যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনে চলছে বাঁচার আর্তি। আকাশ ঢেকেছে কালো ধোঁয়ায়। প্রাণ বাঁচানোর আর্তি লাখ মানুষের। এর মধ্যেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে এক হৃদয়গ্রাহী ভিডিও। যুদ্ধ বিধ্বস্ত ইউক্রেনের অসহায় মানুষদের পাশে সাহায্যের জন্য এগিয়ে এসেছেন এক ভারতীয়। তাঁর রেস্তোরাঁ হয়ে উঠেছে অসহায় আশ্রয়হীন মানুষের আশ্রয়স্থল। মনীশ ডেভ, রেস্তোরাঁর কর্ণধার। আদতে গুজরাটের বাসিন্দা। ভারত থেকে ইউক্রেনে এসেছিলেন। খুলেছিলেন সাধের রেস্তোরাঁ। আজ সেই রেস্তোরাঁ হয়ে উঠেছে অসহায় সাধারণ মানুষের আশ্রয়স্থল।
যুদ্ধের আটদিনের মধ্যে কয়েক ডজন মানুষের মুখে তুলে দিয়েছেন দুমুঠো খাবার। গৃহহীন মানুষ এবং বয়স্ক স্থানীয়দের আশ্রয় দেওয়ার জন্য ইতিমধ্যেই নেটদুনিয়ায় প্রশংসা কুড়িয়েছেন তিনি। ২০২১ সালে গুজরাটের ভাদোদরা থেকে ইউক্রেনে এসেছেন তিনি। এবং চলতি বছর জানুয়ারিতে তিনি তাঁর রেস্তোরাঁটি খুলেছিলেন। যখন তিনি খুলেছিলেন তখন তিনি ভাবতেও পারেন নি আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই উত্তাল হয়ে উঠবে ইউক্রেন।
ইতিমধ্যে কিয়েভে রুশ বাহিনীর হানায় প্রাণ হারিয়েছেন বেশ কয়েকজন সাধারণ মানুষ। পায়ে হেঁটে পালিয়ে বাঁচার মরিয়া প্রচেষ্টা সকলেরই। তার মাঝেই অসহায় মানুষগুলোর মুখে তুলে দিয়েছেন একটু খাবার। দ্য ওয়াশিংটন পোস্টের প্রতিবেদন অনুসারে, ডেভের বেসমেন্ট ভোজনশালাটি যুদ্ধে অসহায় লোকদের জন্য আশ্রয়স্থল হয়ে উঠেছে।
গত বৃহস্পতিবার ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসন শুরু হওয়ার পর থেকে ১৩০ জনেরও বেশি মানুষকে আশ্রয় ও বিনামূল্যে খাবার দিয়েছেন তিনি। তিনি তার নিয়মিত গ্রাহকদের মেসেজের মাধ্যমে জানান 'যে তারা চাইলে বেসমেন্টে থাকতে পারেন'। পরে তিনি মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামের মাধ্যমে যাদের আশ্রয়ের প্রয়োজন, তাদেরকেও আমন্ত্রণ জানান। কারণ তার বেসমেন্টটি ছিল নিরাপদ। এমনিতেই গত কয়েকদিন রুশ হামলা থেকে বাঁচার জন্য সাধারণ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন বেসমেন্টে। কেউ আশ্রয় নিয়েছেন বাঙ্কারে।
এই সংক্রান্ত একটি পোস্টও করেন তিনি।
পোস্টে লেখা ছিল, 'যদি আপনি থাকার জায়গা খুঁজে না পান, তাহলে আমার রেস্তোরাঁর বেসমেন্ট আপনার জন্য নিরাপদ আশ্রয়স্থল হয়ে উঠতে পারে'। রেস্তরাঁয় একদিকে যেমন রয়েছে ভারতীয় খাবার, তেমনই রয়েছে পাস্তা, স্ন্যাকস জাতীয় নানান খাবার। এমনই একজন যুদ্ধের ভয়াবহতার মাঝে আশ্রয় নিয়েছিলেন তাঁর রেস্তোরাঁয়। নাম আন্তোন্তসেভা। তিনি এক সাক্ষাতকারে জানিয়েছেন, " যুদ্ধের মধ্যে একটু আশ্রয় নেওয়ার জন্য আমি এই রেস্তোরাঁয় এসে উঠি । একটু বিশ্রামের পর যখন আমাকে গরম চা এবং খাবার খেতে দেওয়া হয়েছিল আমি সত্যি খুব খুশি হয়েছিলাম। আমার সঙ্গে আমার এক গর্ভবতী বান্ধবী ছিল, তাকে একটি ছোট সোফাতে শুতে দেওয়া হয়েছিল"। একজন ভারতীয় মেডিকেল ছাত্র, শিবম জানান “আমি প্রায়শই এখানে ভারতীয় খাবার খেতে আসতাম, কিন্তু যখন আমি রেস্তোরাঁর মালিকের কাছ থেকে ফোন পাই, তখন আমি নিরাপদে থাকার জন্য এখানে চলে আসি।"