সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানান ধরণের ঘটনা আমাদের সামনে হাজির হয়। এখন যে ঘটনার কথা ভাইরাল হয়েছে তা শুনে দেশনায়কের মহানুভবতাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষ। ডাউন সিনড্রোমে আক্রান্ত এক কিশোরী স্কুলে তার সহপাঠীদের দ্বারা নানান সময়ে ভিন্নভাবে নির্যাতনের শিকার হচ্ছিলেন। এই খবর সরাসরি পৌছায় উত্তর মেসিডোনিয়ার রাষ্ট্রপতি স্টিভো পেনড্রোভস্কির কানে। সেকথা শুনেই তিনি কিশোরীর পাশে এগিয়ে আসেন। এবং সেই কিশোরী যাতে সুষ্ঠ ভাবে ক্লাস করতে পারে তার জন্য তিনি নিজে হাত ধরে সেই কিশোরীকে স্কুলে নিয়ে যান।
এমন ঘটনায় দেশনায়ককে কুর্নিশ জানান, নেটিজেনরা। টুইটারে ভাইরাল হওয়া ছবিগুলিতে দেখা যাচ্ছে তারা পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর গোস্টিভারে তার স্কুল 'এডিনস্টভো'-এ যাওয়ার সময় তিনি এমব্লা অ্যাডেমির হাত ধরে আছেন। যিনি ডাউন সিনড্রোম রোগে আক্রান্ত। ডাউন সিনড্রোম একটি বিশেষ ধরণের জেনেটিক বা জিনগত অবস্থা। ডাউন সিনড্রোম নিয়ে জন্ম নেওয়া মানুষের ক্রোমোজোমের গঠন সাধারণ মানুষের ক্রোমোজমের চেয়ে কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে। এর কারণে এই রোগে আক্রান্তদের মধ্যে মৃদু বা মাঝারি স্তরের বুদ্ধিবৃত্তিক সমস্যা, বেড়ে ওঠায় বিলম্ব বা অন্য কিছু শারীরিক বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। রাষ্ট্রপতির কার্যালয় সূত্রে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, “সবার জন্য সমান ও ন্যায়পরায়ণ সমাজ গঠনে কুসংস্কার যেন বাধা না হয়। সহানুভূতি আমাদের নৈতিক বাধ্যবাধকতা,"।
এবিষয়ে রাষ্ট্রপতি স্টিভো পেনড্রোভস্কি জানিয়েছেন, “যে বা যারা বিশেষ ভাবে সক্ষম শিশুদের বেড়ে ওঠায় তাদের শিক্ষাদানের সুযোগ থেকে বঞ্চিত করে তারা কখন আদর্শ সমাজের অংশ হতে পারে না”।
তিনি আরও জানান, তাদেরও প্রাপ্য অধিকার ভোগ করার জন্য সমাজের সকলকে এগিয়ে আসতে হবে। স্থানীয় প্রতিবেদন অনুসারে জানা গিয়েছে, রোগের কারণে ওই কিশোরীকে স্কুলে নানা ভাবে লাঞ্ছনার শিকার হতে হত। এমনকি স্কুলের সহপাঠীদের অভিভাবকরাও চাইতেন না যেন তাদের সন্তানরা ওই রোগাক্রান্ত শিশুর সঙ্গে একসঙ্গে ক্লাস করেন। এর ফলে ১ লা ফেব্রুয়ারি থেকে ওই কিশোরী একা ক্লাসরুমে ক্লাস করতে বাধ্য হয়।
স্কুলের শিক্ষিকা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, কিশোরীর মা, বাবার সঙ্গে আমরা কথা বলে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, তাকে একা ক্লাস রুমে রাখা উচিত নয়, এতে তার মানসিক বিকাশ আরও ব্যহত হবে”। অনেক অভিভাবক অভিযোগ জানান ওই কিশোরীর মনোভাব আক্রমণাত্মক। যদিও এই যুক্তির স্বপক্ষে তেমন কোন প্রমাণ মেলেনি বলেই স্থানীয় সংবাদ মাধ্যম জানিয়েছ। অবশেষে এই বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য উত্তর মেসিডোনিয়ার রাষ্ট্রপতি স্টিভো পেনড্রোভস্কি নিজে যান ওই কিশোরীর বাড়ি, কথা বলেন তার অভিভাবকের সঙ্গে। এবং সমস্যা মেটাতে তিনি নিজে ওই কিশোরীর হাত ধরে স্কুলে নিয়ে আসেন। দেশনায়ক হয়েও এমন ঘটনার কথা জানতে পেরে তিনি নিজে এসে বিষয়টি সমাধান করায় খুশি কিশোরীর মা, বাবাও। সেই সঙ্গে তাঁর উদ্যোগকে স্যালুট জানিয়েছেন সকলেই।