Mysuru Book Man: ৫ মাস আগে তাঁর সাজানো লাইব্রেরি পুড়িয়ে দিয়েছিল কয়েকজন দুষ্কৃতী। নতুন করে আবার লাইব্রেরি শুরু করতে এযাবৎকাল দেশ-বিদেশ থেকে প্রচুর বই উপহার পেয়েছেন মাইশুরুর সইদ আইজ্যাক। কিন্তু বই রাখার ঘর বানানোর অনুমতি এখনও পাননি তিনি। প্রতিবার স্থানীয় পুরসভা বিষয়টি ‘দেখছি’ বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও, এখনও দেখে উঠতে পারেনি কেউ। অভিমানের সুরে আইজ্যাক বলেন, ’১২ হাজার কিমি দূর থেকে আমার কাছে বই এসেছে। কিন্তু বাড়ি থেকে ৮ কিমি দূরের প্রশাসনিক ভবন আমাকে এখনও লাইব্রেরি বানানোর অনুমতি দেয়নি।‘
এই বছর এপ্রিলে তাঁর বিয়ের সংগ্রহ-সহ লাইব্রেরি পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। স্থানীয় থানায় অজ্ঞাতপরিচয় দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করেছিলেন আইজ্যাক। তবে হাল ছাড়তে নারাজ এই বৃদ্ধ। তিনি জানিয়েছে, বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে তাঁর কাছে প্রায় ৮ হাজার বই এসেছে। ইউএস, কানাডা, ইংল্যান্ড, দুবাই, দিল্লি, কলকাতা, মুম্বাই—কোনও প্রান্তই বাদ যায়নি। তাই এখনও তিনি স্বপ্ন দেখেন আবার তাঁর সাজানো লাইব্রেরিতে বই পড়তে আসছেন মানুষ।
জানা গিয়েছে, নিজে নিরক্ষর আইজ্যাক। কিন্তু এক দশক আগে মাইশুরু নগরোন্নয়ন পর্ষদকে ধরে একটা জমিতে লাইব্রেরি বানিয়েছিলেন তিনি। সেই লাইব্রেরিতে ছিল প্রায় ১২ হাজার বই। মানুষের মধ্যে জ্ঞানের বিকাশ ঘটাতেই এই উদ্যোগ নিয়েছিলেন ‘নিরক্ষর’ আইজ্যাক। কিন্তু সেই উদ্যোগে জল ঢালে কয়েকজন দুষ্কৃতী।
পোড়া সেই গ্রন্থাগার এখন শুধু ধংসস্তুপ এবং জঞ্জালের স্তুপ। তাও হাল ছাড়তে নারাজ আইজ্যাক। এখনও নিয়ম করে সেই জায়গায় একটা সিমেন্টের চাঙড়ে ২২টি ভিন্ন ভাসার সংবাদ পত্র এবং কিছু বই ণীয়ে বসেন আইজ্যাক। পথচলতি মানুষ নিজেদের ইচ্ছামতো বই এবং কাগজ তুলে পড়েন। আবার চলে যান। তবে আইজ্যাকের এই অস্থায়ী পাঠাগারে সবচেয়ে বেশি ভিড় জমান স্থানীয় অটো রিকশা চালকরা। এভাবেই সকাল ৭টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত ওই জায়গায় ঠায় বসেন আইজ্যাক। খানিকটা অফিসের শিফটের মতোই।
আক্ষেপের সুরে আইজ্যাক বলেছেন, ‘তাঁর ৩০০ বর্গফুট ঘরে বই রাখার জায়গা নেই। শেষবার গ্রন্থাগার বিভাগের কর্মীরা তাঁকে আশ্বাস দিয়েছিল ১২ অগাস্ট তাঁর লাইব্রেরির ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন হবে। সেদিন আবার জাতীয়য় গ্রন্থাগার দিবস। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কেউ যোগাযোগ করেনি। প্রাথমিক ভাবে ৭৫০টি বই দিয়ে বাড়িতেই অস্থায়ী ভাবে শুরু করেছিলাম। কিন্তু বই উপহার বাড়তে থাকলে ঘরে আর জায়গা ধরছিল না।‘
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন