মৃত নয়, ইন্দোনেশিয়ার ঘুমন্ত আগ্নেয়গিরি মাউন্ট মেরাপি। রবিবার হঠাৎই জেগে ওঠে এই আগ্নেয়গিরি। শুরু হয় লাভা ও ধোঁয়া উদ্গীরণ। সঙ্গে গলগল করে বেরোতে থাকে ছাই। গরম হয়ে ওঠে ইন্দোনেশিয়ার সাংস্কৃতিক রাজধানী যোগজাকার্তার কাছাকাছি গোটা এলাকা। দ্রুতগতিতে আগ্নেয়গিরি সংলগ্ন বেশ কিছু গ্রাম ঢেকে গিয়েছে ছাই ও গ্যাসে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম মারফৎ জানা গিয়েছে, আগ্নেয়গিরি থেকে ছাই ধোঁয়া বেরিয়ে আকাশ ছুঁয়েছে। ধোঁয়ার স্তম্ভের উচ্চতা হয়েছে প্রায় ছয় কিলোমিটার (চার মাইল)। শনিবার থেকেই স্থানীয় বাসিন্দাদের সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে তিন কিলোমিটার দূরবর্তী স্থানে। প্রশাসনের তরফে মাউন্ট মেরাপি সংলগ্ন অঞ্চল খালি করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
ইন্দোনেশিয়ার জাভা দ্বীপে অবস্থিত মাউন্ট মেরাপি। যার উচ্চতা ২,৯৩০ মিটার। এই অঞ্চলে একাধিক আগ্নেয়গিরি রয়েছে, যেগুলি প্রায়শই জেগে উঠে উদ্গীরণ ঘটায়। তবে মাউন্ট মেরাপির মতো সক্রিয় আর একটিও নয়। রবিবার মোট দু'বার বিস্ফোরণ ঘটায় মেরাপি। দুটিরই স্থায়িত্ব থাকে প্রায় সাত মিনিট করে। এখনও কোনও হতাহতের খবর জানা যায় নি। চলতি বছরের মার্চ মাসেও জেগে উঠেছিল মেরাপি।
দেখুন সেই ভিডিও
Indonesia's most volatile volcano Mount Merapi erupted today.
Merapi spewed ash and hot gas in a massive column as high as 3.7 miles on Sunday morning. pic.twitter.com/5lnpECmm6p
— Alex Journey (@alexjourneyID) June 21, 2020
Volcanic ash rain following Mount Merapi eruption this morning. pic.twitter.com/IwdtwRtD9C
— Alex Journey (@alexjourneyID) June 21, 2020
ERUPTION: Indonesia's Mount Merapi volcano spews ash and hot gas in a towering column as high as 3.7 miles into the sky. https://t.co/HVnDw6yaog pic.twitter.com/In3xTDQi3I
— ABC News (@ABC) June 21, 2020
Mount Merapi on Java Island had a volcanic eruption this morning ???????? https://t.co/lxuOdKKvRP
— Andreas Harsono (@andreasharsono) June 21, 2020
#merapi ya rob pic.twitter.com/eqJAyEhGbi
— balapsapi (@YAlhafara) March 27, 2020
ভয়ঙ্কর হতে পারে মেরাপি
সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে মাউন্ট মেরাপির উদ্গীরণ। কারণও রয়েছে যথেষ্ট। আজ থেকে দশ বছর আগে ২০১০ সালে সত্যিই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠেছিল মেরাপি। সেসময় প্রাণ গিয়েছিল ৩০০ জনেরও বেশি মানুষের, ঘরছাড়া হয়েছিলেন প্রায় তিন লক্ষ। এর আগে ১৯৯৪ সালে মেরাপির আরও একটি অগ্ন্যুৎপাতে মৃত্যু হয় ৬০ জনের, এবং ১৯৩০ সালে প্রাণ হারান ১,৩০০ জন।
প্রশান্ত মহাসাগরে অবস্থিত 'অগ্নি বলয়', যে এলাকায় মিলন ঘটে একাধিক টেকটনিক প্লেটের। এই বলয়ের মধ্যে রয়েছে ১৭ হাজারেরও বেশি ছোটবড় দ্বীপ এবং প্রায় ১৩০টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি। এবং এই বলয়েরই অংশ হলো ইন্দোনেশিয়া, যার ফলে অগ্ন্যুৎপাত এই দেশের নাগরিকদের দৈনন্দিন জীবনের অঙ্গই বলা চলে। ইন্দোনেশিয়াতেই অবস্থিত ক্রাকাতোয়া দ্বীপের আগ্নেয়গিরি, ১৮৮৩ সালে যার বিস্ফোরণে প্রাণ হারান ৩৬ হাজারের বেশি মানুষ, ধ্বংস হয়ে যায় ১৬৫টি গ্রাম। বিস্ফোরণের তীব্রতা ছিল ২০০ মেগাটন টিএনটি-র সামিল, যার ফলে মানচিত্র থেকে মুছে যায় ক্রাকাতোয়া দ্বীপের দুই-তৃতীয়াংশ।
মেরাপির বিস্ফোরণের পর ইন্দোনেশিয়ার ভূতাত্ত্বিক বিভাগ এলাকার ওপর দিয়ে উড়ে যাওয়া বিমানগুলির উদ্দেশে হুঁশিয়ারি জারি করলেও এই আগ্নেয়গিরি সম্পর্কে সতর্কবার্তায় কোনও পরিবর্তন এখনও করা হয় নি। উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের মে মাসে একাধিক অগ্ন্যুৎপাতের ফলে মেরাপির ক্ষেত্রে 'সাবধান' থাকার বার্তা দেয় দেশের সরকার। সেসময় প্রায় ৫.৫ কিলোমিটার উচ্চতায় পৌঁছে যায় ধোঁয়ার স্তম্ভ।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন