করোনা বদলে দিয়েছে সামাজিক জীবন যাপন। সুস্থ থাকতে আপাতত দাওয়াই সামাজিক দূরত্ববিধি পালন করা। বর্তমানে সোশ্যাল ডিস্টানসিং একটি বহুল চর্চিত শব্দ। সেই জন্যই এবার অভিনব উপায় বের করলেন রোমানিয়ার গ্রেগরি লুপ। যিনি পেশায় একজন চর্মকার।
মধ্য ইউরোপের এই দেশে যেতে ভাইরাসের সংক্রমণ মে মাসে আর মাথাচাড়া দিতে পারে সেজন্য তিনি বানিয়ে ফেললেন নতুন ডিজাইনের জুতো। এই জুতোর সামনের অংশ এতটাই লম্বা যে কারোর সান্নিধ্যে আসার প্রশ্নই নেই। ইউরোপের বাজারে আপাতত ৭৫ সাইজের মাপে এই জুতো বিক্রি হতে চলেছে শীঘ্রই।
কেন এমন জুতোর ভাবনা মাথায় এল, সেই প্রসঙ্গে জানাতে গিয়ে প্রচারমাধ্যমে লুপ জানিয়েছেন, "রাস্তায় সবাই সামাজিক দূরত্ববিধি ঠিকঠাক মেনে চলছেন না। বাজারে বাগানের জন্য ফুল গাছের চারা কিনতে গিয়ে দেখি কেউই সোশ্যাল ডিস্টানসিং পালন করছেন না। ওখানে খুব বেশি লোক ছিল না। তাও একে অন্যের কাছাকাছি চলে আসছিল। তাই এই জুতো তৈরি করলাম।" এরপরে তিনি আরো জানিয়েছেন, "যদি এই জুতো পরে দুজন মুখোমুখি দাঁড়ায় তাহলে নিজেদের মধ্যে দেড় মিটার ব্যবধান থাকবে।"
চর্মশিল্পী গ্রিগর লুপ
দোকানে সাধারণত রেডিমেড জুতোই বিক্রি করে থাকেন তিনি। ২০০১ সালে খুলেছেন নিজস্ব দোকানও। তবে আগাম অর্ডার দেওয়া থাকলে থিয়েটার ও অপেরা হাউস গুলোর জন্য পছন্দসই জুতো বানিয়ে দেন লুপ। কোভিড ভাইরাসের কারণে তাঁর ব্যবসায় আপাতত ভাঁটা। লকডাউনের জেরে বিক্রি বন্ধই হয়ে গিয়েছে। তবে লুপ আশাবাদী, একবার পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে ব্যবসা ফের পুরোনো জায়গায় ফিরে যাবে।
কয়েক বছর আগে একজন অভিনেতার জন্য লম্বা জুতো তৈরি করেছিলেন। সেই ভাবনা থেকেই এই চর্মকার বানালেন নয়া ডিজাইনের জুতো। সাধারণত একজোড়া এই জুতো বানাতে প্রয়োজন এক বর্গমিটারের চামড়া। সময় লাগে পাক্কা দু-দিন। জুতো বানাতে খরচ ৫০০ লেই (১১৫ ডলার)।
৩৯ বছর ধরে এইভাবে জুতো তৈরি করে চলেছেন তিনি। ৫৫ বছরের লুপ ১৬ বছর বয়স থেকে জুতো তৈরি করছেন। তাঁর শিক্ষাগুরু এখনো ৯৩ বছর বয়সে হাঙ্গেরির ঐতিহ্যবাহি জুতো তৈরি করেন।
তিনি জানিয়েছেন, সোশ্যাল ডিস্টানসিং বজায় রাখার লম্বা জুতোর ইতিমধ্যেই অনেক অর্ডার পেয়েছেন তিনি।
ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলিতে ১৮,৭৯১ জন মানুষ এখনও পর্যন্ত সংক্রমিত হয়েছেন। মৃত্যুর সংখ্যা ১২৪০ জন। এর মধ্যেই ১৫ মে থেকে লকডাউন অনেকটাই শিথিল করে দেওয়া হয়েছে।