সিরিয়ায় ভূমিকম্পের ধ্বংসাবশেষের নীচে আটকে প্রায় ১৭ ঘণ্টা, ভাইকে বাঁচাতে হার না মানা লড়াই। অবশেষে সফল হলেন তিনি। এক ছবি যা নাড়া দিয়ে গিয়েছে তামাম বিশ্ববাসীকে। তুরস্ক ও সিরিয়ায় ভূমিকম্পে এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১৫ হাজার ছাড়িয়েছে।
চারিদিকে মৃত্যু মিছিল, পরিস্থিতি এমন কান্নারও লোক নেই। এর মাঝেই একটি ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। ছবিতে দেখা যাছে ধ্বংসস্তূপের নীচে চাপা পড়ে রয়েছে এক ভাই-বোন। ভাইকে বাঁচাতে হার না মানা লড়াই জারি রেখেছেন দিদি।
ভাইয়ের মাথায় যাতে কোনভাবেই চোট না লাগে তার জন্য টানা ১৭ ঘন্টা মাথার ওপর নিজের হাত রেখে দিয়েছেন দিদি। যন্ত্রণার কাতরে উঠলেও ভাইয়ের মাথার ওপর থেকে হাত সরিয়ে নেয় নি দিদি। সাত বছর মেয়ের এমন কাণ্ডে অবাক সকলেই।
পর পর তিনটি ভূমিকম্প হয় তুরস্কে। কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৮, ৭.৬ এবং ৬। প্রথম কম্পনটির উপকেন্দ্র ছিল সিরিয়া সীমান্তে গাজিয়ানটেপ প্রদেশের নুরদুগি এলাকায়। দ্বিতীয়টি কাহরামানমারা প্রদেশের একিনজুতে হয়। শেষ কম্পনটি এই প্রদেশেরই গোকসুন এলাকায় হয়।
ছবিটি সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের আবেগপ্রবণ করে তুলেছে। সকলেই ছোট্ট মেয়েটির সাহসিকতার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। একজন ব্যবহারকারী মন্তব্য করেছেন, "অলৌকিক ঘটনা। অক্লান্ত পরিশ্রম করে সমস্ত উদ্ধারকারীদের জন্য শ্রদ্ধা।" অন্য একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, "ঈশ্বর মেয়েটিকে আশীর্বাদ করুন - শিশুদের ভালবাসা মন জয় করে নিয়েছে।" তৃতীয় একজন ব্যবহারকারী লিখেছেন, “তোমার সাহসিকতাকে স্যালুট”।
তুরস্ক বিশ্বের সবচেয়ে ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলগুলির মধ্যে একটি। সেদেশে সর্বশেষ বড় মাপের ভুমিকম্প হয় ৭.৮ মাত্রার। ১৯৩৯ সালের পূর্ব এরজিনকান প্রদেশে এই ভুমিকম্পে ৩৩ হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল। ১৯৯৯ সালে অপর একটি ভূমিকম্পে ১৭হাজার মানুষ মারা যান। ২০২০ সালেও একটি বড় মাপের ভুমিকম্প আঘাত হানে তুরস্কে। বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে সতর্ক করে আসছেন বড়মাপের একটি ভূমিকম্প ইস্তাম্বুলকে ধ্বংস করে দিতে পারে, ১৬ কোটি মানুষের বসতিতে ভরা মহানগর।