Advertisment

অনলাইনে অটিজিম আক্রান্তদের রান্নার ক্লাস হাবড়ার মেয়ের, খুলেছে আয়ের পথও

শমিতা'র ক্লাসে অংশ নেওয়া কচিকাঁচাদের সংখ্যাও নেহাত কম নয়

author-image
Sayan Sarkar
New Update
online cooking class kolkata

অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে অর্টিজিম আক্রান্ত পড়ুয়ারাও অনায়াসেই রপ্ত করে ফেলছেন কেক, প্যাটিস, পেস্ট্রি বানানোর কাজ। ছবি সৌজন্যে- ফেসবুক

হাবড়ার মেয়ে শমিতা হালদার। কিছু অন্যরকম করার ইচ্ছা ছিল সেই ছোট থেকেই। হটাৎ করেই সুযোগটা চলে এল জীবনে। অটিজিম আক্রান্ত শিশুদের নিয়ে একটু অন্যরকম কিছু ভাবনা-চিন্তা করতেই মাথায় আসে একেবারেই অন্যরকম ভাবনা। খ্যাতনামা রন্ধনশিল্পী সঞ্জীব কাপূরের রান্নার একটি কোর্স করেছিলেন গুরুগ্রামে থাকাকালীন সময়েই। আর সেটাই যে জীবনের মোড় ঘুরিয়ে তাকে এক আলাদা পরিচিতি দিতে পারে তা হয়ত কখনও ভাবতে পারেননি তিনি।

Advertisment

সুযোগটা আসে কোভিড কালে। করোনায় আক্রান্ত রোগীদের নিজের হাতে রান্না করে বাড়ি বাড়ি পৌঁছে দিতেন তিনি নিজেই। কোভিড পরবর্তী সময়েও রান্না নিয়েই সংবাদ শিরোনামে এসেছেন তিনি। সকাল থেকে এক মুহুর্ত অবসরের সময় নেই তার। কখনও পিৎজা তো কখনও চিকেনের বিশেষ কোন রেসিপি শেখাচ্ছেন তার ছাত্র ছাত্রীদের। সকলেই মন দিয়ে সেই ক্লাসে হাজির থেকে শিখছেন নিত্যনতুন রেসিপি। তার মাধ্যমে নিজেদের ভবিষ্যতের কর্মসন্ধানের একটা পথও তৈরি করে নিচ্ছেন তারা।

কোভিড কালেই অনলাইনে রান্নার ক্লাস নেওয়ার ভাবনা শুরু করেন শমিতা। যেমন ভাবা তেমন কাজ। খুলে ফেলেন রান্না বিশেষ অনলাইন ক্লাস। শুরু থেকেই এমন অভিনব উদ্যোগে পাশে পেয়েছেন বহু শিশুকেই। শমিতার কথায়, গত ২বছর করোনার কারণে স্কুল বন্ধ থাকায় বাড়িতে বসে একঘেয়েমি থেকে বাচ্চাদের মুক্তি দিতেই তাঁর এই নয়া উদ্যোগ।

বাচ্চাদের রান্না শেখানোর মধ্যে একটা বিশেষ মজাও খুঁজে পেয়েছিলেন তিনি। তিনি বলেন, বড়দের থেকে বাচ্চারা অনেক বেশি বাধ্য। তাই অনেক অল্প সময়ের মধ্যেও নানান কঠিন পদ অনায়াসেই রপ্ত করে নেয় বাচ্চারা। তাঁর ক্লাসে অংশ নেওয়া পড়ুয়াদের অধিকাংশের বয়সই ৫ থেকে ১২। এছাড়াও একাদশ দ্বাদশ শ্রেণীর পড়ুয়ারা তো আছেনই।

publive-image
অনলাইন ক্লাসে রান্না শিখে খাবার বানিয়ে তাক খুদে'দের।

মাঝে মধ্যে কলকাতাতেও আসা হয় শমিতার। বিভিন্ন স্কুলের তরফে সামার ক্যাম্পেও রান্না শেখানোর বিশেষ ক্লাস নেন তিনি। বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে অটিজিম আক্রান্ত শিশুদেরও শেখান অনলাইন রান্না। যদিও এই বিষয়ে বিশেষ অভিজ্ঞতা নেই শমিতার। তাও অটিজিম আক্রান্তদের অনায়াসেই ক্লাস নিচ্ছেন তিনি। তারাও সেই ক্লাস দারুণ ভাবে উপভোগ করছে। অনলাইন ক্লাসের মাধ্যমে অটিজিম আক্রান্ত পড়ুয়ারাও অনায়াসেই রপ্ত করে ফেলছেন কেক, প্যাটিস, পেস্ট্রি বানানোর কাজ।

হরেক রেসিপির খাবার বিক্রিরও ব্যবস্থা করা হচ্ছে সেই সব সংস্থার মাধ্যমে। ফলে কিছুটা আয়ের মুখও দেখতে পাচ্ছে শিশুরাও। শমিতার কথায়, এই ব্যাপারে বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে পরামর্শ নিয়েছেন। বেশ কিছু খাবারের রেসিপির ব্যাপারেও বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করেই অনলাইন ক্লাস নেন তিনি। শমিতা বলেন, "দেশের সীমানা ছাড়িয়ে বিদেশেও জনপ্রিয় হচ্ছে রান্নার এই বিশেষ অন লাইন ক্লাস। মহিলাদের পাশাপাশি পুরুষও এগিয়ে আসছেন, যোগ দিচ্ছেন এই অনলাইন ক্লাসে"।

Cooking Habra Online Class
Advertisment