খাবার নিয়ে বাঙালির ভালবাসার অন্ত নেই! বাঙালি কুইজিন হোক কিংবা কন্টিনেন্টাল, অথবা চাইনিজ - মানুষ খেতেই ভালবাসে। আর সে যদি হয় খোদ ফুডি বাঙালি নিজে, তাহলে তো আর কোনও কথাই নেই! বিয়েবাড়ির নিমন্ত্রণ থেকে চাকরি বাকরি, একা হাতে সামলাচ্ছেন সবকিছু। কিন্তু কী করে? নিজের ঝুলি উজাড় করলেন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলার কাছে।
সব ঠিকঠাক?
একদম! ( হাসি ) চলছে আর কি...
ছোটবেলা থেকে কতটা পেটুক কমলিকা?
ছোটবেলা থেকে না, আসলে আমি খুব খাবার নিয়ে খুঁতখুঁতে ছিলাম। অনেকেই আছে না যাই হোক খেয়ে নিলাম, আমি একেবারেই এমন নয়। আমি খুব বুঝেশুনে খেতাম। সবকিছু একেবারেই খেতাম না। মিষ্টিটা একেবারেই পছন্দ করতাম না।
পাঁচখানা পাতুরি নিয়ে মারাত্বক ট্রোল! কী বলবে?
আগে দাদুদের কাছে শুনতাম ২০০ পিস রসগোল্লা খেত অনেকে। বিয়েবাড়িতে কম্পিটিশন হত। আমাদের বাবাদের সময়ও শুনেছি কিছুটা। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে আজকের দিনে ছোট পাঁচটা পাতুরি খুব ডিসেন্ট। এখন তো জীবনযাত্রা বদলে গেছে।
নিজেকে ফিট রেখেছ কী করে?
এটা সিক্রেট! আমি শেয়ার করব না কারওর সঙ্গে। অনেকেই জানতে চায় যে এত খেয়ে কীকরে আমি রোগা.. এটা অজানা থাকুক। আমি এই নিয়ে একটা ভিডিও দেব খুব তাড়াতাড়ি ( হাসি )।
ফুড ক্রিটিক হওয়ার কোনও প্ল্যানিং?
প্রশ্নই ওঠে না। চেষ্টাও করি না। তাঁর কারণ আমি এমনই পার্থক্য বলে দিতে পারি যে এই দোকানের এই ডিসের সঙ্গে কোনও তফাৎ আছে কিনা! তবে ক্রিটিক হতে পারব না। এমনকি ধর, একই খাবার হয়তো পাঁচটা দোকানে খেয়েছি তো কোনটা ভাল বলে দিতে পারব।
চাকরি সামলে এই ফুড ব্লগিং, অসুবিধা হয় না?
দেখ, চাকরিটা আমার প্রফেশন। আর ফুড ব্লগিং আমার প্যাশন। এখন সেটা প্রফেশন হয়ে গেছে। আমি পড়াশোনায় ভাল ছিলাম। তাই একটা চাকরি তো করতেই হত। ইচ্ছেই ছিল যে বৈজ্ঞানিক বা ইঞ্জিনিয়ার হব, আর বাকি ধর এটা আমার খুব ভাললাগার জায়গায়।
Chef হতে চাও নি কোনওদিন?
সত্যি কথা বলতে গেলে, আমাদের সময় এই পেশাটা খুব কঠিন ছিল। ভীষণ ক্রিয়েটিভ আইডিয়া লাগে। আবার অনেকসময় বাবা মা এনারাও না করেন। আমি এমনি রান্না বান্না করি বাড়িতে। সেই শখ আছে।
মায়ের রান্নার খুঁত ধর?
রোজ! আজ কাল পরশু রোজ ধরি... আর মা সেটা হাসিমুখে গ্রহণও করে। ( হাসি ) আমি এই বিষয়ে নিজেকে বদলাতে পারব না।
বাঙালির কি ওজন বুঝে ভোজন করা উচিত?
ওজনটা আমার কাছে একদম ম্যাটার করে না যদি সেই মানুষটা ফিট হয়। আমার কাছে ফিট হওয়াটা সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ন। শরীর বুঝে, নিজের দিকটা দেখে নিয়ে তারপর যদি খাবার খেয়ে সুস্থ থাক তাহলে অসুবিধা কী?
বিনা নিমন্ত্রণে কারওর বাড়িতে গিয়ে অসুবিধা হয় না?
( হাসি ) আমি সত্যিই কোনওদিন বিনা নিমন্ত্রণে যাই নি গো! ইচ্ছে আছে যাওয়ার। তবে হ্যাঁ, অসুবিধা বলতে একটাই এখন যেহেতু অনেকে চিনে গেছে তাই আমার সামনে দাঁড়িয়ে যায়। অনেকে এমনও বলে যে দেখি কি করে এত খাও! এসময় একটু লজ্জা লাগে।
Mukbang বিষয়টা সাপোর্ট কর?
না, ওরে বাবা.. একদমই না। আমি জানি না ওটা কীভাবে সম্ভব। আমায় টাকা দিলেও আমি করব না ওই কাজ।
বাবা-মায়ের তরফে কোনও বক্তব্য ছিল?
ছিল মানে, কিরকম বলো তো মা বাবা দেখত করছে একটা কাজ ব্যাস এটুকুই। কিন্তু তারপর, যখন দেখল যে সবাই চিনছে। সেলেবদের সঙ্গে ছবি, এই সেই তখন বুঝতে শুরু করল। আমার বাবাকে দেখিয়ে একজন বলেছিল, এই দেখ আমি এই মেয়ের ফ্যান। কি সুন্দর খায়, আমার বাবা বলছেন এটা তো আমার মেয়ে ( হাসি )।
ফুড ব্লগিং এর ক্ষেত্রে তুমি কেন আলাদা?
একদম সিরিয়াস কিছু আমার ফুড ব্লগে নেই। আমি খুব আনন্দ নিয়ে কাজ করি। হিউমার, ডবল মিনিং কথা অ্যাড করি। তাঁর সঙ্গে ধর, ফান এলিমেন্ট থাকে। ব্যাস এটুকুই।
বাঙালির খাবারের টেস্ট বদলাচ্ছে?
একদম, বদলাচ্ছে। এখন বাচ্চারা যে ধরনের খাবার খায় সেটা আগে আমরা খেতাম না। এমনকি বড়দের কথাও বলছি। ওরাও এখন বাইরের অনেকরকম খাবার খেতে ভালবাসে।
সোশ্যাল মিডিয়ায় কিছু বদল আনতে চাও?
যারা অতিরিক্ত নেগেটিভ কমেন্ট করে, ফেক প্রোফাইল বানিয়ে বসে থাকে, যাদের প্রোফাইলে DP নেই, তাদের আমি ব্যান করে দিতে চাই ব্যাস! ( হাসি )