স্টেশনে থাকা ভিখারিদের দেখলেই সাধারণত সকলে পাশ কাটিয়ে চলে যান। কিন্তু নদিয়ার মাজদিয়ার পাপিয়া কর পাশ কাটিয়ে যাওয়া দূরস্ত, ভিখারিদের নিজের হাতে খাবার খাইয়ে দেন। এবার আরও একধাপ এগিয়ে নিজের হাতে খাইয়ে দেওয়া, পাতানো ভাই, রানাঘাট স্টেশনের ভিখারি গোবিন্দর জন্মদিনের উপহার হিসাবে নিজের দেহদানের অঙ্গীকার করেন পাপিয়াদেবী। গতকালই ছিল সেই আদরের গোবিন্দ’র জন্মদিন। আর জন্মদিন উপলক্ষে দেহদান করলেন পাপিয়া কর ও স্টেশনের ভিখারি গোবিন্দ।
Advertisment
সেই সঙ্গে আয়োজন করা হয় একটি ক্যাম্পের যেখানে দেহদান করেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের ২১ জন মানুষ। পাপিয়া দেবী দেহদানের সেই মুহূর্তের ছবি আপলোড করেন ফেসবুকে। মুহূর্তেই তা ভাইরাল হয়ে যায়। আর তারপরই পাপিয়ার এই উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করেন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষজন। ভাই গোবিন্দ’র জন্মদিন উপলক্ষে নিজের বাড়িতেই একটি ক্যাম্পের আয়োজন করেন তিনি।
সকাল থেকেই দূর-দূরান্ত থেকে মানুষজন এই ক্যাম্পে ভিড় জমাতে শুরু করেন। জন্মদিনের জমকালো অনুষ্ঠানের পরই শুরু হয় দেহদানের পালা। বিশেষ এই দিনে দেহদানের অঙ্গীকার করে গতমাসেই একটি ফেসবুক পোস্টও করেছিলেন পাপিয়াদেবী।
আর এদিন দেহদানের অনুষ্ঠান শেষের পর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে পাপিয়াদেবী বলেন, “এত মানুষের সাড়া পেয়ে ভাল লাগছে। গোবিন্দর জন্মদিন প্রতিবছর নিজের হাতেই আমি পালন করি এবছর ওর জন্মদিনকে স্মরণীয় করে রাখতেই বিশেষ এই দেহ দানের আয়োজন। দূরদূরান্ত থেকে আমার ডাকে সাড়া দিয়ে প্রচুর মানুষ এদিন আমার বাড়িতে ভিড় জমান। সকলেই গোবিন্দ’কে আশীর্বাদ করেন। জন্মদিনের অনুষ্ঠানের পরই শুরু হয় দেহদানের অনুষ্ঠান। এদিনের এই অনুষ্ঠানে ২১ জন সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ দেহদান করেন”।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য শীতের রাতে রানাঘাট স্টেশনের দুঃস্থ মানুষগুলোর মুখে বিয়েবাড়ির আলাদা করে রাখা মুখে তুলে দিয়েই সংবাদ মাধ্যমের নজরে আসেন মাঝদিয়ার পাপিয়া কর। একের পর এক নানান সমাজসেবামূলক কাজে এগিয়ে আসতে দেখা গিয়েছে পাপিয়া দেবীকে। অন্নপূর্ণার সরাইঘর থেকে কলকাতার রাজপথে দুঃস্থ শিশুদের প্রতি রবিবার নিয়ম করে ক্লাস ও করান মাঝদিয়ার পাপিয়া। কলকাতার পাশাপাশি মাঝদিয়াতেও পথ শিশুদের জন্য বিশেষ স্কুল রয়েছে পাপিয়াদেবী। পাপিয়ার কথায়, “সমাজের এই অসহায় মানুষগুলোর পাশে থাকার থেকে বড় শান্তি আর কিছুতেই নেই”