চাকরি ছেড়ে কঠিন লড়াইয়ে পাশে মা, IAS হয়ে সেরা উপহার মেয়ের, এমন কাহিনী ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। যে কোন ছেলে-মেয়ের সাফল্যের পিছনে মা-বাবার ভুমিকাকে কোনভাবেই অস্বীকার করা যায় না। মেয়ের সাফল্যের জন্য নিজের চাকরি ছাড়েন মা। আইএএস জাগৃতি অবস্থি মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা। তিনি সোশ্যাল মিডিয়াতে খুব সক্রিয় থাকেন। আইএএস জাগ্রতি অবস্থি সুযোগ পেয়ে তাঁর মাকে মিরাটে তাঁর অফিসে নিয়ে যান।
আইএএস জাগৃতি অবস্থির এই ছবিতে তার মাকে তার চেয়ারে বসে থাকতে দেখা যাচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ইনস্টাগ্রামে জাগৃতির ফলোয়ারের সংখ্যা ১ লাখ ৩৬ হাজার। মা ও মেয়ের এই ভাইরাল ছবি এখন পর্যন্ত ৬৮ হাজারের বেশি ব্যবহারকারী লাইক করেছেন। একই সময়ে, ৬০০ জনেরও বেশি এই বিষয়ে মন্তব্য করেছেন।
UPSC পরীক্ষা শুধু দেশেই নয় বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন পরীক্ষাগুলির মধ্যে একটি। এই প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার যারা সফল হন তাদের বিষয় নিয়ে সাধারণের মধ্যে একটা কৌতুহল কাজ করে। প্রত্যেক টপারেরই সফলতার পিছনে রয়েছে কোন না কোন কাহিনী যা আমাদের অনুপ্রেরণা জোগায়। UPSC তে সফল হতে কঠোর পরিশ্রমের সঙ্গে চায় নিয়মিত অনুশীলন ও অধ্যাবসায়। UPSC ২০২০ টপার জাগ্রতি অবস্থি মধ্যপ্রদেশের বাসিন্দা। তার সাফল্যের গল্প সকলের জন্য এক অনুপ্রেরণা।
UPSC ২০২০ সালের সেকেন্ড টপার জাগৃতি অবস্থির মা মেয়ের সংগ্রামে বরাবরই পাশে ছিলেন। মেয়েকে UPSC টপার বানানোর জন্য নিজের চাকরি চাকরি ছেড়ে দিয়েছিলেন তিনি। এমনকী অবসরে পরিবারের বিনোদনের সবচেয়ে বড় মাধ্যম টিভির কেবিল কানেকশনও বন্ধ করে দেন তিনি। জাগৃতি তার মায়ের এই সকল ত্যাগকে সার্থক করেছেন।
মধ্যপ্রদেশের জাগৃতি অবস্থি ২০২০ সালের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেন। ভোপালের মৌলানা আজাদ ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (MANIT) থেকে ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করে ভারত হেভি ইলেকট্রিকলস লিমিটেড (BHEL) এ নিজের কর্মজীবন শুরু করেন তিনি। কিন্তু IAS হওয়ার স্বপ্ন যেন কিছুতেই ছাড়তে চায়নি তাকে। স্বপ্ন পূরণের জন্য, তিনি চাকরি ছেড়ে UPAC-এর জন্য প্রস্তুতি নিতে শুরু করেন।
জাগৃতি প্রথমবার ইউপিএসসি পরীক্ষায় ব্যর্থ হন। এমনকী তিনি প্রিলিও পাস করতে পারেন নি। ফলাফলের পরে হতাশ না হয়ে, তিনি কঠোর পরিশ্রম শুরু করেন সফলতার দ্বিতীয়বারের চেষ্টাতেই বাজিমাত। জাগৃতি ২০২০ সালের সিভিল সার্ভিস পরীক্ষায় দ্বিতীয় স্থান অধিকার করে সকলকে চমকে দেন।
প্রতিদিন ১২ থেকে ১৪ পর্যন্ত পড়াশোনা করতেন তিনি। মক টেস্ট এবং রিভিশনে্র দিকেও বিশেষ ফোকাস করেন তিনি। কোচিং সেন্টারে UPSC-এর প্রস্তুতি শুরু করলেও লকডাউনের কারণে তাকে ভোপালে বাড়িতে ফিরতে হয়েছিল। বাবা-মা ছাড়াও ভাইও রয়েছে জাগৃতির। বাবা পেশায় হোমিওপ্যাথ চিকিৎসক এবং মা স্কুল শিক্ষিকা। মেয়ের স্বপ্ন পূরণের জন্য মা চাকরি ছেড়ে মেয়ের প্রস্তুতিতে সাহায্য করেন। জাগৃতির এই কাহিনী সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতেই তা অনুপ্রাণিত করেছে হাজার হাজার শিক্ষার্থীকে।