Advertisment

ভিন্ন ধর্মের ছোঁয়া লেগে খাবার 'অপবিত্র', অর্ডার বাতিল করে ধিক্কারের মুখে জোমাটো ব্যবহারকারী

তাঁর অভিযোগ সোশ্যাল মিডিয়ায় দৃষ্টি আকর্ষণ করতে শুরু করলে এবার টুইটার ময়দানে নামে সংস্থাও, বলে, "খাবারের কোনও ধর্ম হয় না। খাবার তো নিজেই একটা ধর্ম।"

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
zomato food is religion tweet

ফুড ডেলিভারি অ্যাপ জোমাটোতে ভিন্ন ধর্মের ডেলিভারি ম্যানের 'ছোঁয়া লাগা' খাবার খাবেন না, এই অজুহাতে অর্ডার বাতিল করলেন এক ব্যক্তি। কিন্তু এই আচরণের প্রতিবাদে জোমাটোর দৃঢ় অবস্থান মন জয় করে নিয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ার।

Advertisment

সম্প্রতি জোমাটো অ্যাপ ব্যবহারকারী এক ব্যক্তি ওই সংস্থার কাছে অভিযোগ করেন যে তাঁর খাবারের ডেলিভারি দিতে "এক অ-হিন্দু রাইডারকে" দায়িত্ব দিয়েছে জোমাটো। এরপর তিনি টুইটারে পোস্ট করেন, সংস্থা জানিয়েছে যে "তারা রাইডার বদলাবে না এবং অর্ডার বাতিল হলে টাকা ফেরত দেবে না"। ক্যান্সেলেশন চার্জ দিতে হওয়ায় অত্যন্ত ক্ষুব্ধ ওই ব্যক্তি আইনি পদক্ষেপের হুমকিও দেন।

"@ZomatoIN আমাদের বাধ্য করছে এমন কিছু লোকের থেকে ডেলিভারি নিতে যাদের আমরা চাই না, অথচ তা না করলে ওরা রিফান্ডও দেবে না, সহযোগিতাও করবে না। আমি এই অ্যাপ ডিলিট করে দিচ্ছি এবং আমার উকিলদের সঙ্গে এ বিষয়ে পরামর্শ করব," টুইটে লেখেন ওই ব্যক্তি।


এতেই শেষ নয়, তিনি সংস্থার হেল্প ডেস্কের সঙ্গে তাঁর চ্যাট মারফত কথোপকথনও প্রকাশ্যে আনেন, যেখানে সংস্থার তরফে তাঁর রাইডারকে নিয়ে সমস্যার কথা জানতে চাওয়া হয়। তাঁর উত্তর, "আমাদের শ্রাবণ চলছে, আমি কোনও মুসলমানের কাছ থেকে ডেলিভারি নিতে চাই না।"

জবাবে সংস্থা জানায়, যেহেতু ওই রাইডার ইতিমধ্যেই অর্ডার তুলে নিয়েছেন, সেহেতু এখন ক্যান্সেল করতে গেলে ২৩৭ টাকা দিতে হবে ওই ব্যক্তিকে। তাঁর পাল্টা অভিযোগ, তাঁর অর্ডার সংক্রান্ত কোনোরকম তথ্যই তিনি আর অ্যাপে দেখতে পাচ্ছেন না, কারণ তাঁকে ব্লক করে দিয়েছে সংস্থা।


তাঁর অভিযোগ সোশ্যাল মিডিয়ায় দৃষ্টি আকর্ষণ করতে শুরু করলে এবার টুইটার ময়দানে নামে সংস্থাও, বলে, "খাবারের কোনও ধর্ম হয় না। খাবার তো নিজেই একটা ধর্ম।"


এর পরেই টুইট করেন সংস্থার সিইও দীপিন্দর গোয়েল, যাতে তিনি সংস্থার সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানান।

দীপিন্দর লেখেন, "ভারতের ভাবনা আমাদের গর্ব - যেমন আমাদের সম্মানীয় গ্রাহক এবং অংশীদাররা আমাদের গর্ব। আমাদের মূল্যবোধের রাস্তা আটকে দাঁড়ায় যে নীতি, তাকে বর্জন করার ফলে ব্যবসার ক্ষতি হলেও আমাদের কোনও আফসোস নেই।"


সংস্থা এবং তার সিইও-র এই অবস্থানকে সাদরে গ্রহণ করেছেন অসংখ্য নেটিজেন, যাঁদের রোষের মুখে পড়েছেন ওই ব্যক্তি। অনেকেই একথাও লিখেছেন যে ভিন্নধর্মী কারোর কাছ থেকে খাবার ডেলিভারি না নেওয়ার তথাকথিত প্রথার হিন্দুধর্মে আদৌ কোনও ভিত্তি নেই।


প্রসঙ্গত, এর আগেও ধর্মীয় বিতর্কে জড়িয়েছে অ্যাপ-ভিত্তিক পরিষেবা প্রদানকারী। গত বছর মুসলমান ড্রাইভার থাকার কারণে তাঁর ভাড়া করা অ্যাপ ক্যাব বাতিল করেন বিশ্ব হিন্দু পরিষদের এক কর্মী। সেই ঘটনার পরেও ব্যাপক নিন্দা এবং ধিক্কারের মুখে পড়েন তিনি।

Advertisment