দিনে-রাতে, শীত-গ্রীষ্মে, রাস্তা-ঘাটে চায়ের ভাঁড়ে চুমুক দেওয়ার অভ্যাস নেই, এমন মানুষের সংখ্যা নেহাতই কম। চা না খেলে বাঙালির মগজাস্ত্রে শান পড়ে না অনেক সময়। এখন অনেকেই চায়ের দোকানকে পেশা হিসাবে নিচ্ছেন। সেরকমই দুই ইঞ্জিনিয়ার ভাই চায়ের দোকানকে সামনে রেখেই স্বপ্নপূরণের লক্ষ্যে নেমেছেন।
Advertisment
ইঞ্জিনিয়ার ব্রাদার্সের চায়ের স্বাদ নিতে হলে আপনাকে আসতে হবে দুর্গাপুরে। দু'নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে ছোট্ট একটি দোকান। সেখানেই চায়ের কাপে জাদু দেখাচ্ছেন ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ দুই ভাই। অটোমোবাইল, মেকানিক্যালের কলকব্জার নাড়াচাড়া ছেড়ে, তাঁরা এখন মন দিয়েছেন চা তৈরিতে। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে বহু টাকা ব্যয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপ্লোমা পাশ করেছেন দুই ভাই। সরকারি, বেসরকারি সংস্থায় কাজের চেষ্টাও করেছেন। তবে আশাপ্রদ কিছু মেলেনি। এখন তাঁরা সফল চা ব্যবসায়ী। আগামী দিনে রাজ্যজুড়ে তাঁদের এই চায়ের ব্যবসা বিস্তার করতে চান।
ইঞ্জিনিয়ার ব্রাদার্সের চায়ের স্বাদ যেমন অনন্য, তেমনি বাহারি চায়ের ভাঁড়। এই দুইয়ের আকর্ষণে দোকানে ভিড় করছেন চা-প্রেমী মানুষজন। ইঞ্জিনিয়ার্স ব্রাদার্সের প্রথম উদ্যোক্তা সুমন কর। তিনি অটোমোবাইলে ডিপ্লোমা করেছেন। তারপর ভিন রাজ্যে গিয়েছিলেন পেশার তাগিদে। কিন্তু সেখানে বিভিন্ন সমস্যার জেরে রাজ্যে ফিরে আসেন। তারপর একটি গাড়ির শোরুমে কাজ শুরু করেন। কিন্তু মাইনে পর্যাপ্ত না হওয়ার ফলে, নিজের ব্যবসা শুরু করার সিদ্ধান্ত নেন।
অটোমোবাইলের স্পেয়ার-পার্টসের ব্যবসা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন প্রথমে। তবে তার জন্য প্রয়োজনীয় পুঁজি ছিল না সুমনের কাছে। এরপরই কাহিনী মোড় নয় অন্যদিকে। স্পেয়ার-পার্টসের দোকান করার জন্য কেনা জায়গায় শুরু করেন চায়ের দোকান। চা তৈরির পদ্ধতি বেছে নেন অন্যরকম। পরিবেশনের ক্ষেত্রে বদল আনতে গিয়ে নিয়ে আসেন বাহারি চায়ের ভাঁড়। তারপরেই আরও জনপ্রিয় হয়ে ওঠে অটোমোবাইল ইঞ্জিনিয়ারের হাতের তৈরি চা।
মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেছেন সুমনের ভাই সুমিত কর। তিনি ভারতীয় সেনাবাহিনী-সহ বিভিন্ন জায়গায় চাকরির পরীক্ষা দিয়েছেন। তবে শিকে ছেঁড়েনি। তারপরেই দাদার দোকানে সহযোগী হিসেবে কাজ শুরু করেন। বর্তমানে দাদার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তিনিও ব্যবসায় মন দিয়েছেন। দাদার সঙ্গে সহযোগিতা করে ব্যবসার বিস্তার করা আগামী দিনে তাঁরও লক্ষ্য।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন