মাস্কে ঢেকেছে পুতুলের মুখ। তালিবানের বর্বরতায় শিউরে উঠল তামাম বিশ্ব। ইতিমধ্যেই বিশ্ববাসী সাক্ষী থেকেছে তালিবানের ভয়ঙ্কর বর্বরতার। আফগান বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের নিষিদ্ধ করেছে তালেবান। এবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে তালিবানি বর্বরতার ভয়ঙ্কর চিত্র। কাবুলে একাধিক দোকানে মাস্কে ঢেকেছে পুতুলের মুখ।আর সেই ছবিই তোলপাড় ফেলেছে সারা বিশ্বব্যাপী।
আফগানিস্তানে নারীশিক্ষার ওপর তালেবানের নিষেধাজ্ঞা দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। প্রকাশ্য জনজীবন থেকে আফগান মহিলাদের নির্বাসিত করে রাখাই যেন এখন তালেবানের অন্যতম লক্ষ্য। ইতিমধ্যেই তারা শরিয়ত আইন অনুযায়ী প্রকাশ্যে মৃত্যুদণ্ড এবং বেত্রাঘাতের প্রথা চালু করেছে। প্রথমবার যখন তারা ক্ষমতা দখল করেছিল, তখনও এমন প্রথাই চালু করেছিল তালেবানরা। হাইস্কুলের পর এবার আফগানিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও নারীদের শিক্ষা গ্রহণ নিষিদ্ধ করেছে দেশটির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী তালেবান। এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ে নারীদের প্রবেশও নিষিদ্ধ করা হয়েছে। যার তীব্র নিন্দায় সরব হয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
আফগান নাগরিকদের একাংশের আশা ছিল, তালেবানের এবারের শাসন আগের চেয়ে ভালো হবে। কিন্তু, কোথায় কী! সেই আগের মতই এবারও তারা মধ্যযুগীয় শাসন ব্যবস্থার পথে হাঁটছে। এর আগে ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালের তালেবান জমানায় আফগানিস্তানের নারীশিক্ষা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এবার তালেবানরা প্রথমে মেয়েদের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছিল।
এবার এক ভয়ঙ্কর দৃশ্য আপনার বুক কাঁপাবে। তালেবান শাসনের অধীনে, কাবুল জুড়ে মহিলাদের জামাকাপড়ের দোকানে পুতুলগুলিতে ধরা পড়েছে এক ভুতুড়ে দৃশ্য, পুতুলগুলির মাথা কাপড়ে মোড়া, কোনটি আবার বা কালো প্লাস্টিকের ব্যাগে মোড়ানো।
শিক্ষার উপর নিষেধাজ্ঞা থেকে শুরু করে জিম, বিনোদন পার্কে প্রবেশ, ইত্যাদি নানাবিধ বিষয়ে তালেবান শাসনের তোপে আফগানিস্তানের মহিলারা। এবার বাদ গেল না জামাকাপড়ের দোকানে পুতুলগুলিও। কেন এই পদক্ষেপ? স্থানীয় এক দোকানদার আন্তর্জাতিক এক সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘মহিলাদের জনসাধারণের দৃষ্টির বাইরে রাখার ধারণা থেকেই এমন নির্দেশ’। আফগানিস্তানে বেশ কয়েকটি দোকানের বেশ ভয়ঙ্কর ছবি ভাইরাল সোশ্যাল মিডিয়ায়। যাতে দেখা যায় মডেলগুলিকে পরানো রয়েছে ঐতিহ্যবাহী নানান পোশাক, সেই সঙ্গে তাদের মুখ ঢাকা রয়েছে মাস্ক, অথবা প্লাটিক, কাপড়ের মোড়কে।
নারীশিক্ষা নিয়ে সম্প্রতি তালেবান মুখপাত্রের অভিযোগ, আফগানিস্তানের সম্পদ আমেরিকা লুঠ করেছে। সেটা তো তারা ফেরত দেয়ইনি। উলটে, নারীশিক্ষার ধুয়ো তুলে আফগান জনগণকেই নিশানা করছে। আমেরিকার বিরুদ্ধে শুধু এই অভিযোগ তোলাই নয়। বালকি দাবি করেছিলেন যে, আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে একডজনেরও বেশি প্রদেশে নারীশিক্ষার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু, তালেবান মুখপাত্রর এই দাবি যে স্রেফ কথার কথা, সময় এগোতেই তা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে আফগান নাগরিকদের কাছে।