বাবার হার্টের অবস্থা ভাল নয়। চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন বড় অঙ্কের অর্থ। AIIMS দিল্লিতে বাবার চিকিৎসার জন্য তার সংগ্রাম কাহিনী সোশ্যাল মিডিয়ায় তুলে ধরেন এক সন্তান। তার সেই পোস্ট ঝড়ের বেগে ভাইরাল হয়।
উত্তরপ্রদেশের পল্লব সিং সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে শেয়ার করেছেন, তার বাবার হৃদপিণ্ড মাত্র ২০ শতাংশ কাজ করছে। বেঁচে থাকার জন্য অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। পোস্টটি নেটিজেনদের আবেগপ্রবণ করে তুলেছে। অভিনেতা সোনু সুদ সহ অনেকে তাকে সাহায্যের প্রস্তাব দিয়েছেন। নেটিজেনরা কমেন্টে লিখেছেন, 'আমরা আপনার বাবাকে কোনভাবেই হারতে দেব না।"
সোমবার এক্স-এ এক পোস্টে সিং লিখেছেন, “আমার বাবা মারা যাবেন, শীঘ্রই বা খুব শীঘ্রই। হ্যাঁ, আমি জানি আমি কি বলছি। দিল্লি AIIMS-এ দাঁড়িয়ে আমি এটা লিখছি।” তিনি বলেন, তিনি একটি মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে এসেছেন চিকিৎসা করাতে। চিকিৎসার জন্য সে পরিমাণ বিল তিনি হাসপাতালের তরফে পেয়েছেন তা দেওয়া তার পক্ষে কোন ভাবেই সম্ভব নয়"।
তিনি আরও বলেন, "বাবার ১৫ সেপ্টেম্বর হার্ট অ্যাটাক হয়। নিজ শহর দেওরিয়া থেকে গোরখপুরের নিকটতম স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যান। তার তিনটি ধমনীতে ব্লকেজ ধরা পড়ে এবং তাকে বলা হয়েছিল যে তার হৃদপিন্ড মাত্র ২০ শতাংশ কাজ করছে। নভেম্বরের শেষের দিকে তার বাবাকে দিল্লিতে নিয়ে আসেন এবং তার বোন ২৪ ঘন্টা টানা লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন দিল্লির এইমস-এ কার্ডিওলজিস্টের অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেতে। তারপরে তাকে একটি পরীক্ষার জন্য একটি ডেট দেওয়া হয় যা প্রায় সাত দিন পর"। সিং আরও লেখেন, 'যদিও বাইরে থেকে সেই পরীক্ষা করানোর পর “এক অত্যন্ত স্বনামধন্য সিনিয়র অধ্যাপক, পদ্ম পুরস্কারপ্রাপ্ত, আমার বাবাকে দেখেন। বলেন হার্ট খুব দুর্বল, ওষুধ লিখে দিয়ে চলে যেতে বলেন। হ্যাঁ, পরে... কোন তারিখ নেই!"
কিছু সময় পরে, তারা বুঝতে পেরেছিল যে রোগটি গুরুতর এবং জরুরি অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন। সিং অবাক হয়েছিলেন কেন ডাক্তার তার বাবাকে একজন সার্জনের কাছে রেফার করেননি। ৪৫ দিন ধরে বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে যাওয়ার পর, তিনি বুঝতে পেরেছিলেন যে একটি বেসরকারী হাসপাতালে অস্ত্রোপচার করতে যা খরচ তাতে তাদের ঘর বাড়ি সব বিক্রি করতে হবে।
তাই, তিনি AIIMS-এ ফিরে আসেন এবং ডাক্তারের সঙ্গে অ্যাপয়েন্টমেন্টের জন্য লাইনে দাঁড়ান। ডাক্তার ছুটিতে ছিলেন এবং ১৫ দিন পর ডাক্তার তাদের অস্ত্রোপচারের জন্য রেফার করেন। AIIMS-এর সিএন টাওয়ারের এক কাউন্টার থেকে অন্য কাউন্টারে যাওয়ার পরে, অবশেষে তিনি একই দিনে সার্জেনে অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেয়েছিলেন। “দুপুর ২ টো'য় অ্যাপয়েন্টমেন্ট থাকলেও, ডাক্তার আসেন সন্ধা ৬টায়।
ডাক্তার তাদের কাগজপত্র রেখে পরের দিন আসতে বলেন। যাইহোক, যখন তারা পরের দিন আসেন পাঁচ ঘন্টা অপেক্ষা করে, তাদের বলা হয়েছিল ডাক্তার নেই। ডেট দেওয়া হয় পরের সোমবার। সোমবার লাইনে বাবাকে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে করতে তিনি লেখেন, আজ সোমবার অপেক্ষার আরেকটি দিন। তিনি আরও লেখেন, “আমার বাবা একজন ডায়াবেটিক রোগী। যার বয়স ৫২ বছর, হার্টের কার্যকারিতা ২০%। তার অস্ত্রোপচারের জন্য কমপক্ষে ১৩ মাস অপেক্ষা করতে হবে। হ্যাঁ ১৩মাস এবং বিনামূল্যে নয়, অন্তত এক লাখ টাকা দিয়ে” । এই পোস্টটি নজরে পড়ে অভিনেতা সোনু সুদের।
সোনু সুদ সিংয়ের টুইটটি রি পোস্ট করে লিখেছেন, “আমরা আপনার বাবাকে মরতে দেব না। আমাকে সরাসরি আমার ব্যক্তিগত টুইটার আইডি ইনবক্সে আপনার নম্বরটি মেসেজ করুন ..”।