Advertisment

মুসলিমের ছোঁয়া খাবার নেবেন না, সোশ্যাল মিডিয়ার কোপে হায়দরাবাদি গ্রাহক

অনেকেই উল্লেখ করেছেন যে, যে রেস্তোরাঁ থেকে খাবার অর্ডার করা হয়েছিল, তার মালিক মুসলিম, সম্ভবত বাবুর্চিও তাই, অতএব ওই গ্রাহকের খাবার নিতে অস্বীকার করা 'চূড়ান্ত ভণ্ডামির' নিদর্শন।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
swiggy muslim delivery person hyderabad

যিনি খাবার ডেলিভারি করছেন তিনি মুসলিম, অতএব সেই খাবারের ডেলিভারি নেবেন না, এই অভিযোগে পুলিশের খাতায় নাম উঠল হায়দরাবাদের এক বাসিন্দার। শহরের আদিলাবাদ নর্থ এলাকার ওই বাসিন্দা ফুড ডেলিভারি অ্যাপ সুইগিতে ফলকনামা এলাকায় অবস্থিত গ্র্যান্ড বাওয়ার্চি রেস্তোরাঁ থেকে চিকেন ৬৫ অর্ডার করেছিলেন, এবং অনলাইনে বিল মিটিয়েছিলেন।

Advertisment

কিন্তু অর্ডার দেওয়ার সময়ই 'স্পেশাল ইন্সট্রাকশন' বিভাগে তিনি লিখে দেন, খাবারের ডেলিভারি যেন কোনও হিন্দুকে দিয়ে করানো হয়। তাঁর বক্তব্যের সারমর্ম, "তেলমশলা কম হবে। আর দয়া করে হিন্দু প্রেরক (ডেলিভারি পার্সন) বাছবেন। সমস্ত রেটিং এর ওপরেই নির্ভর করবে।"

যেহেতু ওই অ্যাপে স্বয়ংক্রিয় ভাবেই নির্বাচিত হয় প্রেরকের নাম, সেহেতু এই অনুরোধ রাখা সম্ভব হয়নি। সুতরাং ডেলিভারি এক্সিকিউটিভ গ্রাহকের সঙ্গে যোগাযোগ করলে তিনি তাঁর আদেশ অমান্য করা হয়েছে, এই যুক্তিতে খাবারের ডেলিভারি নিতে অস্বীকার করেন। এরপর ওই ডেলিভারি এক্সিকিউটিভ বিষয়টি নিয়ে দ্বারস্থ হন মুসলিম সংগঠন মজলিস বাঁচাও তেহরিক তথা তার সভাপতি আমজাদউল্লা খানের। গোটা বিষয়টি নিয়ে টুইট করেন খান, এবং সেই টুইট ভাইরাল আকার ধারণ করে সোশ্যাল মিডিয়ায়।

শালিবান্দা থানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, মুদাসসির সুলেমান নাম সুইগি-র এক কর্মী তাঁদের কাছে অভিযোগ করেছেন যে মুসলিম প্রেরকের হাত থেকে খাবার গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছেন ওই গ্রাহক। "আমরা তাঁর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করছি, এফআইআর-ও শিগগিরি দায়ের হবে।," সংবাদ সংস্থা পিটিআই-কে জানান ইন্সপেক্টর পি শ্রীনিবাস।

সোশ্যাল মিডিয়ায় এই ঘটনার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছেন একাধিক মানুষ। অনেকেই উল্লেখ করেছেন যে, যে রেস্তোরাঁ থেকে খাবার অর্ডার করা হয়েছিল, তার মালিক মুসলিম, সম্ভবত বাবুর্চিও তাই, অতএব ওই গ্রাহকের খাবার নিতে অস্বীকার করা 'চূড়ান্ত ভণ্ডামির' নিদর্শন। গ্রাহকের সমালোচনা করার পাশাপাশি অনেকে এমন পরামর্শও দিয়েছেন যে ভবিষ্যতে নাম নয়, স্রেফ ফোন নম্বর প্রকাশ করা হোক ডেলিভারি এক্সিকিউটিভের, যাতে কারোর ধর্ম চিহ্নিত না করা যায়।

swiggy muslim delivery boy টুইটার থেকে স্ক্রিনশট

এক বিবৃতিতে সুইগি জানিয়েছে, "আমরা বৈচিত্র্যকে আলিঙ্গন করি, এবং বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিকে সম্মান করি। প্রতিটি অর্ডার স্বয়ংক্রিয়ভাবে এলাকা এবং সেখানে উপস্থিতির ভিত্তিতে কোনও এক্সিকিউটিভকে দেওয়া হয়, ব্যক্তিগত পছন্দের ভিত্তিতে নয়। আমাদের সংস্থার নীতি, আমরা কোনো কারণেই আমাদের পার্টনার এবং গ্রাহকদের মধ্যে বৈষম্য দেখি না।"

উল্লেখ্য, গত জুলাই মাসে একই ধরনেরই একটি ঘটনা ঘটে আরেক ডেলিভারি অ্যাপ জোমাটো-কে কেন্দ্র করে। জোমাটো অ্যাপ ব্যবহারকারী মধ্যপ্রদেশের এক ব্যক্তি ওই সংস্থার কাছে অভিযোগ করেন যে তাঁর খাবারের ডেলিভারি দিতে “এক অ-হিন্দু রাইডারকে” দায়িত্ব দিয়েছে জোমাটো। জবাবে টুইট করে সংস্থার সিইও দীপিন্দর গোয়েল লেখেন, “আমাদের মূল্যবোধের রাস্তা আটকে দাঁড়ায় যে নীতি, তাকে বর্জন করার ফলে ব্যবসার ক্ষতি হলেও আমাদের কোনও আফসোস নেই।”

Advertisment