রবিবার সকালবেলা হোক অথবা কোন ছুটির দিনে, জন্মদিনের পার্টি অথবা বিশেষ কোন ইভেন্ট আমরা সকলেই বর্তমানে অনলাইন ফুড ডেলিভারি সংস্থার ওপর নির্ভর করে থাকি। তেমনই এক অনলাইন ফুড ডেলিভারি এজেন্টের কাহিনী সম্প্রতি ভাইরাল হয়েছে নেটদুনিয়া। যা রীতিমত চোখে জল এনেছে অনেকের।
দিনটা ছিল রবিবার। রোজ অফিস-কাজে ক্লান্ত হয়ে রবিবার সকালে দেরি করে ঘুম থেকে উঠেই ব্যাঙ্গালুরু এক ব্যক্তি জোম্যাটো অ্যাপে সকালের ব্রেক ফাস্ট অর্ডার করেন। প্রায় ৩০ মিনিট অতিক্রান্ত হয়ে গেলে তিনি অধৈর্য হয়ে পড়েন। সটান ফোন করেন ডেলিভারি বয়কে। ফোনের ও প্রান্ত থেকে শান্ত স্বরে সপ্রতিভ জবাব, “আর একটি সময় দিন স্যার, আমি আসছি”। এর পর আবার অপেক্ষা। আর মনে মনে ডেলিভারি বয়ের ওপর রাগ জমা হচ্ছিল রোহিত কুমার সিংয়ের। মিনিট দশেক পরে আবার একটা ফোন করেন ডেলিভারি এজেন্টকে। আবার ফোনের ও প্রান্ত থেকে শান্ত ভাবে জবাব আসে আর মাত্র ৫ মিনিট। আমি এসে গেছি।
কিছুক্ষণ পর বেল বাজতেই দরজার দিকে ছুটে গেলেন রোহিত। ভাবলেন দেরির জন্য ডেলিভারি বয়কে উচিত কথা শোনাবেন। কিন্তু দরজা খুলে ডেলিভারি বয়কে দেখে রোহিতের গোটা শরীর অসাড় হয়ে গেল। শ্রদ্ধায় মাথা নিচু হয়ে আসল। রোহিতের সামনেই দাঁড়িয়ে রয়েছেন বছর ৪০-এর সেই ডেলিভারি এজেন্ট। এলোমেলো চুল, বিধ্বস্ত চেহারা, হাতে ক্র্যাচ। এক মুহূর্তের জন্য রোহিতের মনে হল তার বার বার ফোনে কতটাই না সমস্যার মধ্যে পড়তে হয়েছে সেই ডেলিভারি বয়কে।
আরও পড়ুন: < লাখ লাখ খরচ করে ভোল বদল গাড়ির, স্বাধীনতা দিবসে দিল্লির রাস্তায় নজর কাড়লেন যুবক >
মিনিট খানেকের কথায় রোহিত জানতে পারে ডেলিভারি বয়য়ের নাম কৃষ্ণাপ্পা রাঠোড। তিনি একটি ক্যাফেতে কাজ করতেন। মহামারীর কারণে সেটি বন্ধ হয়ে গেলে তিনি জোম্যাটোর ডেলিভারি বয়য়ের কাজে ঢোকেন। তিন সন্তানের দায়িত্ব তাঁর কাঁধেই। চোখে জল আসে রোহিতের। এমন ঘটনার মুখোমুখি সকাল সকাল হতে হবে ভাবতেই পারেননি রোহিত। নিজের সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে সেই কাহিনী তুলে ধরেন। আর এমন মর্মস্পর্শী কাহিনী ভাইরাল হয় মুহূর্তেই।