রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রায় ১০ দিন অতিক্রান্ত। যুদ্ধে ক্ষতবিক্ষত ইউক্রেন। চারিদিকে শুধুই হাহাকার, আর্তনাদ। ইউক্রেনের একাধিক শহরে এখনও আটকে রয়েছেন অসংখ্য ভারতীয় পড়ুয়া। এরই মাঝে এক ভারতীয় গল্প ভাইরাল হয়েছে, নেটদুনিয়ায়। জানা গিয়েছে ডেনমার্কে বসবাসকারী ওই ভারতীয়ের নাম রৌনক রাওয়াল।
ইউক্রেনের কঠিন সময়ে তিনি এগিয়ে এসেছেন একজন পরিত্রাতা হিসাবে। যুদ্ধ বিধ্বস্ত মানুষগুলোর পাশে থেকে তাদের উদ্ধারের কাজে হাত লাগিয়েছে রৌনক। তাঁর এই গল্প শুধু যে হৃদয়গ্রাহ্য তাই নয়, অনুপ্রেরণাও দেয় লাখ মানুষকে। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর অনুসারে রৌনক যুদ্ধের সময় প্রাণের ঝুঁকি নিয়েও ইউক্রেনে প্রবেশ করেছেন।
সেখানে আটকে থাকা এক মা এবং তাঁর দু’মাসের দুধের শিশুকে উদ্ধার করেন তিনি। প্রকৃত অর্থে রৌনক একজন হিরো। শুধু এতেই দমে যাননি তিনি। আটকে পড়া ভারতীয় পড়ুয়াদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে দিতে অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন তিনি। কয়েক ডজন ছাত্র ছাত্রী যুদ্ধ বিধ্বস্ত নাগরিকদের উদ্ধার করে নিরাপদে সরিয়ে নিয়ে গেছেন তিনি। একটি ভিডিওতে তাকে বলতে শোনা গিয়েছে, ইউক্রেন সীমান্তে মা এবং সন্তান আটকে পড়েছিলেন, তিনি তাদের উদ্ধার করে ভারতে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।
এদিকে ১০দিন কেটে গেলেও যুদ্ধ থাকার এখনও কোন ইঙ্গিত নেই। শনিবারের যুদ্ধ বিরতির পর রাশিয়া আক্রমণের তীব্রতা বাড়িয়েছে। একের পর এক শহরে জারী রয়েছে মিসাইল হানা। রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের তরফে আরও বলা হয়েছে, ইউক্রেনজুড়ে রাশিয়ান সেনার আক্রমণে বেশ কয়েকটি শহর দখলে এসেছে। ইন্টারফ্যাক্স নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে, রুশ বাহিনী গুলি করে নামিয়েছে চারটি ইউক্রেনীয় Su-27 জেট। অন্যদিকে, TASS নিউজ এজেন্সি জানিয়েছে ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের সঙ্গে রাশিয়ার যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে রাশিয়ান বাহিনী স্থলপথে চালানো হামলায় ৬৯টি বিমান ধ্বংস করেছে।
একইভাবে আকাশপথে হামলা চালিয়ে ২১টি বিমান ধ্বংস করা হয়েছে। শনিবার যুদ্ধের দশম দিনে ইউক্রেনে সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে রাশিয়া। শনিবার ভারতীয় সময় সকাল ১১.৩০টায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছিল। আটকে থাকা সাধারণ নাগরিকদের নিরাপদে বেরতে সময় দিতেই ওই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছিল। মারিউপোল, ভলনোখোভা দিয়ে ‘হিউম্যান করিডোর’ করে সাধারণ নাগরিকদের বেরনোর সুযোগ দেয় রুশ সেনা। মস্কোর সময় সকাল ১০টা থেকে ওই যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু পরে সেই যুদ্ধবিরতি উঠে যায়। তারপর থেকেই ফের ইউক্রেনে মুহুর্মুহূ গোলাবর্ষণ শুরু করেছে রুশ সেনা। এদিকে, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন শনিবার জানিয়েছেন, মস্কো ইউক্রেনের উপর নো-ফ্লাই জোন ঘোষণা করাকে “সশস্ত্র সংঘাতে অংশগ্রহণ” হিসেবেই বিবেচনা করবে।