করোনায় যখন অসুস্থ বাংলা, মুক্তির পথ খুঁজছে। প্রিয়জনকে হারিয়ে দুঃখে কাতর বাঙালি, তখন দুঃসময়ের মধ্যেও প্রেম খুঁজে পেয়েছেন দুই প্রবীণ। কলকাতারই দুই 'তরুণ' বুড়ো-বুড়ি প্রেম খুঁজে পেলেন করোনা কালে। ৬৬ বছরের 'যুবক' তরুণকান্তি পাল এবং ৬৩ বছরের 'যুবতী' স্বপ্না রায় গত ২৫ নভেম্বর ছোট ঘরোয়া অনুষ্ঠানে প্রেমকে পরিণতি দিলেন। খারাপ সময়ের মধ্যেও এই খবর যেন মুক্ত বাতাসের মতো।
তরুণবাবুর ছেলে সায়ন পালই এই বিয়ের অনুঘটক। তিনিই গত ২৭ নভেম্বর বিয়ের কথা টুইট করেন। দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে তিনি জানিয়েছেন, দুবছর আগেও একই গ্রামে থাকা সত্ত্বেও একে অপরকে চিনতেন না তরুণ ও স্বপ্না। কিন্তু বাবার বিয়ে দিতে পেরে খুশিতে সায়ন টুইট করেন, আমি খুব খুশি যে ওরা আবার প্রেম ফিরে পেয়েছে। সায়ন জানিয়েছেন, ভট্টনগরে রামকৃষ্ণ মিশন মঠে মা সারদার জন্মবার্ষিকী উদযাপনের সময় দুবছর আগে প্রথম আলাপ হয় দুজনের। তারপর ফোনেই কথাবার্তা হত তাঁদের। সায়ন বলেছেন, "যেহেতু আমার মা মারা গিয়েছেন, তারপর স্বপ্নাই হলেন দ্বিতীয় মহিলা যাঁর সঙ্গে বাবা এতটা মিশতে পেরেছেন। আমি না থাকলে খুবই একাকীত্বে ভুগতেন বাবা।" বর্তমানে কানাডা নিবাসী সায়ন।
রামকৃষ্ণ মিশন মঠে মা সারদার জন্মবার্ষিকী উদযাপনের সময় দুবছর আগে প্রথম আলাপ হয় দুজনের।
এরপর কথাবার্তা যত এগিয়েছে তত সম্পর্কও এগিয়েছে দুজনের। তারপর একদিন স্বপ্নাদেবীই বিয়ের প্রস্তাব দেন আর তাতে রাজি হয়ে যান তরুণবাবু। অতিমারীর মধ্যেই দুজনে প্রেমে পড়েনে একে অপরের। আর অতিমারীর মধ্যেই দুজনে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। একে অপরের সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটানোর এটাই সঠিক সময় জানিয়েছেন সায়ন। ঘনিষ্ঠ বৃত্তের মধ্যে ঘরোয়া অনুষ্ঠানে চার হাত এক হয় তাঁদের। তরুণবাবু ও স্বপ্নাদেবী জানেন না এই অতিমারী আবহে কতদিন বাঁচবেন, কিন্তু যতদিন বাঁচবেন একে অপরের জন্য বাঁচতে চান দুজনে। কে বলেছে মানুষ ভালবাসতে ভুলে গিয়েছে? একবার এঁদের দেখে যান, লজ্জায় পড়ে যাবেন!
Read the full story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন