অসুস্থ বাবার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন বিপুল পরিমাণে অর্থ। ব্যাঙ্কে জমানো টাকা থাকা সত্বেও তা দীর্ঘদিন ধরে তুলতে না পেরে চরম পথ বেছে নেন লেবাননের বছর ৪২-এর এক ব্যক্তি। বন্দুক হাতে সটান ঢুকে পড়েন ব্যাঙ্কে। ১০ জন ব্যাঙ্ক কর্মীকে নিজের হেফাজতে নিয়ে চিৎকার করে তার ন্যায্য অর্থের দাবি জানাতে থাকেন তিনি। বাসম আল-শেখ হুসেন পেশায় এক ফুড ডেলিভারি সংস্থার গাড়ির চালক।
শান্ত স্বভাবের হুসেনই যে টাকার জন্য এই কাজ করতে পারেন তা অনেকেই বিশ্বাস করতেই পারছেন না। তবে হুসেনের সমর্থনে কাতারে কাতারে মানুষ সুর চড়িয়েছেন। অধিকাংশের দাবি দেশ চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে রয়েছে যেখানে ব্যাঙ্ক থেকে নগদ তোলাতেও রয়েছে নিষেধাজ্ঞা। হুসেনের সমর্থকরা দেশের ভয়াবহ অর্থনৈতিক পরিস্থিতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে ঘটনাস্থলে জড়ো হয়েছিল। কেউ কেউ তাকে ‘প্রকৃত হিরো’ বলেও বর্ণনা করেছেন।
ঠিক কী ঘটেছিল? সংবাদ সংস্থা এএফপি জানিয়েছে হুসেনের বাবা গুরুতর অসুস্থ । হাসপাতালে ভর্তি। চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন বিপুল পরিমাণে অর্থ। এমন অবস্থায় অর্থের জোগান করে উঠতে না পেরে, নিজের জমানো অর্থ আদায়ের জন্য দুপুর ১২ টা ৩০মিনিট নাগাদ ফেডারেল ব্যাংকের একটি শাখায় প্রবেশ করেন যেখানে তার জমানো প্রায় ২লক্ষ ১০ হাজার ডলার রয়েছে। প্রথমে ব্যাঙ্ক কর্মীরা তা দিতে অস্বীকার করতে হুসেন চিৎকার করতে থাকেন। শেষে বন্দুক উঁচিয়ে ৮ জন ব্যাঙ্ক কর্মী এবং ২ জন গ্রাহককে নিজের হেফাজতে নেন তিনি। প্রায় ১০ ঘণ্টার রুদ্ধশ্বাস নাটক শেষে ব্যাঙ্কের তরফে তার সঞ্চিত অর্থ থেকে মাত্র ৩৫ হাজার ডলার দিতে রাজি হওয়ায় হুসেন নিজেকে পুলিশের কাছে আত্মসর্মপন করেন”।
আরও পড়ুন অপার দেশপ্রেম! চোখে জাতীয় পতাকা এঁকে নেটদুনিয়ায় হুলস্থূল ফেললেন শিল্পী, মুহূর্তেই ভাইরাল!
এবিষয়ে কথা বলতে গিয়ে হুসেনের স্ত্রী বলেন, এই অবস্থায় তার স্বামী যা করার তাই করেছেন। অন্যদিকে হুসেনের এক ভাই সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, “ দাদার মত সজ্জন মানুষ খুব কমই আছেন। কিন্তু এমন অবস্থায় মাথা ঠিক রাখা কঠিন যেখানে বাবা মৃত্যু শয্যায় রয়েছেন”। লেবাননের ব্যাংক কর্মচারী ইউনিয়নের প্রধান জর্জ আল-হাজ বলেছেন এটা নজিরবিহীন ঘটনা। তবে আমাদের সাবধান হতে হবে ভবিষ্যতে এই ধরণের ঘটনা আরও বাড়তে পারে। দেশের অর্থনীতির একটা আমূল সমাধান দরকার। জনগণের মধ্যে ক্ষোভ যে হারে বাড়ছে তাতে ব্যাঙ্কে কাজ করতে কর্মচারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন।