভিউজ পাওয়ার জন্য অনেকেই করতে পারে। তবে আমরা সব জায়গা থেকে সমান ভালবাসা পেয়েছি।
মজার কনটেন্ট বানাতে গেলে কি একটু হলেও ওভার অ্যাক্টিং করে ক্রিয়েটররা?
ওভার অ্যাক্টিং বলব না, তবে হ্যাঁ একটু হলেও লাগে। মানুষকে হাসানোর জন্য অঙ্গভঙ্গি তো একটু দরকার। বড় ক্রিয়েটরাও এসব করে। আমরা ডিনাই করছি না হ্যাঁ একটু তো লাগবেই।
ফানি কনটেন্ট বানাতে গেলে কিছু সীমা রাখা উচিত?
অবশ্যই উচিত! কারণ আমি যদি একটা ভুলভাল কাজ করি তবে লোকজন যারা একটু কম বুদ্ধি ধরে তাঁরা এই একই কাজ করবে। আমি একজন ক্রিয়েটর আমায় তো বুঝে শুনে কাজ করতে হবে যে এটা করা উচিত বা এটা নয়।
ডিজিটাল প্লাটফর্মের এমন একটা দিক যেটা তোমাদের অপছন্দের?
ট্রোলিং, বিতর্ক! এগুলো একদম পছন্দ নয়। আমরা কাউকে বিচার করার কে? কেন করব? এখন সোশ্যাল মিডিয়ায় মানুষ বসেই রয়েছেন অপিনিয়ন দিতে। আর সেটা এত মারাত্মক পর্যায়ে যে একটা মানুষকে দুমড়ে মুচড়ে শেষ করে দিতে পারে। সবার তো মানসিক স্থিতি সমান হয় না।
এটা কি বন্ধ হওয়া উচিত...
বললেও বন্ধ হবে না। যা আছে সেটাই থাকবে। আর একটা বিষয়, মেয়েদেরকে নিয়ে মতামতটা একটু বেশিই। তাদের পোশাক নিয়ে, কিংবা কোনও কারণে যদি একটু আচরণে খামতি থাকে অথবা মুখচেনা হয় তাহলে তো কথাই নেই। বন্ধ হবে না এসব জিনিস। কিন্তু নিজেকে শক্ত হতে হবে। একদম ডোন্ট কেয়ার একটা বিষয় রাখতে হবে।
ইউটিউব প্যাশন নাকি প্রফেশন? সাবস্ক্রাইবার না বাড়লে মানসিক ইচ্ছেটা এই প্ল্যাটফর্মের প্রতি একই থাকে?
প্যাশন এবং প্রফেশন দুটো একসঙ্গে হওয়া উচিত। তবে শুধু যদি কেউ টাকা ইনকামের কথা কেউ চিন্তা করে তাহলে কিন্তু খুব মুশকিল। এরকম অনেকেই ভাবে এমনকি আমাদের বলেও যে ইউটিউবারদের অনেক টাকা। তাঁরা নাকি এই করেই গাড়ি বাড়ি করছে। এটা ভুল! কাজ করে যেতে হবে। কাজ না করলে সাফল্য আসাটা খুব মুশকিল। শুধু এরকম মাইন্ডসেট থাকলে বিপদ।